Advertisement
০১ মে ২০২৪
Russia

ঘরোয়া বিদ্রোহ সামলে ছন্দে ফিরছে রাশিয়া, পুতিনের নীরবতা ঘিরে নতুন করে উদ্বেগ

ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন কোথায় রয়েছেন, সে নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নীরবতা বজায় রেখেছেন রুশ প্রেসিডেন্টও।

photo of Putin

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মস্কো শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ২১:৫৬
Share: Save:

পিছু হঠেছে ‘ঘরশত্রু’। বেসরকারি আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার মার্সিনারি গ্রুপ রণে ভঙ্গ দিয়েছে। সেই ঝড় সামলে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে রাশিয়া। সে দেশের একাধিক এলাকায় সন্ত্রাসদমন করতে যা পদক্ষেপ করা হয়েছিল, সেই কড়াকড়ি শীঘ্রই তুলে নেওয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দিকে মোড় নিলেও এখনও থমথমেই রয়েছে সে দেশ। ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন কোথায় রয়েছেন, সে নিয়ে যেমন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তেমনই, দেশের ‘ভাড়াটে সেনা’র পিছু হঠা নিয়ে এখনও নীরব রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের এ হেন ‘নীরবতা’ নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে রাশিয়ায়। কী পদক্ষেপ করবেন পুতিন? এই নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছে।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের মাটিতে আগ্রাসন শুরু করেছিল পুতিনের সৈন্যদল। দেড় বছর পরও সেই যুদ্ধ থামেনি। এই আবহে দেশের অন্দরেই যে ভাবে ‘ভাড়াটে সেনা’ ওয়াগনার চোখ রাঙাল, তাতে পুতিন সরকার হিমশিম খেয়েছে বলেই মনে করছেন সে দেশের নাগরিকদের একাংশ। গত শুক্রবার প্রিগোঝিন অভিযোগ করেছিলেন, রাশিয়ার সেনা তাঁর ওয়াগনার গ্রুপের উপরই আক্রমণ চালাচ্ছে। এতে ভাড়াটে বাহিনীর বহু সৈন্যের মৃত্যু হয়েছে। সেই সময়ই প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন প্রিগোঝিন। বলেছিলেন, যে কোনও বাধাবিপত্তি উড়িয়ে মস্কোকে নিজের জায়গা চেনানোর সময় উপস্থিত। তার পরেই মস্কো অভিমুখে যাত্রার শুরু। সে পথে হাঁটতে হাঁটতেই দক্ষিণ রাশিয়ার রস্তভ-অন-ডন শহর দখল করে তাঁর বাহিনী। তার পর আবার মস্কোর দিকে এগোয় অভিযান। তবে বেলারুশের মধ্যস্থতায় শেষমেশ শান্তি প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে রক্তপাত এড়াতে পিছু হঠার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াগনার গ্রুপ।

রাশিয়ার টিভি চ্যানেল ‘রসিয়া ২৪’কে উদ্ধৃত করে রবিবার বিবিসি জানিয়েছে, ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহ থামার পর ধীরে ধীরে সে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। রস্তভ-অন-ডন শহর ছেড়েছেন প্রিগোঝিনের সৈন্যরা। সে শহরের মেয়র জানিয়েছেন, স্থানীয় রাস্তায় যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা দু’দিনের মধ্যেই মেরামত করা হবে। ওয়াগনার বাহিনী ফিরে যাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন রস্তভ-অন-ডন শহরের বাসিন্দারাও।

তবে ওয়াগনার বাহিনীর পিছু হঠা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুতিন। একদা ঘনিষ্ঠ প্রিগোঝিনের বিদ্রোহ ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বলেছিলেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতক...পিঠে ছুরি মারল ওরা।’’ তবে মস্কো অভিযান রদ নিয়ে প্রিগোঝিনের সিদ্ধান্তের পর আর মুখ খোলেননি পুতিন। মস্কোতে পুতিন রয়েছেন কি না, তা নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

যে ভাবে ওয়াগনার বাহিনী বিদ্রোহ ঘোষণা করল, তাতে রুশ প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় ‘চিড়’ ধরল বলেই মনে করছে আমেরিকা। সে দেশের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এই বিদ্রোহ পুতিনের দিকে সরাসরি ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়ে দিয়েছে। পুতিন সমালোচক তথা প্রাক্তন রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল কাসিয়ানভ বলেছেন, ‘‘রুশ প্রেসিডেন্টের এটা শেষের শুরু।’’ রুশ নাগরিকদের একাংশের মতে, ওয়াগনার বাহিনীর স্বল্পস্থায়ী বিদ্রোহে পুতিনের সাম্রাজ্যের নড়বড়ে চেহারা প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। আবার কেউ বলছেন, ‘‘এর মোক্ষম জবাব দেবেন পুতিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Vladimir Putin
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE