(বাঁ দিকে) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ান এবং সৌদির যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সলমন (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
ইরান ও ইজ়রায়েলের যুদ্ধবিরতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য কাতারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরভানি। তিনি বলেন, ‘‘ইজ়রায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করতে ও যুদ্ধবিরতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার জন্য আমাদের বন্ধু দেশ কাতারকে আন্তরিক ধন্যবাদ।’’
মঙ্গলবার ভোরে উত্তর-পশ্চিম ইরানে ইজ়রায়েলের হানায় ওই অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জন হয়েছে বলে ইরানের দাবি। জানানো হয়েছে, আহত অন্তত ৩৩ জন। ইরানের দাবি, ওই অঞ্চলের চারটি স্থানীয় আবাসনেও হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল।
জাতিসংঘে ইজ়রায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্য়ানন জানিয়েছেন, শীঘ্রই ইজ়রায়েল ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা হবে। তিনি আরও জানান, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে ইজ়রায়েলের হামলার ফলে ওই দেশের পারমাণবিক কেন্দ্রে ক্ষতির পরিমাণ পরবর্তীকালে হিসাব করে দেখা হবে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র মার্কিন হানার পরে ধ্বংস হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে বেশ কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে ওই দেশের পারমাণবিক কেন্দ্রের কাজ।
ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাটজ় জানিয়েছেন, ইরান যত ক্ষণ সংঘর্ষবিরতি মেনে চলবে, তত ক্ষণই ইজ়রায়েল মানবে।
জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের জয় হয়েছে। অন্য দিকে, ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, জয় হয়েছে তাঁদের। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরই দাবি, ‘ঐতিহাসিক জয়’ অর্জন করেছে তাঁদের দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী ধন্য়বাদ জানিয়েছেন তাঁর ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপের জন্য।
মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৪০০ জনেরও বেশি আমেরিকার নাগরিক মার্কিন সাহায্যপ্রাপ্ত বিমানে করে ইজ়রায়েল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন।
আইআরএনএ সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সৌদির যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ান। মাসুদ জানান, তিনি আমেরিকার সঙ্গে ‘সংঘর্ষ’ মেটানোর জন্য প্রস্তুত। পাশাপাশি, বন্ধু দেশগুলির সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
সৌদি বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই বৈঠকে কাতারে ইরানের ‘‘আগ্রাসন’ নিয়ে আলোচনা করা হবে। উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে সোমবার মার্কিনঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়েছিল সেখানেই হবে বৈঠক। অর্থাৎ বৈঠকের লক্ষ্য, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা।
অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানালেন, ইরান এবং ইজ়রায়েল, দুই দেশই যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তাই তিনি ইরানের উপর তো বটেই, বিশেষ ভাবে অসন্তুষ্ট ইজ়রায়েলের উপর।
মঙ্গলবার ইরানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক গোষ্ঠী ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি কাউন্সিল (জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ) জানায় তারা ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির পথে হাঁটছে। ইরানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জায়নবাদী (ইহুদি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ) শত্রু এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ‘শত্রুর নিষ্ঠুরতা’র সমুচিত জবাব দিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী।
ইরানের প্রাণকেন্দ্র তেহরানে ‘তীব্র হামলা’ চালানোর নির্দেশ দিলেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাট্জ়। ইজ়রায়েলের অভিযোগ যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে হামলা চালাচ্ছে ইরান।
অবশেষে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানায় ইজ়রায়েল। সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল (ভারতীয় সময় অনুসারে) যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমাজমাধ্যমে তিনটি পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। তৃতীয় পোস্টে তিনি জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। তার পরেই ইজ়রায়েলের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে, ইজ়রায়েল তাঁর প্রস্তাব মেনে পারস্পরিক সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হচ্ছে।” ইজ়রায়েলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার রাতে সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ় গুপ্তচর সংস্থা ও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন মোসাদের প্রধান। ওই বৈঠকে নেতানিয়াহু জানান, ইরানের বিরুদ্ধে অভিযানে ‘সব লক্ষ্য’ পূরণ করতে পেরেছে ইজ়রায়েল। বিবৃতিতে নেতানিয়াহুকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, “ইজ়রায়েল দু’টি অস্তিত্বগত ঝুঁকি নষ্ট করে দিয়েছে। একটি ছিল পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত ঝুঁকি, আর একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত ঝুঁকি।” মনে করা হচ্ছে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে নেতানিয়াহু বোঝাতে চেয়েছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইজ়রায়েল সামরিক সংঘাতে যেমন জয়ী হয়েছে, তেমনই সে দেশের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিকেও স্থগিত করে দিতে পেরেছে।
ইজ়রায়েলের হামলায় ইরানে ন’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানাল ইরান। উত্তর ইরানের গিলান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর সে দেশের সংবাদ সংস্থা ‘তাসনিম’কে জানান, মঙ্গলবার সকালে ওই প্রদেশের বহুতল আবাসন লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। এর ফলে মৃত্যু হয়েছে ন’জনের। আহত অনেকে।
সংঘর্ষবিরতি নিয়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তৃতীয় পোস্টে তিনি লেখেন, “সংঘর্ষবিরতি এখন থেকে কার্যকর হচ্ছে। দয়া করে লঙ্ঘন করবেন না।” তবে এখনও পর্যন্ত সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি ইরান কিংবা ইজ়রায়েল। তবে দুই দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সংঘর্ষবিরতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করার পরেই ইজ়রায়েলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এমনটাই জানায় ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। ইজ়রায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সে দেশে অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ ইজ়রায়েলের বিরশেবা শহরে তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতও হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হানার পরেই সাধারণ মানুষকে সাবধান করতে এয়ার সাইরেন বাজছে ইজ়রায়েলে। সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মধ্য এবং দক্ষিণ ইজ়রায়েলের শহরগুলিতেই এয়ার সাইরেন বাজছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দাবি, ইজ়রায়েল এবং ইরান প্রায় একইসঙ্গে তাঁর কাছে এসেছিল। দুই দেশই তাঁর কাছে গিয়ে ‘শান্তি’র কথা বলেছিল। ওই পোস্টেই ইরান এবং ইজ়রায়েলের প্রসঙ্গে ট্রাম্প লিখেছেন, দুই দেশই অনেক কিছু পেয়েছে। তবে ধর্ম এবং সত্যের পথ থেকে সরে গেলে তারা (ইরান এবং ইজ়রায়েল) অনেক কিছু হারাতেও পারে। ঘটনাচক্রে ট্রাম্পের এই পোস্টের দু’ঘণ্টা আগেই সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সমাজমাধ্যমে আরাগচি লেখেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও সমঝোতাই হয়নি। এ বিষয়ে ইরানের সামরিক বাহিনী পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ট্রাম্প-ঘোষিত যুদ্ধবিরতি ইরান অস্বীকার করার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পোস্ট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ইরান যে এমন কিছু বলতে পারে, তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই। হলও তা-ই। সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দেয় ইরান। তেহরান জানায়, সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত কোনও সমঝোতাই হয়নি। তবে ইজ়রায়েল নতুন করে হামলা না করলে, তারাও আর সংঘাতে জড়াবে না।
সোমবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ) ইজ়রায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমে লেখেন, “এই সংঘর্ষবিরতিতে সিদ্ধান্ত ইরান ও ইজ়রায়েল— দুই দেশই সহমত হয়েছে। আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যেই সংঘর্ষবিরতি শুরু হবে। প্রথমে ইরান সংঘর্ষবিরতি শুরু করবে এবং তার ১২ ঘন্টা পরে ইজ়রায়েল তা অনুসরণ করবে। ২৪ ঘন্টা পর দু’দেশের মধ্যে ১২ দিনের টানা সংঘাত শেষ বলে ঘোষণা করা হবে। এক পক্ষের সংঘর্ষবিরতি চলাকালীন অপর পক্ষকেও শান্তি বজায় রাখতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy