ত্রাণ নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি। মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজ়া ভূখণ্ডের রাফার এক শরণার্থী শিবিরে। ছবি: পিটিআই।
যে ত্রাণ পাওয়ার আশায় অপেক্ষায় প্যালেস্টাইনিরা, সেই ত্রাণ নিতে গিয়ে আজ ফের প্রাণ হারাতে হল বহু শরণার্থীকে। হামাস পরিচালিত গাজ়ার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি থেকে যত জন প্যালেস্টাইনি ইজ়রায়েলি সেনার হাতে নিহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪০০ জন এমন রয়েছেন যাঁরা শুধুমাত্র ত্রাণ নিতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ায় সাধারণ মানুষের প্রাণসঙ্কট নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু সেই উদ্বেগকে ফের নস্যাৎ করে দিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস ধরে চলতে থাকা হামলার জেরে খাদ্য ও জলসঙ্কট এবং ত্রাণ সামগ্রীর অভাবের প্রভাব পড়ছে সব শরণার্থীর উপরে। রমজানের শুরুতেও একই ভাবে উদ্বেগের পরিস্থিতি রয়ে গিয়েছে গাজ়া-সহ প্যালেস্টাইন জুড়ে। উত্তর গাজ়ার একটি ছোট এলাকায় আজ ত্রাণ পাঠানো হয়েছিল। তা নিতে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু শরণার্থী। অভিযোগ, সেই এলাকার আশপাশে থাকা ইজ়রায়েলি ট্যাঙ্কারগুলি তাঁদের লক্ষ্য করে হামলা চালাতে থাকে। গুরুতর জখম হন বহু মানুষ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অন্তত ১১ জনের। গুরুতর ভাবে জখম হন অন্তত ২৫ জন। সকলকে দ্রুত আল-শিফা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ গাজ়ার স্বাস্থ্য দফতর এ-ও জানিয়েছে যে, ইজ়রায়েলের হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৭২ জনের নিহত হওয়ার খবর পেয়েছে তারা। হামলার জেরে আহত হয়েছেন ১২৯ জন। এর ফলে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৩১,১৮৪। আহত ৭৩ হাজার। যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা ও শিশু।
এরই মধ্যে আজ আমেরিকার এক নাগরিকের নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে সে দেশের বাহিনী। তিনি ইজ়রায়েলেরও নাগরিক এবং ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। বছর ১৯-এর ওই সেনাকর্মীর নাম আইটে চেন। তাঁকে গত ৭ অক্টোবর অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এ দিন ইজ়রায়েল তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে, হামাস এখনও গাজ়ায় তাঁর দেহটি আটকে রেখেছে।
অনাহারে, অপুষ্টিতে, জলের অভাবে জেরবার শরণার্থীদের উপরে ক্রমাগত হামলা নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন জো বাইডেন। কখনও আর্জি জানিয়ে, কখনও কার্যত হুমকির স্বরে ইজ়রায়েলকে সাধারণ মানুষের উপরে হামলা চালাতে নিষেধও করেছিলেন। যুদ্ধে আমেরিকার নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনি ‘বিধ্বস্ত’, আজ জানিয়েছেন বাইডেন। গত কয়েক মাস ধরে আইটের খোঁজ চালানোর জন্য বাইডেন প্রশাসনকে বারবার অনুরোধ জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
তবে বাইডেনের সব ‘হুমকি’ ও মন্তব্যকে নস্যাৎ করে নেতানিয়াহু একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘তিনি (বাইডেন) দু’দিক থেকেই ভুল’। হামাসের দেওয়া মৃত্যুর পরিসংখ্যানও মানতে নারাজ তিনি। সোমবারের এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু ফের বলেন, প্রায় আট হাজার হামাস জঙ্গি যেখানে রয়েছে, সেই দক্ষিণ গাজ়া ভূখণ্ডের রাফায় ইজ়রায়েল প্রবেশ করবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy