রাশিয়া সফরে রওনা হয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর এই সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে পাকিস্তান, চিন-সহ একাধিক দেশ। কারণ, এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই যে মোদীর এই সফর সফল হলে, ভারতে ফেরার সময় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য তাঁর ঝুলিতে থাকবে অনেকগুলি ব্রহ্মাস্ত্র।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান সুখোই টি-৫০ আনার ইচ্ছা রয়েছে মোদীর। বিধ্বংসী এই যুদ্ধবিমানকে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান বলা হয়। ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এই বিমান শুধু কিনতে চাইছে না, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় নিজের দেশেই এই যুদ্ধবিমান তৈরির সুযোগ পেতে চাইছেন মোদী। অবশ্যই ভারত-রাশিয়া যৌথ উদ্যোগে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের খবর, সে বিষয়ে রুশ সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে কথাবার্তা আগেই হয়ে গিয়েছে ভারতের। কথা যতটা এগিয়েছে, তাতে ভারতকে আপাতত তিনটি সুখোই টি-৫০ যুদ্ধবিমান দেবে রাশিয়া। সঙ্গে দেওয়া হবে এই যুদ্ধবিমান তৈরির প্রযুক্তিও। তার পর দু’দেশের যৌথ উদ্যোগে ভারতেই তৈরি হবে এই ফাইটার জেট। ভারতকে এই যুদ্ধবিমান ৬০০ কোটি ডলারে দেবে বলে স্থির করেছিল রাশিয়া। তবে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পর রাশিয়া তা ৩৭০ কোটি ডলারেই দিতে রাজি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। চুক্তির রূপরেখা অবশ্য চূড়ান্ত হবে বৃহস্পতিবার মোদী এবং পুতিনের মধ্যে নির্ধারিত বৈঠকেই।
ভারতের ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট কেনার সিদ্ধান্তেও সিলমোহর দিয়েছে ১৮ ডিসেম্বর। মোদীর মস্কো সফরের কথা মাথায় রেখেই কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্ত। এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পাঁচটি ইউনিট কেনার জন্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ইউনিটে ৪০এন৬ এবং ৪৮এন৬ গোত্রের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। আকাশপথে হামলা হলে, হামলাকারীকে আকাশেই শেষ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ব্যবস্থা। এক সঙ্গে ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এটি। অত্যন্ত দ্রুত বেগে ছুটে আসা ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান বা ড্রোনকে ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকেই রুখে দিতে পারে এই এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ইউনিট। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, পাকিস্তানের সব বড় বিমানঘাঁটি এই ট্রায়াম্ফেও পাল্লার মধ্যে থাকছে। তিব্বতে যতগুলি চিনা বিমানঘাঁটি রয়েছে, সেগুলিও ভারতীয় সেনার পাল্লার মধ্যে চলে আসবে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ভারতের হাতে চলে আসার পর। তাই মোদী-পুতিন বৈঠকের দিকে উদ্বেগ নিয়েই চেয়ে থাকতে হচ্ছে বেজিং এবং ইসলামাবাদকে। আমেরিকা, প্রান্স, ব্রিটেন, ইজরায়েল-সহ বিভিন্ন দেশ ভারতকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করতে উৎসাহ দেখাচ্ছে এখন। কিন্তু, এখনও রাশিয়ার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি যুদ্ধাস্ত্র ভারত কেনে। সেই সম্পর্ককেই আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে প্রদানমন্ত্রীর এই মস্কো সফর। দাবি প্রধানমন্ত্রীর দফতরেরই।
বুধবার রাতেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ভোজসভার আয়োজন করছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। বৃহস্পতিবার তাঁদের মধ্যে প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে। মস্কোতে বারতীয় সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০০০ মানুষের সমাবেশে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy