Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
International News

বাঁচবে না জেনেও সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মা, অন্য শিশুকে বাঁচাবেন বলে

নিউ ইয়ার্স ইভে যখন গোটা বিশ্ব আনন্দে মাতোয়ারা, তখন ক্রিস্টা আর তাঁর বয়ফ্রেন্ড ডেরেক লভেটকে কাঁদিয়ে মৃত্যু হয় রিলেইয়ের

সেই শিশু রিলেই আর্কাডিয়া। ছবি- টাইটারের সৌজন্যে।

সেই শিশু রিলেই আর্কাডিয়া। ছবি- টাইটারের সৌজন্যে।

সংবাদ সংস্থা
টেক্সাস শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:১৩
Share: Save:

১৮ সপ্তাহের মাথাতেই ক্রিস্টা ডেভিস জানতে পেরেছিলেন, যাঁর অপেক্ষায় তিনি দিন গুণছেন, সে বাঁচবে না। মাতৃগর্ভেই তাঁর মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি। যদি তার জন্ম হয়ও, তবে তার আয়ু হবে বড়জোর কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকটা দিন। তার পরেও শিশুকন্যার জন্ম দেন ক্রিস্টা। একটাই কারণে। যাতে ওই মৃত শিশুর হৃদপিন্ড, ফুসফুস অন্য কোনও শিশুর কাজে লাগে।

মার্কিন মুলুকে টেক্সাসের ক্লিভল্যান্ডে ক্রিস্টা ওই শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন বড়দিনে। ডাক্তাররা যা বলেছিলেন, তাই হয়েছিল। মাথার একটা অংশ না নিয়েই জন্ম হয়েছিল শিশুটির। চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় যাকে বলে, ‘অ্যানেনসেফালি’। ক্রিস্টা শিশুটির নাম রেখেছিলেন রিলেই আর্কাডিয়া। নিউ ইয়ার্স ইভে যখন গোটা বিশ্ব আনন্দে মাতোয়ারা, তখন ক্রিস্টা আর তাঁর বয়ফ্রেন্ড ডেরেক লভেটকে কাঁদিয়ে মৃত্যু হয় রিলেইয়ের। মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক আগেই ক্লিভল্যান্ডে ক্রিস্টার বাড়িতে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন ডাক্তার, নার্সরা। রিলেইয়ের হৃদপিন্ডের উপর নজর রাখতে। রিলেইয়ের মৃত্যুর পর তার হৃদপিন্ড, ফুসফুস অন্য শিশুকে দেওয়া যাবে কি না, তা বুঝে নিতে।

রিলেই ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এক সপ্তাহ বাঁচল ঠিকই, কিন্তু অন্য শিশুদের কাজে লাগার জন্য দিয়ে গেল তার ছোট্ট হৃদপিন্ড, ফুসফুসকে। মৃত্যুর পর রিলেইয়ের হৃদপিন্ড দেওয়া হল একটি মুমূর্ষ শিশুকে। আর তার ফুসফুস গেল একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে। গবেষণার জন্য যাঁরা হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন শিশুদের ফুসফুস।

একটি বেসরকারি সংস্থার সহকারী ম্যানেজার ক্রিস্টা কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘‘ও যে থাকবে না, তা তো অনেক আগেই জানি আমি আর ডেরেক। আমি যখন ১৮ সপ্তাহের গর্ভবতী, তখনই ডাক্তাররা আমাকে সেটা বলেছিলেন। গর্ভপাতও করাতে চেয়েছিলেন। আমিই রাজি হইনি। ওকে আমি জন্মাতে দিয়েছিলাম ওর অঙ্গ, প্রত্যঙ্গ দান করব বলে।’’

আরও পড়ুন- গ্রিসে গিয়ে নাৎসি হামলার দায় স্বীকার ম্যার্কেলের​

আরও পড়ুন- পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম হিন্দু প্রার্থী হতে চলেছেন তুলসী গব্বার্ড​

ক্রিস্টা জানিয়েছেন, তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর গর্ভে শিশুটির প্রথম নড়াচড়া টের পেয়ে। খুশিও হয়েছিলেন। ‘‘গর্ভে থাকার সময় কোনও সমস্যাতেই ফেলেনি ও। শুধু জন্মের সময় মাথাটা উল্টো দিকে থাকায় প্রসবে কিছুটা অসুবিধা হয়েছিল’’, বলেছেন ক্রিস্টা।

জন্মের পর যে সাতটা দিন শ্বাস নিয়েছিল রিলেই, তার প্রায় প্রতিটি মুহূর্তই ধরে রেখেছেন ক্রিস্টা। ভিডিয়ো ক্যামেরায়। ‘‘সেই সব ছবিই সারাটা জীবন ধরে দেখে রিলেইকে মনে রাখব, মনে করব’’, বলেছেন ক্রিস্টা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE