Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মার্কিন কংগ্রেসে কী বললেন প্রধানমন্ত্রী?

দু’টি দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং মূলধনের চলাচল বাড়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। সামরিক ক্ষেত্রেও দু’টি দেশের সম্পর্ক নিবিড় হয়েছে। এক দশকের মধ্যেই আমেরিকার থেকে ভারতের অস্ত্র ক্রয় ১০ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে এবং সাইবার-সন্ত্রাস ঠেকাতে দু’দেশ হাত মিলিয়ে কাজ করছে।

মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।ছবি: পিটিআই।

মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ১৯:৫৩
Share: Save:

মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ভাষণ দিলেন, জেনে নিন তার সারকথা:

• দু’টি দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং মূলধনের চলাচল বাড়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। সামরিক ক্ষেত্রেও দু’টি দেশের সম্পর্ক নিবিড় হয়েছে। এক দশকের মধ্যেই আমেরিকার থেকে ভারতের অস্ত্র ক্রয় ১০ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে এবং সাইবার-সন্ত্রাস ঠেকাতে দু’দেশ হাত মিলিয়ে কাজ করছে।

• দু’টি দেশের বাসিন্দা ও সমাজের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। সিরি-কে জিজ্ঞাসা করলে জানায় আমেরিকার ৩০ মিলিয়ন বাসিন্দা যোগ অভ্যাস করেন। এমনকী বেসবলের থেকেও যোগ জনপ্রিয়। কিন্তু ভারত এর জন্য কোনও মেধাসত্ত্ব দাবি করেনি।

• এ দেশে প্রায় ৩ মিলিয়ন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন। সংস্থার উচ্চপদে, শিক্ষাক্ষেত্রে, বিজ্ঞানে, অর্থনীতিতে, চিকিৎসাবিদ্যায়, মহাকাশচারী হিসেবে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
• ভারত সামাজিক, অর্থনৈতিক রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে চলেছে। ১০০ কোটি ভারতবাসী রাজনৈতিক ভাবে স্বক্ষম। নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রকল্পের সাহায্যে তাঁদের অর্থনৈতিক ভাবে সক্ষম করা আমার স্বপ্ন। ২০২২-এ ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে আমার স্বপ্নের তালিকাটি দীর্ঘ। কিন্তু এর জন্য গ্রামীন অর্থনীতি ও কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়ন প্রয়োজন।
• প্রত্যেকের মাথার উপরে ছাদ আর প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করতে হবে। আরও স্মার্ট সিটি তৈরি করতে হবে। অধিকাংশ বাড়িতে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর জন্য উপযুক্ত রেল ও সড়ক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রকেও প্রসারিত করতে হবে।
• আপনাদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করেন ভারতের উন্নয়নে আমেরিকার স্বার্থও পূরণ হবে। এই স্বপ্নগুলিকে পূরণ করতে দু’দেশকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাতে দু’দেশেরই মঙ্গল। মার্কিন ব্যবসায়ীরা নতুন বাজার, দক্ষ শ্রমিক, উৎপাদনের জায়গা পাবেন।
• ভারতে বৃদ্ধির হার ৭.৬ ছুঁয়েছে। এর ফলে নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভারতে মার্কিন প্রযুক্তির ব্যবহার, ভারতের শিল্পপতিদের আমেরিকায় বিনিয়োগের মধ্যে দিয়ে দু’দেশের উন্নয়ন হতে পারে। অনেক মার্কিন সংস্থাই গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য ভারতকে বেছে নিচ্ছে।
• এশিয়ায় কোনও সার্বিক নিরাপত্তা পরিকাঠামো গড়ে না ওঠায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সন্ত্রাসের ক্ষেত্রটি ক্রমেই বাড়ছে। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে। বিংশ শতাব্দীর নিরাপত্তা সংস্থাগুলির পক্ষে এর সঙ্গে এঁটে ওঠা সম্ভব নয়। ভারত-মার্কিন সহযোগিতা এই ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাতে পারে।
• ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারত এর মধ্যেই নিজের দায়িত্ব পালন করছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্ক প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগর এলাকায় শান্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে একবিংশ শতাব্দীর উপযুক্ত হয়ে উঠতে হবে।
• সন্ত্রাস আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় বিপদ। লস্কর-ই-তৈবা, তালিবান বা আইএসআইএস— নানা নামে ভারতের পশ্চিম থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত অঞ্চলে সন্ত্রাসের থাবা বিস্তৃত হয়েছে। হিংসা, হত্যা, ঘৃণা এদের দর্শনের মূল কথা।
• সন্ত্রাসের ছায়া বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়লেও ভারতের পাশেই এর আস্তানা। মার্কিন কংগ্রেসের যে সদস্যরা এদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ।
• সামরিক ক্ষমতা, কূটনীতি এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এঁটে উঠতে পারবে না। নানা স্তরে নানা ভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে হবে। এই সংগ্রামে আমাদের অসংখ্য সৈনিক ও সাধারণ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যের বিনিময় আরও বাড়াতে হবে। যারা সন্ত্রাসকে আশ্রয়, প্রশ্রয় দিচ্ছেন তাদের একঘরে করতে হবে।
• ভাল সন্ত্রাস, খারাপ সন্ত্রাস বলে কিছু হয় না। সন্ত্রাসের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নেই। আমাদের এক হয়ে, এক স্বরে সন্ত্রাসের বিরোধিতা করতে হবে।
• প্রকৃতিকে রক্ষা করা, এবং পরিবেশের যত্ন নেওয়া আমাদের যৌথ লক্ষ্যের মধ্যে পড়ে। আমাদের দর্শন বলে প্রকৃতি থেকে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নিতে হবে। আমাদের যৌথ লক্ষ্য হল এই ক্ষেত্রে দায়িত্ব ও ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। এবং পুনর্নবীকরণ শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে।
• সৌরশক্তি নিয়ে বিশ্বজুড়ে সহযোগিতার যে চেষ্টা ভারত চালাচ্ছে তাতে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সবার জন্য সুন্দর ভবিষ্যতই আমাদের লক্ষ্য। জি-২০, পূর্ব এশীয় সম্মেলন, জলবায়ু সম্মেলনে ভারত ও আমেরিকা এক সঙ্গে সেই চেষ্টাই করছে।

আরও পড়ুন:

শুধু পরমাণু অস্ত্রে ভরসা নয়, বাহিনীর শক্তিও দ্রুত বাড়াচ্ছেন কিম জং উন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi US Congress Full Speech
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE