Advertisement
E-Paper

ট্রাম্প-মাক্‌রঁর মাখামাখি উস্কে দিচ্ছে জল্পনা

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যেন ছাড়তেই চাইছিলেন না ফরাসি প্রেসিডেন্ট। হাতে-হাত পাক্কা ২৫ সেকেন্ড! ফ্রান্স ছাড়ার মুখে ‘বন্ধুত্বের উষ্ণতায়’ জড়িয়ে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩০
বোঝাপড়া: প্যারিসে বাস্তিল দিবসের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প-মাক্‌রঁ।  ছবি: এএফপি

বোঝাপড়া: প্যারিসে বাস্তিল দিবসের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প-মাক্‌রঁ। ছবি: এএফপি

মাস দু’য়েক আগে ন্যাটোর বৈঠকে ব্যাপারটা প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর গত কাল ঠিক উলোটপুরাণ! ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যেন ছাড়তেই চাইছিলেন না ফরাসি প্রেসিডেন্ট। হাতে-হাত পাক্কা ২৫ সেকেন্ড! ফ্রান্স ছাড়ার মুখে ‘বন্ধুত্বের উষ্ণতায়’ জড়িয়ে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টও।

প্যারিসে পা রাখার দিনই ইমানুয়েল মাক্‌রঁর সঙ্গে তাঁকে এক ফ্রেমে দেখা গিয়েছিল নেপোলিয়নের সমাধিস্থলে। সে দিনই সস্ত্রীক দুই রাষ্ট্রনেতা নৈশভোজ সারেন আইফেল টাওয়ারের ছাদে। তার পর পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটেন বাস্তিল দিবসের কুচকাওয়াজে। আর বিদায়লগ্নে এমন জমকালো করমর্দন! এহ বাহ্য। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে ট্রাম্প এমনকী প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে আসারও একটা ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। জানিয়েছেন, এখনও তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়।

ট্রাম্পের হলোটা কী— প্রশ্ন উঠছে মার্কিন মুলুক থেকেই। জলবায়ু চুক্তি থেকে মুক্ত বাণিজ্য, অভিবাসন— একাধিক বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। তা ছাড়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প সমর্থন করেছিলেন মাক্‌রঁ-র প্রতিপক্ষ ল্য পেনকে। মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়েই এখন নয়া বন্ধু পেতে মরিয়া ট্রাম্প।

চলতি মাসেই ব্রিটেন সফরে যাবেন ট্রাম্প। সেখানে তুমুল বিরোধিতার আশঙ্কা রয়েছে। সে দিক থেকে বরং ফ্রান্স ‘নিরাপদ’। তা ছাড়া মাক্‌রঁ নিজেই ‘ন্যাটো’ ভুলে লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছেন দেখে নেমন্তন্ন ফেরাতে পারেননি ট্রাম্প। জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসার সময়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘প্যারিস নয়, আমি পিটসবুর্গের প্রতিনিধিত্ব করতে নির্বাচিত হয়েছি।’’ শুক্রবার ফ্রান্সের বাস্তিল দিবসে ডাক পেয়ে ‘সম্মানিত’ সেই ট্রাম্পেরই গলায় শোনা গেল প্যারিস-প্রীতির সুর। মাক্‌রঁকে পাশে নিয়েই বললেন, ‘‘মতভেদ থাকলেও আমরা সুসম্পর্ক ধরে রাখার ব্যাপারে একমত।’’

আগামী নিয়ে আশাবাদী শোনাল মাক্‌রঁকেও। কিন্তু ন্যাটোর মঞ্চে প্রায় হাতাহাতির প্রসঙ্গ ভুলে এ বার এত বন্ধুসুলভ উষ্ণতা জোটালেন কোথা থেকে? উত্তরে অনেকেই ট্রাম্প-তোষামোদের তত্ত্ব দিচ্ছেন। তাঁরা মনে করাচ্ছেন — শুধু প্যারিস নয়, এর আগে যে শহরেই পা ফেলেছে এয়ার ফোর্স ওয়ান, সেখানেই রাজকীয় সংবর্ধনা জুটেছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। সৌদি আরবের মতো পোলান্ডেও। প্যালেস্তাইন তো আরও এক কাঠি এগিয়ে ট্রাম্পের জন্য প্রবেশদ্বারেই টাঙিয়ে রেখেছিল প্ল্যাকার্ড— ‘শান্তির শহরে স্বাগত শান্তির দূত’। কূটনীতিকেরা বলছেন, মার্কিন সমর্থন জোটাতে এখন তোষামোদই ‘ট্রাম্প কার্ড’ ইউরোপীয় রাষ্ট্রপ্রধানদের।

আরও পড়ুন:ফের সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প প্রশাসন

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরপরই হোয়াইট হাউসে এসেছিলেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সে বার ১৯ সেকেন্ডের করমর্দনে ‘বন্ধুত্ব’ জাহির করেছিলেন দুই রাষ্ট্রনেতা। সম্প্রতি মাক্‌রঁ-ট্রাম্প মোলাকাতে সেই রেকর্ডও ভেঙে যাওয়ায় চোখ কপালে উঠেছে ফরাসি কূটনীতিকদের। তাঁদের দাবি, এখন দু’নৌকায় পা দিয়ে চলতে চাইছেন মাক্‌রঁ। সম্ভবত, নিজের প্রেসিডেন্ট আসন পোক্ত জেনেই। একই সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প এবং ইউরোপের মধ্যে সেতুবন্ধনেরও।

সে দিক থেকে বরং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ব্যতিক্রমী। প্রাথমিক ভাবে তিনিও একটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ওভাল অফিসে একঝাঁক ক্যামেরার সামনেই তাঁর বাড়ানো হাত ফেরান ট্রাম্প। গত মে মাসে ন্যাটো বৈঠক শেষে মের্কেল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমেরিকার উপর আর ইউরোপের ভরসা করা উচিত নয়। জার্মান কূটনীতিকদেরই একাংশ বলছেন, ভোট বড় বালাই। সেপ্টেম্বরে ফের নির্বাচন। অবাধ ট্রাম্প-তোষামোদে তাই আটকে যাচ্ছেন মের্কেল। ব্রেক্সিটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে একই রকম টানাপড়েনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-ও।

Donald Trump Emmanuel Macron ডোনাল্ড ট্রাম্প ইমানুয়েল মাক্‌রঁ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy