প্যারিস কোর্টহাউসে নিকোলাস সারকোজ়ি। সোমবার। রয়টার্স
প্যারিস, ২৩ নভেম্বর: তদন্ত সংক্রান্ত গোপন তথ্য হাতে পেতে এক বিচারকের উপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে বিচার শুরু হল ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজ়ির। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ার জেরে রাজনীতির মঞ্চ থেকে সারকোজ়ির বিদায় ঘণ্টা বাজা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, বিরোধী শিবির থেকে উড়ে আসছে এমনই কটাক্ষ। একই সঙ্গে, সারকোজ়ির দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারের জন্য যে এই বিচার প্রক্রিয়া বড়সড় অশনি সঙ্কেত তা মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই।
২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকা সারকোজ়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ল’রিয়াল সংস্থার কর্ণধার লিলিঅ্যান বেটেনকোর্টের কাছ থেকে বেআইনি অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে তাঁর নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যবহারের জন্য ওই অর্থ তিনি নিয়েছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। অভিযোগ, পরবর্তীকালে সেই মামলা সংক্রান্ত গোপন তথ্য বার করে আনার জন্য ফ্রান্সের অন্যতম শীর্ষ আপিল আদালতের বিচারক গিলবার্ট আজ়িবার্টের উপরে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালান তিনি। পরিবর্তে আজ়িবার্টকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোনাকোতে একটি মোটা মাইনের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট যদিও বরাবরই তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে এসেছেন। বরং তাঁর বিরুদ্ধে চলা তদন্ত প্রক্রিয়ার দিকেই আঙুল তুলে গিয়েছেন সারকোজ়ি। পাশাপাশি চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে চলা সব মামলা খারিজের। যদিও ‘শেষরক্ষা হল না’ বলে কটাক্ষ বিরোধীদের।
২০০৭ সালের নির্বাচনী প্রচারের জন্যেই লিবিয়া থেকেও অর্থ সাহায্য নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সারকোজ়ির বিরুদ্ধে। সেই তদন্তের সূত্রেই ২০১৩ সাল থেকেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর আইনজীবী থিয়েরি হারজ়গের কথোপকথনে আড়ি পাততে শুরু করেন তদন্তকারীরা। সেই তদন্তে উঠে আসে, ভুয়ো পরিচয়ে কেনা মোবাইলে কথা হয় দু’জনের।
তদন্তকারীরা জানান, সারকোজ়ির মোবাইলটি রেজিস্টার করা ছিল পল বিসমুথ নামে। তদন্তে আরও উঠে আসে, বেটেনকোর্টের থেকে অর্থ সংগ্রহের মামলা সম্পর্কিত গোপন তথ্য আজ়িবার্টের থেকে নেওয়ার বিষয়ে বহুবার আলোচনা হয় সারকোজ়ি-হারজ়গের। সারকোজ়ির পাশাপাশি একই কারণে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত আজ়িবার্ট ও হারজ়গও। বিচার শুরু হয়েছে তাঁদেরও। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন জনেরই কমপক্ষে দশ বছরের জেল এবং মোটা অর্থ জরিমানা হতে পারে বলে জানাচ্ছেন সে দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, শুধু এটাই নয়, আরও একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্টের নাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy