প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল হিয়ন ইয়োং চোল।
সেনা বাহিনীর অনুষ্ঠান। আমন্ত্রিত বহু সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে সেখানে হাজির খোদ দেশের নেতা কিম জং উন। কিন্তু সে সব দিকে খেয়াল ছিল না উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল হিয়ন ইয়োং চোলের। অনুষ্ঠান চলাকালীন চোখটা একটু বুজে এসেছিল তাঁর। বলা ভাল, সেনা বাহিনীর কুচকাওয়াজের মধ্যে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন তিনি। আর সেই অপরাধে তাঁকে মেরেই ফেলার নির্দেশ দেন কিম।
যেমন আদেশ, তেমনই কাজ। তবে ফাঁসি নয়, একেবারে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে বিমান-বিধ্বংসী কামানের গুলিতে মারা হয়েছে চোলকে। পিয়ংইয়ং থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কানগন সেনা প্রশিক্ষণ শিবিরে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে যখন চোলকে দাঁড় করানো হয়েছিল, শ’খানেক সরকারি কর্তা তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩০ এপ্রিলের ঘটনা। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস (এনআইএস) আজ এ খবর প্রকাশ্যে এনেছে। এনআইএস জানিয়েছে, চোলের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন কিম। দক্ষিণ কোরীয় গোয়েন্দা সংস্থার খবরের সত্যতা প্রমাণ করার উপায় অবশ্য নেই। কারণ পরমাণু শক্তিধর উত্তর কোরিয়া তাদের প্রতিটি পদে বরাবরই গোপনীয়তা বজায় রাখে। এতটাই যে, ২০১১ সালে কিমের বাবা, তৎকালীন দেশের নেতা দ্বিতীয় কিম জংয়ের মৃত্যুর প্রায় দু’দিন পর সেই ঘটনা গোটা দুনিয়ার সামনে এসেছিল। তবে আজ সোলে আইনসভার দুই সদস্য সংবাদমাধ্যমকে চোলের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে হই চই।
চোলই প্রথম নন, এর আগেও বহু সরকারি উচ্চপদস্থ কর্তাকে এ ভাবেই মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন কিম। এ বছর ইতিমধ্যেই ১৫ জন সরকারি আধিকারিককে মেরে ফেলা হয়েছে উত্তর কোরিয়ায়। গত দু’বছরে সেই সংখ্যাটা ৬৮। কিন্তু কেন? এঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও সময় কিমের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনকী কিমের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে মরতে হয়েছে তাঁর কিছু আত্মীয়কেও। তবে কিমের রোষে এর আগে কোনও মন্ত্রীকে মরতে হয়েছে কি না, তা মনে করতে পারছেন না কেউ।
তবে ঘুমটাই কি আসল অপরাধ? নেতৃত্বের প্রশ্নে কিমের সঙ্গে কি কোনও রকম সংঘাত ছিল চোলের? দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। দক্ষিণ কোরিয়া আবার জানাচ্ছে, শুধু ঘুমিয়ে পড়াই নয়, সে দিনের অনুষ্ঠানে কিমের উপস্থিতিতে ঘাড় ঘুরিয়ে অন্য অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন চোল। যা কিমের নজরে দেশদ্রোহেরই সামিল। এর পরই চোলকে বন্দি করে তিন দিন জেলে আটকে রাখা হয়। গত ৩০ এপ্রিল তাঁকে দাঁড় করানো হয় ফায়ারিং স্কোয়াডে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy