Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
london

আসছে নয়া প্রতিষেধক

ট্রায়াল পর্যায়েই এই ক্যান্ডিডেটটি ব্রিটেন স্ট্রেন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্যের প্রমাণ দিয়েছে।

প্রতিষেধক নিতে ভ্যাকসিন হাবে লাইন। শুক্রবার ব্রিটেনের ব্রাইটনে। ছবি: রয়টার্স।

প্রতিষেধক নিতে ভ্যাকসিন হাবে লাইন। শুক্রবার ব্রিটেনের ব্রাইটনে। ছবি: রয়টার্স।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫৬
Share: Save:

করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ার লড়াইয়ে খুব তাড়াতাড়িই জুড়তে চলেছে আরও এক নয়া ভ্যাকসিন। নাম নোভাভ্যাক্স।
ট্রায়াল পর্যায়েই এই ক্যান্ডিডেটটি ব্রিটেন স্ট্রেন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্যের প্রমাণ দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেন প্রতিরোধের আংশিক ক্ষমতাও রয়েছে এই প্রতিষেধকের, দাবি বিজ্ঞানীদের। আমেরিকায় তৈরি প্রতিষেধকটির ট্রায়াল হয়েছিল ব্রিটেন-সহ বেশ কয়েকটি দেশে।
চলতি সপ্তাহেই ব্রিটেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে এ দিনই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেনে আক্রান্ত এক জনের খোঁজ মিলেছে ব্রিটেনে। সেই আবহে দাঁড়িয়ে এই ‘ভ্যাকসিন-সুখবরকে’ স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ব্রিটেনে চালানো ট্রায়ালে ৮৯.৩% কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে নোভাভ্যাক্স। পাশাপাশি ট্রায়াল পর্যায়ে থাকাকালীনই ব্রিটেন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হওয়া ভ্যাকসিন হিসেবে নোভাভ্যাক্সই প্রথম। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই এই প্রতিষেধকের ৬ কোটি ডোজ়ের বরাত দিয়েছে বরিস সরকার। যা ব্রিটেনেই তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রস্তুতকারক সংস্থাটি। ট্রায়াল সম্পূর্ণ হওয়ার পরে সে দেশের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার সবুজ সঙ্কেত পেলে চলতি বছরের মাঝামাঝিই বরাত অনুযায়ী ভ্যাকসিন চলে আসবে বরিস প্রশাসনের হাতে।

বিশ্বে করোনা
মৃত - ২২,০৪,২২২
আক্রান্ত - ১০,২২,০০,২৪০
সুস্থ - ৭,৪০,২৭,৮৬২

ব্রিটেনে চালানো নোভাভ্যাক্সের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ১৫ হাজারের উপর মানুষের উপর পরীক্ষা চালানো হয় বলে জানানো হয়েছে। তাঁদের সকলেরই বয়স ছিল ১৮ থেকে ৮৪ বছরের মধ্যে। যার মধ্যে ২৭% অংশগ্রহণকারীর বয়স ছিল ৬৫-এর উপরে। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও ট্রায়াল চলেছে প্রতিষেধকটির। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেনে আক্রান্তদের উপরেও ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, এইচআইভি আক্রান্ত নন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ওই স্ট্রেনটি প্রতিরোধে ৬০% উপযোগী প্রমাণিত হয়েছে ভ্যাকসিনটি।
আশার খবর শুনিয়েছে বায়োএনটেক এবং ফাইজ়ারের তৈরি করোনা প্রতিষেধকটিও। শুক্রবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রথম আপডেটে ‘দ্য ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সির’ (ইএমএ) তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। প্রকাশিত বিবৃতি অনুযায়ী, ভ্যাকসিনটি নেওয়ার পরেও মৃত্যু হয়েছে এমন ব্যক্তিদের মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখেও প্রতিষেধকটির নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও তারতম্য নজরে পড়েনি বিশেষজ্ঞ কমিটির।
জনসন অ্যান্ড জনসন সংস্থার তৈরি ‘সিঙ্গল শট’ বা এক ডোজ়ের করোনা প্রতিষেধকটিও বিশ্বে জুড়ে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৬৬% কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। শুক্রবার এক বিবৃতি দিয়ে খবরটি জানিয়েছে সংস্থাটি। আলাদা করে আমেরিকার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা সংক্রান্ত সাফল্যের হার ৭২%। তবে ট্রায়ালের বাইরে যাঁরা এই ভ্যাকসিনটি নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তীব্র সংক্রমিতদের ক্ষেত্রেও ৮৫% সাফল্য দেখিয়েছে ভ্যাকসিনটি।
এরই মধ্যে আশঙ্কা বাড়িয়েছে মেক্সিকোর মৃত্যু। যা ইতিমধ্যেই দেড় লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। যার জেরে ভারতকে টপকে মৃতের হারের নিরিখে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশটি। যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মেক্সিকোয় করোনা পরীক্ষার হার অত্যন্ত কম। ফলে সরকারি পরিসংখ্যান যা-ই বলুক না কেন, আদতে মৃতের সংখ্যা ১,৯৫,০০০-এর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে বলেই দাবি তাঁদের।

মৃত্যুমিছিলের পাশাপাশি মেক্সিকো প্রশাসনের কপালে ভাঁজ ফেলেছে দ্রুত বাড়তে থাকা সংক্রমিতের সংখ্যাও। গত সপ্তাহান্তেই করোনা আক্রান্ত হন দেশের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপেজ় অব্রেডরও। নিজের বাসভবনেই চিকিৎসা চলছে তাঁর। তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আক্রান্তের তুলনায় পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই তাদের হাতে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৭,৬০,০০০ ভ্যাকসিনই পেয়েছে তারা। ফলে আপাতত সদ্য তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হওয়া রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়েই আশায় বুক বাঁধছে মেক্সিকো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

london Coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE