সন্দেহ ছিলই। তা সত্যিও হল। প্যারিসের বিখ্যাত রাজপথ শঁজে-লিজেতে পুলিশের উপরে হামলার দায় স্বীকার করল আইএস। আইএসের মুখপত্র ‘আমাক’-এ দাবি করা হয়েছে, বন্দুকবাজ তাদেরই এক জন। নাম আবু ইউসেফ আল বালগিকি। আইএসের দাবি, সে বেলজিয়ামের বাসিন্দা। ফরাসি প্রশাসন তাকে ফ্রান্সের নাগরিক বলেই দাবি করেছে। অন্য একটি সূত্রে হামলাবাজের নাম করিম চেরফি বলে দাবি করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্যারিসের শহরতলি ‘শেল’-এ থাকত সে। পুলিশের সন্দেহ, ওই হামলার সঙ্গে আরও এক জন জড়িত।
বৃহস্পতিবার রাতে ব্যস্ত শঁজে- লিজেতে বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত্যু হয় এক পুলিশ অফিসারের। আহত হন এক জন। পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয় বন্দুকবাজের।
৩৯ বছর বয়সী এই অভিযুক্ত বন্দুকবাজ এর আগেও অনেক বার পুলিশের উপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছে। ১৬ বছর আগে পুলিশের উপরে সশস্ত্র হামলা চালানোয় অভিযুক্ত হয়েছিল করিম। ২০০৫-এ দু’জন পুলিশ কর্তাকে খুনের চেষ্টায় জেল হয়েছিল তার। জেলের মধ্যেই এক পুলিশ কর্তার বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে গুলি করেছিল। ছাড়া পাওয়ার পরে এই ফেব্রুয়ারিতেও খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসনের দাবি, হামলাবাজের গাড়ি থেকে কালাশনিকভ ছাড়াও একটি শটগান ও একটি ছুরি উদ্ধার হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে আইএস নথিপত্রও।
হামলার আগেই বেলজিয়াম প্রশাসন এক সন্দেহভাজন জঙ্গির কথা বলে সতর্ক করেছিল ফ্রান্সকে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘কালকের হামলার সঙ্গে তার যোগসাজশ আছে কি না, বলা মুশকিল।’’ আজই ফরাসি প্রশাসন জানিয়েছে, বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্পে পুলিশের কাছে এক সন্দেহভাজন আত্মসমর্পণ করেছে। কালই তার ফ্রান্সে যাওয়ার কথা ছিল। তল্লাশি চালিয়ে বেলজিয়াম পুলিশ তার বাড়ি থেকে অস্ত্র, মুখোশ ও ফ্রান্সে যাওয়ার ট্রেনের টিকিট পেয়েছে।
রবিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফা। তার আগে এই হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশে। গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গি নিশানার তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স। কালকের হামলার পরে আজ নির্বাচনী প্রচার বাতিল করেছেন চার জনের মধ্যে তিন জন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীই। অতি-দক্ষিণপন্থী মারিন ল্য পেন ফ্রান্সকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছেন। তাঁর প্রস্তাব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নয়, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিক ফ্রান্স নিজেই। তা ছাড়া, সন্দেহভাজন জঙ্গি-তালিকায় থাকা সব বিদেশিকে দেশ থেকে বার করে দেওয়ার নিদানও দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আর একটা জঙ্গি হামলা! এর আর শেষ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy