Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Iran

IRAN: নদীর প্রাণ ফেরানোর দাবিতে উত্তপ্ত ইরান

সরকার কর্ণপাত না-করায় ফিরে গিয়েছেন। আবার ফিরেও এসেছেন বছর বছর।

এক সময়ে এখান থেকেই বয়ে যেত জ়ায়ানদেহ্ রুদ। সেখানে দাঁড়িয়েই প্রতিবাদে শামিল ইরানের ইস্পাহান প্রদেশের বাসিন্দারা।

এক সময়ে এখান থেকেই বয়ে যেত জ়ায়ানদেহ্ রুদ। সেখানে দাঁড়িয়েই প্রতিবাদে শামিল ইরানের ইস্পাহান প্রদেশের বাসিন্দারা। ছবি পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০৩
Share: Save:

যেখানে দাঁড়িয়ে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার হাতে প্রতিবাদে শামিল কমপক্ষে হাজারখানেক মানুষ, ঠিক সেখান থেকেই এক সময় বয়ে যেত দেশের অন্যতম বড় নদী! খরা এবং সরকারি অবহেলার মুখে এখন অবশ্য সে জায়গা শুকিয়ে কাঠ। জলের চিহ্নমাত্র নেই। জ়ায়ানদেহ্ রুদ। প্রদেশের পরিচয়ের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে এই নদী। যেটিকে ইস্পাহানের মানচিত্রে ফিরিয়ে আনতে পথে নেমেছিলেন মধ্য ইরানের এই প্রদেশের বাসিন্দারা। যার আঁচ এ বার পৌঁছে গেল প্রশাসনের শীর্ষ স্তরেও।

‘ইস্পাহানকে তার শ্বাস ফিরিয়ে দাও, আমাদের জ়ায়ানদেহ্‌ রুদ আমাদের ফিরিয়ে দাও’—এই দাবিতে গলা মিলিয়ে গর্জে ওঠেন ইস্পাহান প্রদেশের কৃষকেরা। আস্তে আস্তে যোগ দেন অন্যান্যরাও। কারণ, জ়ায়ানদেহ্‌ রুদের শুকিয়ে যাওয়া শুধু যে কৃষকদের জীবিকার উপরে থাবা বসিয়েছে তা নয়, তিলে তিলে এর কুপ্রভাব পড়েছে পরিবেশের উপরেও।

যদিও এই প্রথম নয়। বহু বছর ধরে এই নিয়ে একাধিক বার বিক্ষোভে জড়ো হয়েছেন এখানকার কৃষিজীবীরা। সরকার কর্ণপাত না-করায় ফিরে গিয়েছেন। আবার ফিরেও এসেছেন বছর বছর। এ বারের বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়েছে। তবে তা আড়ে এবং বহরে বিরাট আকার নেয় শুক্রবার। যার আঁচে এ বার নড়ে বসেছেন খোদ দেশের প্রেসিডেন্ট।

ইতিমধ্যেই পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নদীটির প্রাণ ফেরানো নিয়ে বৈঠক সেরেছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোকবের সরাসরি ফোনে কথা বলেন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে। বিষয়টি ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়ে জানান, একাধিক সমাধানের কথা ইতিমধ্যেই ভাবা হয়েছে। যদিও তা কী-কী সে বিষয়ে কোনও শব্দ ব্যয় করেননি তিনি।

দশকের পর দশক ধরে খরার সঙ্গে যুঝছে ইরান। গত এক দশকে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশে। পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, এই সময়কালে দেশের সব প্রদেশেই কমবেশি খরার প্রভাব পড়েছে। তবে ইস্পাহানের অন্যতম পরিচয়, জ়ায়ানদেহ্‌ রুদের মতো একটা গোটা নদী নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার মতো নজির সত্যিই বিরল।

বিষয়টি যে দেশের প্রাক্তন সরকারের নজরে ছিল না তেমনটা নয়। তৎকালীন সরকারও সমাধান খোঁজার কথা দিয়েছিল। এমনকি ইরানের ‘সুপ্রিম কাউন্সিল অব ওয়াটার’ ৯ দফার একটি পরিকল্পনা পাশও করে বলে শোনা যায়। তবে আট বছর আগের ওই পরিকল্পনা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। এখন প্রশ্ন, বর্তমান সরকারের আশ্বাস বাস্তবায়িত হবে কি? প্রাণ ফিরবে কি হারিয়ে যাওয়া সেই নদীর? উত্তরটা অবশ্য সময়ের গহ্বরে।

অন্য বিষয়গুলি:

Iran Tehran
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE