Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Coronavirus

ছেলের স্কুল থেকে দেওয়া মাস্ক পরেই রাস্তায় আমরা

অত মানুষের জমায়েতে ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি, তাই সরকারি নির্দেশে পুজো হল না এ বছর!

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

দীপায়ন রুদ্র
পোহাং (দক্ষিণ কোরিয়া) শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:০০
Share: Save:

একটু আগে আমার পুরোনো ছাত্র কৌশিকের মেসেজ এল, ‘আমাদের এখানে এক জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। সব ধরনের জমায়েত ও অনুষ্ঠান বন্ধ। জিআইএসটি-তে বাইরের কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। তোমরা সাবধানে থেকো।’ জিআইএসটি, মানে ‘গুয়াংঝু ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি', কোরিয়ার পোহাং শহর, যেখানে আমরা থাকি, সেখান থেকে গাড়িতে যেতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগে। গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই এক দিন ওদের ওখানে বেড়াতে গিয়েছিলাম, কথা হয়ে ছিল সপ্তাহান্তে সরস্বতী পুজোটা ওখানেই কাটাব... যাওয়া হল না।

অত মানুষের জমায়েতে ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি, তাই সরকারি নির্দেশে পুজো হল না এ বছর! পোহাং এ ফিরে এসে শুনলাম একই কারণে আমার বিশ্ববিদ্যালয় ‘পোহাং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (পস্টেক)’-ও ‘গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি’তে কোনও অনুষ্ঠান করবে না।

ছেলের স্কুল থেকে সবাইকে মাস্ক দিচ্ছে, সেই পরেই রাস্তায় বেরোচ্ছি, অধিকাংশ মানুষই তাই করছে। ইনস্টিটিউট আর বাড়ির লিফটেও সেই একই ছবি। গুয়াংঝু-তে গিয়ে সবার সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে মাস্ক পরেই গ্রুপ সেলফি!

এরই মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে জনপ্রিয় রসিকতা চোখে পড়ছে, বাঙালিদের করোনাভাইরাসে ভয় নেই, কারণ ছোট থেকেই ‘এটা কোরো না,ওটা কোরো না’ শুনে অভ্যস্ত। বা এই বাজারে কেউ চিন ঘুরতে যাওয়ার টিকিট বিলোচ্ছেন বিনি পয়সায়, ঠাট্টা করে। শুনে সোনার কেল্লার মুকুল এর মতো বলতে ইচ্ছে করছে ‘আমার হাসি পাচ্ছে না’। আমার খুব কাছের কিছু বন্ধু থাকে বেজিং আর সাংহাই-তে, ও-দেশেরই মানুষ, আমারই মতো ইমিউনোলজিস্ট। কাজের সূত্রে গত বছর তিন বার ও দেশে যেতে হয়েছিল, প্রাণভরে আপ্যায়ন করেছিল ওরা। হাওপেং, তিয়াং চি, বিন লি-কে ‘উই-চ্যাট’-এ মেসেজ করে ছিলাম কিছু দিন আগে। সবাই পরিবারের সঙ্গে বাড়ির মধ্যেই রয়েছে, বাইরে বেরোচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ, তখন বলেছিল সতেরোই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে, এ বার হয়তো অনির্দিষ্টকাল!

হাওপেং-এর কথায় ‘‘থিংস আর গেটিং ইনটেন্স হিয়ার, বাট উই আর হোলডিং স্ট্রং— পরিস্থিতি কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে, কিন্তু আমরা তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি যথাসাধ্য!’’ সঙ্গে তিনটে ‘বাইসেপ’-এর ইমোটিকন!

আমেরিকার ‘জন্স হপকিন্স’ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে করোনাভাইরাস সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা দিয়ে ক্রমাগত ‘আপডেট’ দিয়ে চলেছে। সে দিকে তাকিয়ে আমিও বাইসেপ টান করে বসে আছি। কাজের সূত্রে খুব শিগগিরই আবার চিন যাওয়া খুব প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Guangzhou China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE