চিনকে আরও চাপে ফেলে ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে সই করল মায়ানমার। বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগর এবং ভারত মহাসাগরের বেশ কিছু অংশে যৌথ নাজরদারি চালানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ হল দু’দেশের নৌসেনা। মায়ানমারে নৌঘাঁটি বানিয়ে ভারতকে ঘেরার চেষ্টা করেছিল চিন। কিন্তু আউং সান সু চি-র দেশে সেনা শাসনের অবসান ঘটতেই বেজিং-এর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে শুরু করেছে ইয়াঙ্গন।
পোর্ট ব্লেয়ারে ১৬ ফেব্রুয়ারি চুক্তি হয়েছে ভারত ও মায়ানমারের নৌসেনার মধ্যে। মায়নমারে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত গৌতম মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ভারতীয় নৌসেনার কমোডর অতুল আনন্দ এবং মায়ানমার নৌসেনার কমোডর আউং জাও হ্লেইং চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ভারত ও মায়ানমারের নৌসেনার মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, সামরিক পরিভাষায় তাকে বলা হয় ‘স্ট্র্যান্ডেড অপারেটিং প্রসিডিওর’ বা এসওপি। এই চুক্তির মাধ্যমে দু’দেশের নৌসেনা পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সমুদ্রে নজরদারি চালাতে পারবে। মায়ানমার ছাড়া ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আর দুটি দেশের এসওপি রয়েছে— তাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া। ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরের প্রবেশপথে নজরদারির জন্য তাইল্যান্ড আর ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ভারতের চুক্তি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগরের সিংহভাগই ভারতের নিজস্ব জলসীমা হওয়ায়, কৌশলগত ভাবে এই অঞ্চল ভারতের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের বাড়তে থাকা প্রভাবের পাল্টা হিসেবে বঙ্গোপসাগরে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চাইছে চিন। মায়ানমার এবং বাংলাদেশের উপকূলে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করে সেই উদ্দেশ্য পূরণের দিকে এগোচ্ছিল বেজিং। সম্প্রতি আন্দামান-নিকোবরকে নিজেদের ম্যাপের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে দেখিয়ে চিন আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ভারতের প্রভাব খর্ব করার চেষ্টা এখন তাদের অন্যতম লক্ষ্য। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বঙ্গোপসাগরকে আরও সুরক্ষিত করা ভারতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পোর্ট ব্লেয়ারে মায়ানমার আর ভারতের নৌসেনার মধ্যে হওয়া সাম্প্রতিক চুক্তি চিনকে নিঃসন্দেহে চাপে ফেলল।
আরও পড়ুন:
ব্রিটেনকে সরিয়ে ব্রুনেইয়ে গোর্খা রেজিমেন্ট, প্রভাব বাড়াচ্ছে ভারত?
বঙ্গেপসাগরকে ঘিরে ভারত আর মায়ানমার এমনভাবে অবস্থান করছে যে এই দুই দেশ হাত মিলিয়ে নজরদারি চালালে গোটা জলসীমাই সেই নজরদারির আওতায় চলে আসে। এই দুই দেশের যৌথ নজরদারি দল ইচ্ছা করলে বঙ্গোপসাগরে অন্য যে কোনও দেশের নৌসেনার প্রবেশ রুখে দিতে পারে। ফলে এই চুক্তি চিনের জন্য মোটেই সুখের খবর নয়। চিনের অস্বস্তি শুধু সেটুকুই নয়। বঙ্গোপসাগরের বুকে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল খরচ করে ফেলেছে বেজিং। ভারত-মায়ানমার চুক্তির জেরে বঙ্গোপসাগরে চিনা বন্দরও নয়াদিল্লির ঘেরাটোপের মধ্যে পড়ে গেল। ভারতকে চাপ ফেলার কৌশল নিতে গিয়ে নিজেও চাপে পড়ে গেল চিন। বলছেন সমর বিশারদরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy