Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩

শাসকহীন গাজায় প্রশ্নের মুখে পুনর্বাসন

উধাও হয়ে গিয়েছে আস্ত শহরটা। মাস খানেক আগেও যেখানে সার সার বাড়ি, দোকানপাট, কারখানা আর খেজুর-আঙুরের বাগান ছিল, সেখানে এখন কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ। গাজার রাস্তায় এখনও স্পষ্ট চাপ চাপ রক্তের দাগ। নিষ্প্রাণ শহরে ঠিকানা হারিয়েছেন বাসিন্দারাও। গাজার রাজপথ থেকে হাসপাতাল দখল করেছে উদ্বাস্তুদের মিছিল।

সংবাদ সংস্থা
গাজ়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

উধাও হয়ে গিয়েছে আস্ত শহরটা। মাস খানেক আগেও যেখানে সার সার বাড়ি, দোকানপাট, কারখানা আর খেজুর-আঙুরের বাগান ছিল, সেখানে এখন কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ। গাজার রাস্তায় এখনও স্পষ্ট চাপ চাপ রক্তের দাগ। নিষ্প্রাণ শহরে ঠিকানা হারিয়েছেন বাসিন্দারাও। গাজার রাজপথ থেকে হাসপাতাল দখল করেছে উদ্বাস্তুদের মিছিল।

Advertisement

উপচে পড়ছে ত্রাণশিবির। অগত্যা খোলা রাস্তাতেই তাঁবু খাটিয়ে দিন গুজরান হচ্ছে কয়েকশো পরিবারের। আরও খারাপ অবস্থা গাজার প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র শিফা হাসপাতালের। বিছানা তো দূর অস্ত, বাথরুম আর মর্গের সামনের জায়গাটুকুও খালি নেই। ওষুধ আর মৃতদেহের পচা গন্ধে যেখানে নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না, সেখানেই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন গাজার ঘরছাড়ারা।

রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে গাজার ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ। ইজরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষ থামার পরে এত মানুষের কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত প্যালেস্তাইন প্রশাসন ও রাষ্ট্রপুঞ্জ। ২০০৭ থেকে গাজার প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলানোর পর এই বছরের জুনে সেই দায়িত্ব ছেড়েছে হামাস। তার পরে গাজায় নতুন করে মন্ত্রিসভা তৈরি হয়নি। ফলে শাসকহীন গাজার মানুষকে পুনর্বাসন কে দেবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না।

এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত স্কুল এবং ত্রাণশিবিরগুলিতে ঠাঁঁই নিয়েছেন গাজার মানুষ। কিন্তু তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা যে কাটছে না, তা মেনে নিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্তারাও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গাজার মানুষের জন্য আর্থিক অনুদান দিলেও তা খুব একটা কাজে লাগাতে পারছেন না তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে সেখানকার মানুষদের আর্থিক পুনর্বাসন দেওয়া নিয়ে জটিলতা রয়েছে। পাশাপাশি গাজার মানুষদের মধ্যে জঙ্গিগোষ্ঠী হামাসের কোনও সদস্য লুকিয়ে আছে কি না, তা যাচাই না করে কী ভাবে অর্থ বণ্টন করা হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে প্রশাসন।

Advertisement

রোজ সকালে ত্রাণশিবিরের ভিড় ঠেলে নিজের বাড়ির ধ্বংসাবশেষের সামনে এসে দাঁড়ান বছর ত্রিশের আদেল আল গৌলা। কম্পিউটারের একটা পুড়ে যাওয়া টুকরো হাতে নিয়ে দেখালেন। বললেন, “আমার কম্পিউটারটার এটুকুই অবশিষ্ট আছে।” একটা লাল চকচকে কাপড়ের টুকরো দেখিয়ে জানালেন, তাঁর একমাত্র মেয়ের সাধ করে কেনা প্রথম ব্যাগের অংশ সেটা। বাড়ি ভেঙে পড়লেও লোহার দরজাটাকে ধ্বংস করতে পারেনি ইজরায়েলি বোমা। অনেক যত্ন করে পারিবারিক নেমপ্লেটটা সেই দরজায় ঝুলিয়ে দিলেন গৌলা। বললেন, “আমাদের একটা ভাড়া বাড়ির খোঁজ করতে হবে। তবে রোজ এখানে আসতে হবে। পূর্বপুরুষদের জন্য। পড়শিদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বিশ্বকে জানাতে হবে, আমরা শিকড়টা ছিঁড়তে দিইনি। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকতে হবে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.