নিজের দলেই এখন তাঁকে নিয়ে আপত্তি! ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে এখন এমনই আতান্তরে পড়েছেন রিপাবলিকান নেতৃত্ব।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে ক্রমশ উল্লেখযোগ্য মুখ হিসেবে উঠে আসছেন ট্রাম্প। বিশেষত ‘সুপার টিউসডে’-র সাতটি প্রদেশে জয়লাভের পরে জোরদার হয়েছে সেই আলোচনা। কিন্তু রিপাবলিকান শীর্ষ নেতৃত্ব কেন ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন এমন প্রার্থীকে?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কোটিপতি ব্যবসায়ী এবং রিয়েল এস্টেট কর্তা ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিত্বকে দলের মুখ হিসেবে মানতে পারছেন না অনেকেই। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্বেগ, এখন রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যে ট্রাম্প জনপ্রিয়তা পেলেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ পর্বে লড়াইয়ে পিছিয়েও যেতে পারেন। কারণ তখন তাঁর বিভাজনের রাজনীতি, কট্টরপন্থী মানসিকতা, মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব— এ সব কিছুই বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। এখন সংবাদমাধ্যম ফুলিয়েফাঁপিয়ে ট্রাম্পকে যতই জনপ্রিয় করে দেখাক, তখন ট্রাম্পের নেতিবাচক দিকগুলি কাজে লাগিয়ে আদতে লাভবান হবেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীই। শহরতলির মহিলা ভোটার এবং মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীদের সমর্থন পাওয়া সহজ হবে না ট্রাম্পের পক্ষে।
ফেব্রুয়ারিতে আইওয়া ককাস থেকে শুরু। তার পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রাইমারিতে জিতে মার্কিন রাজনীতির অনেক অভিজ্ঞ মাথাকেও চমকে দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি দেশ জুড়ে যত সভা করেছেন, সেখানে উপচে পড়েছে ভিড়। রিপাবলিকান দলের অন্য প্রার্থীরা সেখানে রয়ে গিয়েছেন অনেকটাই দূরত্বে।
‘সুপার টিউসডে’র জয়ের পরে ট্রাম্পের পাশে রয়েছেন ৩১৯ জন জনপ্রতিনিধি। সেখানে দলীয় নেতৃত্বের পছন্দের প্রার্থী মার্কো রুবিওর পাশে মাত্র ১১০ জন। আর এক প্রার্থী টেড ক্রুজের পাশে আছেন ২২৬ জন। দলের মনোনয়ন পেতে ৬৯ বয়সি ট্রাম্পের মোট ১২৩৭ জনপ্রতিনিধির সমর্থন প্রয়োজন। এখন তাই আর ৯১৮ জনের সমর্থন দরকার ট্রাম্পের।
শনিবার কানসাস, কেনটাকি, লুইজিয়ানা এবং মেইন-এ ফের ভোট। এই চারটির মধ্যে তিনটি প্রদেশে এগিয়ে ট্রাম্প। এগুলোতেও জিতলে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবেন তিনি। আর তাই আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন পাবেন বলে তিনি নিজে প্রায় নিশ্চিত। এর পরে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আরও বিস্তৃত করতে চান বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। যদিও তাঁর এই কথায় ভুলছেন না দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এক উদ্বেগ হোয়াইট হাউসেও। সেখানকার প্রেস-সচিব জশ আর্নেস্টের কথায়, ‘‘রিপাবলিকানরা বুঝতে পারছেন, ট্রাম্প তাঁদের জন্য খুব একটা কার্যকরী হবেন না।’’ যে বিভাজনের কথা ট্রাম্পের মুখে শোনা যাচ্ছে, তা আমেরিকার মতো দেশের মূল্যবোধের সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না— জানিয়েছেন জশ। বস্তুত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মুখেও একই সুর শোনা গিয়েছে কিছু দিন আগেই। তাঁর সাফ কথা, ‘‘ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন না।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হওয়াটা কঠিন কাজ। এটা শুধু আলোচনা সভায় বক্তৃতা দেওয়া নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy