Advertisement
E-Paper

দিনে পাঁচ ঘণ্টার ‘বিরতি’ সিরিয়ায়

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকায় এখনও প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ আটকা পড়ে আছেন। বোমারু বিমান থেকে প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা মাটির নীচে আশ্রয় নিয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪

এ বার ঘড়ি ধরে যুদ্ধবিরতি।

সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো। যুদ্ধের জাঁতাকলে আটকে পড়া সিরিয়ার জন্য আপাতত দিনে এই পাঁচ ঘণ্টাই বেঁধে দিল রাশিয়া। রাষ্ট্রপু়্ঞ্জ ৩০ দিনের নিরবচ্ছিন্ন যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল। কিন্তু শনিবার সেই প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরেই রবিবার ফের হামলার খবর মেলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে। বেড়েই চলেছে মৃত্যুমিছিল। তাই বাধ্য হয়েই তাদের মাঠে নামতে হল বলে জানিয়েছে মস্কো। গত কাল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, ‘‘প্রেসি়ডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাব অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকেই মানবিক করিডর তৈরি করে পূর্ব গুটায় আটকে প়ড়া নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হবে।’’ সিরিয়া তবু সিরিয়াতেই। অভিযোগ, আজও পূর্ব গুটায় বোমা ফেলেছে সিরীয় বাহিনী। রাশিয়া অবশ্য এর দায় সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর উপরেই চাপাতে চাইছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকায় এখনও প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ আটকা পড়ে আছেন। বোমারু বিমান থেকে প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা মাটির নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। চিকিৎসা দূরের কথা, জুটছে না দানাপানিও! সিরিয়ার ‘বন্ধু’ রাশিয়া যদিও আশ্বাস দিচ্ছে, এ বার হাল ফিরবে। কখন, কী ভাবে এবং কোথায় তাঁদের সরিয়ে ফেলা হবে, তা ভিডিও, টেক্সট মেসেজ কিংবা লিফলেট মারফৎ জানানো হবে। তবে যা হওয়ার ওই পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই।

রাষ্ট্রপুঞ্জের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কি তা হলে মাঠে মারা গেল? মস্কোর দাবি, যত দিন না সব পক্ষ চুক্তি মানতে রাজি হচ্ছে, সত্যিকারের যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়। বিদ্রোহীরা জানিয়ে দিয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু সিরিয়া বা রাশিয়ার বাহিনী হামলা চালালে, তারা আত্মরক্ষার প্রয়োজনে জবাব দেবেই। আল কায়দা, আল নুসরা ফ্রন্ট বা আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকে কোনও ভাবেই যুদ্ধবিরতির আওতায় রাখেনি রাষ্ট্রপুঞ্জ। এ দিকে সিরিয়ার আসাদ সরকার ও রাশিয়া সব বিদ্রোহীকেই জঙ্গি তকমা দিয়ে বসে আছে। তাই দিনের ওই নির্দিষ্ট পাঁচ ঘণ্টার পরে সিরিয়ার হাল আরও খারাপ হবে বলেই আশঙ্কা কূটনীতিকদের একাংশের। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের যুদ্ধবিরতিও কার্যত অর্থহীন হয়ে গেল, মত তাঁদের।

বিদ্রোহী দমনের নামে সিরিয়া-রাশিয়ার যৌথ হামলায় ৮ দিনে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৬০ জন। রাষ্ট্রপুঞ্জের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। রবিবার সিরীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্লোরিন গ্যাস প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে যেখানে হামলা হয়েছে, সর্বত্র ক্লোরিনের গন্ধ পাওয়া গিয়েছে, বলছেন ঘটনাস্থল-ফেরত অ্যাম্বুল্যান্স কর্মীরাই। সিরিয়া বা রাশিয়া যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, রাষ্ট্রপুঞ্জের যুদ্ধবিরতিকে নষ্ট করতেই এমন গল্প ছড়ানো হচ্ছে।

তবু সন্দেহ যাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রপুঞ্জের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের সন্দেহ, সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্র পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়াই।’’ তিনি এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ২০১৪-’১৫-র মধ্যে তিন বার রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিল সিরিয়া। গত এপ্রিলে, দেশের উত্তরের এক বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহরে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছিল ‘নার্ভ এজেন্ট’ সারিন গ্যাসের হামলাতেই।

Syria Ceasefire Mass Killing Russia Eastern Ghouta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy