রুশ হামলায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত ইউক্রেনে। ফাইল চিত্র।
আট মাস ধরে রুশ ফৌজের ধারাবাহিক হামলায় বিপর্যস্ত ইউক্রেন। বোমা-ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সে দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ অংশ কার্যত ধ্বংসস্তূপ। এই পরিস্থিতিতে চলে আসছে শীত। বরফে ঢেকে যাবে দেশ বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ছাড়া জীবনধারণ কার্যত অসম্ভব। আর সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইউক্রেনবাসীকে ‘ভাতে মারার’ কৌশল নিয়েছে মস্কো। গত এক মাস ধরে ধারাবাহিক ভাবে ‘পাওয়ার গ্রিড’গুলিতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী।
ইউক্রেনের ৩০ শতাংশের বেশি পাওয়ার গ্রিড ইতিমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। রাজধানী কিভ-সহ বিভিন্ন শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন শীতের মরসুমে রুশ হামলা প্রতিরোধের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির কাছে জনজীবন স্বাভাবিক রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ। তবে রুশ হামলার জেরে ইউক্রেনের কয়েক লক্ষ নাগরিক পড়শি দেশগুলিতে আশ্রয় নেওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদাও কমেছে। ‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’র রিপোর্ট জানাচ্ছে, রুশ আগ্রাসনের পর থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছে। কিন্তু সামনের কঠিন শীতের জন্য জনগণকে তৈরি রাখার চেষ্টায় খামতি দিচ্ছে জ়েলেনস্কি সরকার।
বিদ্যুৎ না থাকলে ঘর গরম রাখার উপায় নেই। এই পরিস্থিতিকে ইউক্রেনের নাগরিকদের জ়েলেনস্কি সরকারের পরামর্শ— ‘যথেষ্ট বিকল্প জ্বালানি ও পানীয় জল মজুত করে রাখা দরকার। সেই সঙ্গে গরম মোজা, কম্বল ও প্রিয়জনেদের কাছাকাছি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে’। মোবাইল ফোন, পাওয়ার ব্যাঙ্ক, টর্চ, ব্যাটারি— সব কিছু সুযোগ পেলেই চার্জ দিয়ে রাখা দরকার। শক্তি মন্ত্রকের উপদেষ্টা অলেকসান্দার খারচেঙ্কো জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎের বিন্দুমাত্র অপচয় না করার আবেদন করছেন তাঁরা।
কিন্তু এই উদ্যোগে সমস্যা কতটা মিটবে তা নিয়ে সন্দিহান ইউক্রেনবাসীর একাংশ। ইরপিনে বোমবর্ষণের জেরে কিভে চলে আসা অল্লা মেলনিচুক তাঁদেরই এক জন। শীতের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই বিদ্যুতের অভাব মেটাতে কাঠ ও কয়লার মতো জ্বালানি মজুত শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়িতে ফিরতে পারবেন কি না, সে বিষয়েই নিশ্চিত নন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বাড়ি বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত। শহরের নিকাশি এবং বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বরফ পড়তে শুরু করলে কী হবে ভাবতেই আতঙ্ক হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy