তছনছ: মিসিসিপির বিলোক্সিতে নেট আছড়ে পড়ার পর। এএফপি
হার্ভে, ইরমার পরে নেট। ছ’সপ্তাহ ধরে আমেরিকায় হারিকেনের যে দাপট চলছে, সেই তালিকায় নতুন সংযোজন এই নেট। গত কালই মিসিসিপি ও লুইজিয়ানায় আপৎকালীন অবস্থা জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কাল মাঝ রাতে লুইজিয়ানায় মিসিসিপি নদীর মুখের কাছে আছড়ে পড়ে এই নয়া হারিকেন। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলতে থাকে নাগাড়ে বৃষ্টি। যার জেরে জলের তলায় চলে গিয়েছে বহু এলাকা। এখনও পর্যন্ত নিকারাগুয়া, কোস্টা রিকা ও হন্ডুরাসে এই ঝড়ের বলি হয়েছেন ২৫ জন।
ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব লুইজিয়ানার মিসিসিপি নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ৮৫ মাইল বেগে আছড়ে পড়েছিল নেট। তখন তা ক্যাটেগরি-১ হারিকেন ঝড় হিসেবেই ধরা পড়েছিল। তবে তা মিসিসিপি ও আলাবামার স্থলভাগের দিকে যত এগিয়েছে, ততই শক্তি হারিয়েছে।
এর কয়েক ঘণ্টা পরে আজ সকালে দ্বিতীয় বারের জন্য বিলোক্সিতে আছড়ে পড়ে নেট। তার পরেই অবশ্য দুর্বল হয়ে তা ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হয়। নেট দুর্বল হয়ে পড়লেও আমেরিকার বিভিন্ন অংশে এখনও জারি রয়েছে সতর্কতা। তবে মারিয়া, হার্ভে বা, ইরমার মতো ততটা শক্তিশালী ছিল না এই ঝড়। এমনটাই বলছে হারিকেন সেন্টার।
শক্তি হারালেও নেটের প্রভাব পড়েছে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। এই ঝড়ের দাপটে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্য আমেরিকা। ভারী বৃষ্টি, ধস, বন্যা— সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত সেখানকার জনজীবন। বন্ধ রাস্তাঘাট, ভেঙে পড়েছে সেতু। ফলে বহু জায়গায় বন্ধ যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরও। হারিকেনের লেজের ঝাপটায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। জল নেই কোস্টা রিকায়। বিপাকে সেখানকার অন্তত ৪০ হাজার মানুষ।
নেট স্থলভূমির দিকে এগোতেই মিসিসিপিতে জারি হয়েছিল কড়া সতর্কতা। দক্ষিণ আলবামাতেও ঝড় আছড়ে পড়ার আগেই সতর্কতা জারি হয়েছিল। ফলে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছিলেন বাসিন্দারা। তবে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ।
যদিও বিলোক্সিতে আছড়ে পড়ার পর সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর মেলেনি। শহরের মেয়রই জানিয়েছেন সে কথা। তবে ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত এই শহরের রাস্তাঘাট, হাইওয়ে। ঘরবন্দি মানুষজন। বিলোক্সিতে পাওয়া ভিডিও ফুটেজেও মিলেছে জলমগ্ন পথঘাটের ছবি। এমন দুর্যোগের সময় মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সেখানকার এক হোটেল ও ক্যাসিনোর ম্যানেজার চেট হ্যারিসন। তাঁর হোটেলে আসা অতিথিদের জন্য খুলেই রেখেছিলেন রেস্তোরাঁ ও পানশালা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অন্তত তিনশো অতিথি রয়েছেন। যতক্ষণ না সব কিছু ঠিকঠাক হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন ওই অতিথিরা। কারণ, চারিদিকে তো শুধু জল আর জল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy