Advertisement
০৩ অক্টোবর ২০২৩
Mahsa Amini

মাহসার মৃত্যুবার্ষিকী, ফের প্রতিবাদ ইরানে

ইরানে গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয় বাইশ বছরের মাহসার। পোশাকবিধি মেনে চলেননি বলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।

An image of Mahsa Amini

মাহসা আমিনি। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

মেয়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে পারল না জিনা মাহসা আমিনির পরিবার। ইরানে গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয় বাইশ বছরের মাহসার। পোশাকবিধি মেনে চলেননি বলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। মাহসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে হিজাব-বিরোধী তীব্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। মাহসার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাই পুলিশি কড়াকড়িতে কোনও রকম ফাঁক রাখা হয়নি। তার পরেও তেহরান-সহ দেশের নানা জায়গায় প্রতিবাদ হয়েছে। স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক, ধ্বনিও উঠেছে।

শুক্রবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মাহসাকে স্মরণ করে বলেছিলেন, ‘‘মৃত্যুতেই মাহসার কাহিনি শেষ হয়নি। তিনি এক ঐতিহাসিক আন্দোলনের প্রেরণা জুগিয়েছেন।’’ অন্য দিকে ওই দিনই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেখা করেন আন্দোলন দমন করতে গিয়ে প্রাণ হারানো নিরাপত্তা রক্ষীদের পরিবারের সঙ্গে। কুর্দ বংশোদ্ভূত মাহসার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিবাদ ফের সংগঠিত হতে পারে ধরে নিয়েই শনিবার কুর্দ অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে বিশেষ করে পুলিশ বাহিনী বাড়ানো হয়। মাহসার নিজের শহর, সাকেজ়-এ কিছুক্ষণের জন্য আটক করা হয় মাহসার বাবা আমজাদ আমিনিকে। মাহসার কবরে কোনও স্মরণ অনুষ্ঠান করা যাবে না, এই মর্মে কড়ার করিয়ে পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন সূত্রে এ খবর জানানো হয়েছে। তবে ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা, আমিনিকে ‘গ্রেফতার’ করা হয়নি, এটুকুই শুধু দাবি করেছে। তারা বরং জানিয়েছে, দেশ জুড়ে এক ঝাঁক ‘প্রতিবিপ্লবী’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদী’কে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং দেশে অশান্তি তৈরি করার ছক বানচাল করে দেওয়া গিয়েছে।

তবে চূড়ান্ত কড়াকড়ি ও ধরপাকড় সত্ত্বেও প্রতিবাদকে পুরোপুরি স্তব্ধ করা যায়নি। সমাজমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তেহরানের রাস্তায় প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন এক দম্পতি। লোকজন তাঁদের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছে, গাড়িচালকেরা সমর্থন জানিয়ে হর্ন বাজাচ্ছেন। কারচাক জেলের ভিতর মহিলা ওয়ার্ডে মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত বন্দিরা নিজেদের গায়ের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। বিশেষ রক্ষী বাহিনী গিয়ে আগুন নেভায়। বন্দিদের মারধর করে, তাদের নিরস্ত করতে ছররা গুলিও ছোড়ে। মাহাবাদ শহরে অবশ্য প্রতিবাদীদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলেই অভিযোগ। আহত এক। কেরমানশাহ শহরেও কয়েক জন প্রতিবাদী আহত হয়েছেন বলে খবর। মাহসার শহরে একজন ছররায় গুরুতর জখম। তবে সরকারি মিডিয়া এ সবের সত্যতা স্বীকার করেনি। মাশহাদ, গোহরদস্ত, কারাজ ও তেহরানে একাধিক সমাবেশ থেকে স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক বলে স্লোগান তোলা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে দেখা গিয়েছে তার ফুটেজ। আমেরিকার ওয়াশিংটন এবং জার্মানির বার্লিন থেকেও মাহসার স্মরণে প্রতিবাদ সমাবেশের খবর এসেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE