দায়িত্ব নেওয়ার পরে এক বছরও পার হয়নি। তড়িঘড়ি নির্বাচনের ডাক দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। মঙ্গলবার হঠাৎই তাঁর ঘোষণা, ৮ জুন ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন।
ইস্টারের লম্বা সপ্তাহান্তের পরে টেরেসার এই ঘোষণা একেবারেই আকস্মিক। তাঁর দাবি, ব্রেক্সিটের পরে দেশের স্থিতিশীলতার কথা ভেবেই দ্রুত ভোটের কথা ভেবেছেন তিনি। এ ব্যাপারে নিজের প্রতিশ্রুতি নিজেই ভেঙেছেন টেরেসা। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি বলে এসেছেন, ২০২০ সালের আগে নির্বাচনের কথা ভাবার প্রশ্নই নেই। ব্রেক্সিট পরবর্তী ডামাডোলের পরে গত বছর জুনে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। দায়িত্ব নেন টেরেসা। কিন্তু এত আগে কেন নির্বাচন?
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আজ জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘অনিচ্ছা সত্ত্বেও সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে আমায়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে বলেছিলাম, ২০২০ পর্যন্ত কোনও নির্বাচন হবে না। কিন্তু ভবিষ্যতে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার স্বার্থে ভোট করতেই হবে। যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামি দিনে, তার জন্য আপনাদের সমর্থন প্রয়োজন।’’
পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউস অব কমন্সে নামমাত্র গরিষ্ঠতা রয়েছে টেরেসার ঝুলিতে। তাই এ বারের ভোট তাঁর অবস্থান মজবুত করবে বলে আশা করছেন তিনি। টেরেসার ব্যাখ্যা, ‘‘গোটা দেশ একজোট হয়েছে। কিন্তু ওয়েস্টমিনস্টার (পার্লামেন্ট) নয়।’’ কিন্তু যদি ব্যুমেরাং হয়? সে প্রসঙ্গে অবশ্য উহ্যই রেখেছেন তিনি। রাজনৈতিক খেলা চলছে অভিযোগ তুলে অন্য দলগুলোর সমালোচনা করেন তিনি। ব্রেক্সিট সফল করার ক্ষেত্রে যা বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মত টেরেসার। তাই তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এখনই সাধারণ নির্বাচনে যাওয়া দরকার।’’
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এর আগে চূড়ান্ত ব্রেক্সিট চুক্তির সমর্থনে ভোট দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে লেবার পার্টি। লিবারাল ডেমোক্র্যাটরা পণ করেছে, ‘‘সরকারের কাজ স্তব্ধ করাই লক্ষ্য।’’ স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বলেছে, তারাও ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে ভোট দেবে না। আর হাউস অব লর্ডসের মনোনীত সদস্যদের বক্তব্য, ‘‘প্রতি পদে লড়াই চলবে।’’
এই সব উদাহরণের পরে টেরেসা বলছেন, ‘‘এখন সাধারণ নির্বাচন না হলে ওদের এই রাজনৈতিক খেলা চলবে। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মীমাংসার ক্ষেত্রে অসম্ভব জটিলতা তৈরি হবে।’’ তবে ২০২০ সালের আগে সাধারণ নির্বাচনে যাওয়ার জন্যও পার্লামেন্টের সমর্থন প্রয়োজন টেরেসার। বুধবার এই প্রস্তাব নিয়ে হাউস অব কমন্সে ভোট হবে। বিরোধী লেবার পার্টি প্রস্তাবের পক্ষে ভোটে দেবে বলে জানিয়েছে। দলের নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ভোট করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’’
ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু টেরেসার সামনে এখন অনেক কাঁটা। স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন ব্রিটেন থেকে আলাদা হওয়ার ধুয়ো তুলেছেন। সঙ্গে নর্দান আয়ারল্যান্ডও। ভোটই এখন বড় অস্ত্র ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy