Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পঙ্গু অর্থনীতি, বাড়ছে একদা জনপ্রিয় সিপ্রাসের সমস্যা

গ্রিক পুরাণ মতে দেবী আথেনা নাকি কৃষি ও হস্তশিল্প শিখিয়ে ধনী করে তুলে ছিলেন গ্রিকদের। কিন্তু সিপ্রাসের আমলে সে দেশের আথেনারা দু’মুটো খাবার জোগাড় করতে শরীর বিকোতে বাধ্য হচ্ছেন।

সুপর্ণ পাঠক
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ২০:১৯
Share: Save:

গ্রিক পুরাণ মতে দেবী আথেনা নাকি কৃষি ও হস্তশিল্প শিখিয়ে ধনী করে তুলে ছিলেন গ্রিকদের। কিন্তু সিপ্রাসের আমলে সে দেশের আথেনারা দু’মুটো খাবার জোগাড় করতে শরীর বিকোতে বাধ্য হচ্ছেন।

উগ্র বাজারবাদী ছাড়া সবাই এই ভয়টাই পেয়েছিল। সিপ্রাস-ভেরোফাকিসের সময় স্কুলের বাচ্চারা টিফিনের পয়সা জোগাড় করতে বাসে লুকিয়ে ভিক্ষে করা শুরু করেছিল। আথেন্সে এর আগে এই রকম ভাবে গ্রিক নাগরিকদের ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে বেরনোর দৃশ্য অকল্পনীয় ছিল।

সিপ্রাসের দ্বিতীয় পর্যায়ে এই ছবি আরও করুণ। শুধু খিদে মেটাতে নয়, মেয়েরা এখন কর মেটাতেও শরীর বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। সমাজতত্ত্বের শিক্ষক গ্রেগরি ল্যাক্সোকসের একটি সমীক্ষা বিশ্বের টনক নড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর সমীক্ষা বলছে প্রথা ভেঙে শরীর বিক্রির ব্যবসায় গ্রিক মেয়েরাই গ্রিসে সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর্থিক সমস্যা শুরু হওয়ার সময় ৫০ ইউরো যাদের পারিশ্রমিক ছিল তারা এখন মাত্র ২ ইউরোতেই ৩০ মিনিটের জন্য শরীর বিকোতে রাজি হয়ে যাচ্ছেন। দেবী আথেনার বাস এখন পুরাণের পাতাতেই। আর যাই হোক জার্মান চ্যান্সেলরের সিপ্রাসের কাছে আথেনা অবতারে অবতীর্ণ হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। নতুন করে অবসর ভাতা কমানো, কর বাড়ানো এবং দ্রুত আর্থিক সংস্কারের যে শর্ত সিপ্রাস গিলতে বাধ্য হয়েছেন, তার প্রধান রূপকার হিসেবে কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগোর আঙুল উঠছে। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, এ বছরের ত্রৈমাসিকে গত বছরের তুলনায় গ্রিসের বাজারের চাহিদা কমেছে ০.৪%। বিনিয়োগ কমেছে ৭.১%। গত বছরের তুলনায় এ বছর রফতানি কমেছে ১১.৪%, আমদানী কমেছে ১৯.৯%।

এই সংক্রান্ত আরও খবর...

পেট ভরাতে ভরসা এখন দেহ ব্যবসাই

গত সেপ্টেম্বর বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল লাল জামা পরা একটা বাচ্চার সমুদ্রতটে পড়ে থাকার দৃশ্য। আইলান কুর্দি তার বাবার সঙ্গে আইসিস আর কুর্দদের যুদ্ধ থেকে পালাতে গ্রিসের অগুণিত দ্বীপের মধ্যে একটিতে আশ্রয় খুঁজে নিতে চেয়েছিল। আয়লান কুর্দির জন্য হয়ত প্রস্তুত ছিল একটা দ্বীপ। কিন্তু আইলান জানত না, সে নয় তার মৃতদেহ আশ্রয় পাবে সেই দ্বীপের কবরে। গ্রিসে যখন নিজের নাগরিকদের ভাতের সংস্থান করতেই গলদঘর্ম সরকার, ঠিক তখনই শয়ে শয়ে শরণার্থীর চাপ গ্রিসের অর্থনীতিকে আরও পঙ্গু করে তুলেছে। এই মুহূর্তে গ্রিসের এই আর্থিক সঙ্কট থেকে উদ্ধারের বার্তা কী হবে, তার কোনও সুস্পষ্ট দিশা নেই। আথেনাও পুনরারভিভাবও এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে কি না, তা এখন লক্ষ দ্রাখমার প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE