পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনা— ফাইল চিত্র।
আকস্মিক উত্তেজনা থেকে নয়, গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় পরিকল্পনা মাফিক টহলদার ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালিয়েছিল চিনা ফৌজ। ‘ইউনাইটেড স্টেট-চায়না ইকনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশন’-এর তরফে আমেরিকার কংগ্রেসে জমা দেওয়া বার্ষিক রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণও।
আমেরিকার বিদেশ দফতরের পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডেভিড স্টিলওয়েল মাসকয়েক আগে অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চিনের শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ভারত-সহ বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের উপর চড়াও হওয়ার ছক কষেছিল। লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-তে লালফৌজের আগ্রাসী আচরণ সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ।’’
আমেরিকা-চিন অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের রিপোর্টে দাবি, ‘প্রাণহানির সম্ভাবনা মাথায় রেখেই চিনের সেনা গালওয়ানে হামলার পরিকল্পনা করেছিল’। এ প্রসঙ্গে গালওয়ান-কাণ্ডের কয়েক সপ্তাহ আগে আগে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফংহর একটি মন্তব্যের প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে আমেরিকার রিপোর্টে। ওয়েই বলেছিলেন, ‘‘যুদ্ধের মাধ্যমেই সীমান্তে স্থিতিশীলতা স্থাপন করা যেতে পারে।’’
গালওয়ানে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র হামলায় শহিদ হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। আমেরিকার গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি, নিহত চিনা সেনার সংখ্যা অন্তত ৩৫। ১৯৭৫ সালের পরে ফের এলএসি-তে রক্ত ঝরার জন্য চিনের আগ্রাসী আচরণকেই দায়ী করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। সেখানে ‘প্রমাণ’ হিসেবে এসেছে গালওয়ান সংঘর্ষের দু’সপ্তাহ আগে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। যেখানে নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, ‘আমেরিকা-চিন সঙ্ঘাতে নাক গলালে ভারতকে ভয়ঙ্কর আঘাত সইতে হবে’।
আরও পড়ুন: তিন দশক পর ভারত থেকে চাল আমদানি করছে চিন
গালওয়ানে হামলার আগে ওই এলাকায় অস্ত্রশস্ত্র-সহ প্রায় ১,০০০ চিনা সেনা মোতায়েন এবং পরিকাঠামো নির্মাণের প্রসঙ্গও এসেছে রিপোর্টে। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্রও তুলে ধরেছে ‘ইউনাইটেড স্টেট-চায়না ইকনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশন’।
আরও পড়ুন: ‘অভিষেক রাক্ষস, মহিষাসুর’, ফের নাম করে নিশানা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্রের
প্রসঙ্গত, শুধু ভারত নয়, দক্ষিণ চিন সাগরের সাম্প্রতিক উত্তেজনা, জাপানের বিরুদ্ধে বেজিংয়ের আগ্রাসী আচরণ, চিনা ফাইটার জেটের তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন এমনকি, হংকংয়ে স্বশাসনের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের উপর চিনা আইনরক্ষকদের দমনপীড়নের প্রসঙ্গ নিয়েও এর আগে একাধিক বার আমেরিকার কংগ্রেসে প্রশ্ন উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy