লন্ডনের ভ্যাজাইনা মিউজিয়াম।
বছর দুই আগে লন্ডনে খুলেছিল বিশ্বের প্রথম যোনি সংক্রান্ত মিউজিয়াম। এরই মধ্যে সেই মিউজিয়াম আশ্রয় হারাতে চলেছে। উত্তর লন্ডনের ক্যামডেন মার্কেটে দু’বছরের জন্য ঘর ভাড়া নিয়েছিল মিউজিয়ামটি। এ বছর সেই ভাড়ার চুক্তি পুনর্নবীকরণ করার কথা ছিল। কিন্তু ক্যামডেন মার্কেট তা করতে অস্বীকার করেছে। বদলে মিউজিয়ামের জায়গাটি একটি পোশাক সংস্থাকে ভাড়া দিয়েছে তারা। অসহায় কর্তৃপক্ষ তাই সাহায্য চেয়ছেন মানুষের কাছেই। একটি টুইটার পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আমরা আমাদের গোপন বস্ত্র সাধারণত প্রকাশ্যে মেলি না। কিন্তু বিপদে পড়ে তা-ই করতে হচ্ছে। আমাদের স্ত্রী জননাঙ্গের জাদুঘর কিছু দিনের মধ্যেই আশ্রয়হীন হতে চলেছে। আপনাদের সাহায্য চাই।’
২০১৯ সালের অক্টোবরে লন্ডনের বৈগ্রাহিক ক্যামডেন মার্কেটে খোলা হয়েছিল বিশ্বের প্রথম যোনি সংক্রান্ত মিউজিয়ামের দরজা। প্রতিষ্ঠাতা ফ্লোরেন্স সেস্টার একটি গণ অনুদানের সাহায্যে এই মিউজিয়ামের অর্থ জুগিয়েছিলেন। ফ্লোরেন্সের পরিকল্পনা ছিল, যোনি সংক্রান্ত এই মিউজিয়ামকে আগামী দিনে আরও পরিসরে বাড়াবেন। কিন্তু বাস্তবে দু’বছরের মাথায় তাঁদের ভাবতে হচ্ছে, ঘর না পেলে মিউজিয়ামের জিনিসপত্র কোথায় নিয়ে যাবেন।
স্ত্রী জননাঙ্গের গঠন সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রকাশ্যে তুলে ধরার চেষ্টা থেকেই এই মিউজিয়ামের যাত্রা শুরু। মেয়েদের যোনি সংক্রান্ত বিষয়ে সমাজের অতি রক্ষণশীল মনভাবকে সহজ করে দেওয়াও ছিল এই মিউজিয়াম চালু করার নেপথ্যে আরও একটি বড় কারণ। ভ্যাজাইনা মিউজিয়ামের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, ‘আইসল্য়ান্ডে পুরুষাঙ্গের একটি মিউজিয়াম রয়েছে। যেটা ঘুরে আমাদের দারুণ লেগেছিল। তারপর যখন আমরা জানলাম, মেয়েদের জননাঙ্গ নিয়ে বিশ্বের কোথাও কোনও মিউজিয়াম নেই, তখনই এই মিউজিয়াম তৈরির সিদ্ধান্ত নিই।’ ২০১৭ সাল থেকে এই ভাবনার শুরু। ২০১৯ সালে বিশ্বের প্রথম ভ্যাজাইনা মিউজিয়াম দরজা খোলার পর থেকেই সাড়া ফেলেছিল। তা হলে হঠাৎ এই দৈন্যদশা কেন? ফ্লোরেন্স জানাচ্ছেন, গত দেড় বছরের অতিমারি পরিস্থিতির কারণেই এই দিন দেখতে হচ্ছে তাঁদের। অতিমারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে ক্ষেত্রগুলি, মিউজিয়াম তার মধ্যে অন্যতম। বাধ্য হয়েই তাই আপাতত সহজলভ্য মূল্যে ঘর চাইছেন তাঁরা।
We’d prefer not to air our linens in public (unless we’re showing you how vaginal acidity is normal). But we need to say something, and we need to ask your help. The pandemic has been rough for the entire museum sector. Now the Vagina Museum is at risk of becoming homeless.
— Vagina Museum (@vagina_museum) August 2, 2021
মিউজিয়ামে যোনি সংক্রান্ত নানা সচেতনতামূলক শিক্ষার পাশাপাশি নিয়মিত প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হত। মেয়েদের ঋতুচক্র এবং স্ত্রী রোগ নিয়ে ভ্যাজাইনা মিউজিয়াম আয়োজিত অনুষ্ঠান প্রশংসিতও হয়েছে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর মিউজিয়ামটির ভাড়ার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। শেষদিনেও ঋতুচক্র নিয়ে একটি প্রদর্শনী করবেন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। তবে তারপর কী হবে তা এখনও অজানা।
এত দিন ক্যামডেন মার্কেটে যে জায়গাটিতে তাঁদের মিউজিয়াম ছিল, তার আয়তন ১ হাজার ৩০০ বর্গফুট। ফ্লোরেন্স জানিয়েছেন যে ভাবে তাঁরা কাজ করেন, তাতে সম্ভব হলে আরও একটু বড় পরিসরে মিউজিয়ামটিকে নিয়ে যেতে চান তাঁরা। তাই ২ হাজার বর্গফুটের কোনও জায়গা দরকার তাঁদের। তবে অর্থের জোগান কম। প্রতি বর্গফুটে ৩৫ পাউন্ডের বেশি খরচ করার ক্ষমতা নেই মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের। ১৯ সেপ্টেম্বরের আগে নতুন আশ্রয় না জুটলে অন্তত এমন একটি জায়গা দরকার, যেখানে তাঁরা মিউজিয়ামের জিনিস রাখতে পারেন। ফ্লোরেন্সের এই আবেদনে সাড়া মিলেছে। দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছে স্ত্রী জননাঙ্গের মিউজিয়ামটি। তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সমাধান পাননি বলেই জানিয়েছেন ফ্লোরেন্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy