প্রতীকী ছবি।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে নিশানা করে ফের বোমা ফাটাল উইকিলিকস। টেলিফোনে আড়ি পাতা কিংবা কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের কথা শোনা গিয়েছিল আগেই। এ বার তাদের অভিযোগ, টিভি থেকেও যথেচ্ছ তথ্য চুরি করেছে সিআইএ। ২০১৩ থেকে ২০১৬— টানা তিন বছর। উইন্ডোজ কিংবা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের কম্পিউটার তো বটেই, হ্যাকিং এড়াতে পারেনি আইফোন, গুগল-ফোনও।
কী ভাবে চলত এই হ্যাকিং? হাতিয়ার সেই চিরাচরিত ম্যালওয়্যার। কিছু ক্ষেত্রে সিআইএ আবার নিজেই হ্যাকিং সফটওয়্যার তৈরি করেছে বলে অভিযোগ উইকিলিকসের। টিভি মারফৎ তথ্য চুরির বিষয়টা আরও মারাত্মক! উইকিলিকসের দাবি, স্যামসাংয়ের মতো প্রথম সারির বেশ কয়েকটি কোম্পানির টিভির মাইক্রোফোন কিংবা ইউএসবি পোর্টে থাকত কথোপকথন রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা। পরে যা ওয়াই-ফাই মারফৎ সরাসরি চলে আসত সিআইএ-র কাছে! টিভি হ্যাকিংয়ের জন্য স্পাইওয়্যার তৈরিতে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইফাইভ-এর হাত রয়েছে বলেও দাবি সংস্থাটির।
মঙ্গলবার নিজেদের ওয়েবসাইটে সিআইএ-র তথ্য চুরির ওই যাবতীয় কৌশল নিয়ে প্রায় ন’হাজার নথি ফাঁস করেছে উইকিলিকস। সরকারি ভাবে এই নথির সত্যতা যাচাই করা না গেলেও, সংস্থাটির দাবি— সিআইএ-র অবৈধ গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে এটাই সব চেয়ে বড় নথি ফাঁসের ঘটনা। ‘ভল্ট সেভেন’ শিরোনামে আগামী দিনে এমন আরও অসংখ্য নথি ফাঁস করা হবে বলেও জানিয়েছে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সংস্থা।
যা নিয়ে হোয়াইট হাউসের মতোই মুখে কুলুপ এঁটেছে সিআইএ। কিন্তু অস্বস্তি এড়ানো যাচ্ছে না। অভিযোগ, দেশের হয়ে বহু দিন ধরেই গুপ্তচর বৃত্তি চালিয়ে আসছে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। ২০১৩-য় যার নানাবিধ গোপন তথ্য ফাঁস করে দেন এনএসএ-রই প্রাক্তন কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেন। গোটা বিশ্ব জেনে যায়, কী ভাবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ফোনালাপ গোপনে রেকর্ড করে চলেছে এনএসএ। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ গুপ্তচরবৃত্তিতে নামল কেন?
উইকিলিকসের দাবি, কোনও এক অজানা কারণে এনএসএ-কে ‘বিরোধী পক্ষ’ হিসেবে ধরে নেয় সিআইএ। আর তার পরেই নানাবিধ ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি হ্যাকিংয়ে হাত দেয় এই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটি। উইকিলিকস তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করেছে, হোয়াটস অ্যাপ, সিগন্যাল, টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং মিডিয়াতেও ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দিনের পর দিন তথ্য চুরি করেছে সিআইএ। বেশির ভাগই ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা কিংবা লাতিন আমেরিকা থেকে।
মঙ্গলবার এই তথ্য ফাঁস হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সিলিকন ভ্যালিতে। সিআইএ কী ভাবে এত সহজে তাদের মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে ঢুকে তথ্য চুরি করল, এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি গুগল কিংবা লিনাক্স। যদিও অ্যাপলের দাবি, এখন আইফোন বা আইপ্যাডে যে সফটওয়্যার তারা ব্যবহার করছে, তা থেকে কোনও ভাবেই তথ্য চুরি যাওয়ার কথা নয়। উপভোক্তাদের সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করার কাজ চলেছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। এ দিকে, উইকিলিকসের তথ্য ফাঁসের দাবি নিয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে স্যামসাং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy