Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

৪০ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে প্রথম দেখা মেয়ের, সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া

বাবা সম্পর্কে তাঁর নামের প্রথমটা আর কোন বারে তিনি কাজ করতেন— এই দুটি জিনিসই কেবলমাত্র জানা ছিল জাস্টামন্ডের। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ‘প্যালিসে়ডস্ পার্ক’ বলে ফেসবুকে একটি গ্রুপ রয়েছে। তার পর থেকেই তন্ন তন্ন করে বাবার খোঁজ শুরু করে দেয় সে।

অল অন্নুনজিয়াটা এবং জিল জাস্টামন্ড। ছবি: সংগ্রহীত।

অল অন্নুনজিয়াটা এবং জিল জাস্টামন্ড। ছবি: সংগ্রহীত।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ১৫:৫৬
Share: Save:

ক’দিন আগে এ দেশের মুম্বই হাইকোর্ট রায় দিল, এক রাতের আচমকা মিলনে যে বিবাহ-বহির্ভূত সন্তানের জন্ম, পিতৃসম্পত্তিতে তাঁর কোনও অধিকার নেই। আইন আইনের পথে চলে। আর জীবন চলে জীবনের পথে। এমনই এক ক্ষণিক সংরাগের ফলে জন্ম নেওয়া মেয়ে তাঁর চল্লিশ বছর বয়সে এসে খুঁজে পেলেন বাবাকে। আর ফাদার্স ডে-তে মেয়েকে কাছে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েছেন যিনি, সেই ৬৩ বছরের বাবা জানতেনও না, সেই একটা রাতের ক্ষণিক সম্পর্কের জেরে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। তবে এ ঘটনা এ দেশের নয়। আমেরিকার।

কলোরাডোর লিটলটন শহরে জাস্টামন্ডের বড় হয়ে ওঠা। যাঁদের ছত্রছায়ায় ওঁর বড় হওয়া, তাঁরা যে মা-বাবা নন, জানতে সময় লেগেছিল অনেক বছর। আসলে তাঁরা দাদু আর দিদিমা। মাকে ও’ জানত দিদি বলে। তার পর সত্যিটা জানার পর, বোঝার পর থেকে প্রশ্ন জাগে, কে তার বাবা! এত বছর পরে, ১৬০০ মাইল দূরে থাকা সেই জন্মদাতার খোঁজ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জাস্টামন্ড। ভেজা চোখে বলে ওঠেন ‘আমার জন্মের সময় মায়ের বয়স ১৮। যে বয়সে একা একা, পিতৃপরিচয়হীন একজন সন্তানের দেখভাল করাটা সত্যিই দুষ্কর। আর তখনই মা আমাকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর মা-বাবার কাছে চলে আসে। আমার যখন ১০ বছর বয়স তখন জানতে পারি এঁরা আমার মা-বাবা নয়। সঙ্গে আরও একটা সত্যি জানতে পারি যে যাঁকে এত দিন যাবৎ দিদি ভেবে এসেছি, তিনিই আমার মা।’

বড় হয়ে মায়ের কাছে বায়না, বাবার কথা বলো! জাস্টামন্ডের মা লিন্ডা শুধু এটুকুই বলতে পারেন, নিউ জার্সির প্যালিসে়ডস্ পার্কে নিয়ারিজ বলে একটি বারে অলের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। ইতালীয় অল ছিল সেখানকার বারটেন্ডার। ওখানেই তাঁদের ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’।

বাবা সম্পর্কে তাঁর নামের প্রথমটা আর কোন বারে তিনি কাজ করতেন— এই দুটি জিনিসই কেবলমাত্র জানা ছিল জাস্টামন্ডের। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ‘প্যালিসে়ডস্ পার্ক’ বলে ফেসবুকে একটি গ্রুপ রয়েছে। তার পর থেকেই তন্ন তন্ন করে বাবার খোঁজ শুরু করে দেয় সে। ১৯৭০ সাল থেকে এই প্যালিসে়ডস্ পার্কেই নিয়ারিজ বারের অবস্থান। সেখানেই এক ব্যক্তি ডন নিয়ারির খবর দেন। এই ডন নিয়ারিই হচ্ছেন নিয়ারিজ বারের মালিক। নিয়ারিকে ফোন করেন জাস্টামন্ড। বলেন, ‘জানি এটা খুবই বোকা বোকা! ১৯৭৬-৭৭ সালে আপনার বারে অল বলে এক ব্যক্তি কাজ করতেন। তাঁর সম্পর্কে কিছু...’। ও পাশ থেকে উত্তর আসে, ‘আপনি কি অল অন্নুনজিয়াটার খোঁজ করছেন?’


দেখা হওয়ার পরক্ষণেই দু’জনে। ছবি: সংগৃহীত।

গত ৩ এপ্রিল, নিজের জন্মদিনে, ফেসবুকে বাবাকে ট্র্যাক করে খুঁজে পান জাস্টামন্ড। সেখানে কথাবার্তাও শুরু হয়ে যায় তাঁদের। গত ২৪ এপ্রিল অন্নুনজিয়াটা একটি প্যাটার্নিটি টেস্ট করান। তার রিপোর্ট ৯৯.৯৯৬৬ শতাংশ নিশ্চিত করে যে জাস্টামন্ডের বায়োলজিক্যাল বাবা অন্নুনজিয়াটাই।

আরও পড়ুন: স্টান্ট দেখাতে গিয়ে কুমিরের খপ্পরে স্টান্টম্যান, দেখুন ভিডিও

তার পর আর রোখে কে! ফাদার্স ডে-তে মেয়ে পৌঁছে গেলেন বাবার শহরে। মেয়েকে ধরে আবেগতাড়িত বাবার কথা ‘আমি কোনও দিনের জন্য তোমাকে যেতে দেব না।’ আপাতত মেয়েকে ফিরতে হয়েছে। তবে দেখা হবে শীঘ্রই। এক সঙ্গে বড়দিন পালন করবেন দু’জনে। বাবা এবং মেয়ে দুজনেই এখন মুখিয়ে আছেন সেই দিনের জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE