প্রায় দশ ঘণ্টা সমুদ্রের হিমশীতল জলে। তবু হার মানেননি। সমস্ত মনের জোর এক করে ওই দশটা ঘণ্টা সময়ের সঙ্গে লড়ে গিয়েছেন ৪৬ বছরের কে লংস্টাফ।
শনিবার মধ্য রাতে ‘নরওয়েজিয়ান স্টার’ নামে একটি সংস্থার প্রমোদতরী থেকে আড্রিয়াটিক সাগরে পড়ে যান ব্রিটিশ ওই মহিলা। অসম্ভব মনের জোর ও যোগশিক্ষার প্রশিক্ষণ, এই দু’টিকে সম্বল করেই নিজেকে শক্ত রেখেছিলেন লংস্টাফ। ঠান্ডার ‘জুজু’ কাটাতে গান গেয়েছেন জলের মধ্যেই।
উদ্ধারকারী দল যখন লংস্টাফকে জল থেকে তুলে নিয়ে আসে, তখন রবিবার সকাল। পুলা-র একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বেঁচে ফিরবেন ভাবেননি নিজেই, গোটাটাই অবিশ্বাস্য, মনে করছেন খোদ লংস্টাফ-ই।
ইতালির পূর্ব উপকূল ও ক্রোয়েশিয়ার মাঝামাঝি এই আড্রিয়াটিক সাগর। পুলা-র কাছে ক্রোয়েশিয়া উপকূল এলাকায় তখন প্রমোদতরী। লংস্টাফ জানান, জাহাজের ডেকে হেলান দিয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎই প্রমোদতরীটি থেকে সমুদ্রে পড়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের অবশ্য দাবি, সেই রাতে জাহাজের মধ্যেই মদ্যপান করেছিলেন লংস্টাফ। টলোমলো পায়ে তাঁকে ডেকের দিকে যেতে দেখেছিলেন অনেকেই।
রবিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ লংস্টাফের খোঁজে উদ্ধারকাজে নামে ক্রোয়েশীয় উপকূল রক্ষা বাহিনীর জাহাজ এবং একটি পিসি-৯ তল্লাশি বিমান। হঠাৎই সমুদ্রের মধ্যে সাঁতার কাটতে দেখা যায় লংস্টাফকে। সকাল ৯টা ৪০ নাগাদ তাঁর কাছে পৌঁছয় উদ্ধারকারী দল। যেখানে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকে খুব বেশি দূরে তিনি ছিলেন না বলে দাবি উদ্ধারকারীদের।
ক্রোয়েশিয়ার নৌ-মন্ত্রকের মুখপাত্র ডেভিড রাডাস জানান, লংস্টাফ কী ভাবে পড়ে গিয়েছিলেন, তা জানতে প্রমোদতরীটির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে। উদ্ধারকারী দলের প্রধান লভ্রো ওরেসকোভিক জানাচ্ছেন, সমুদ্রের মধ্যে যুঝতে যুঝতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন মহিলা। ওঁকে বাঁচাতে পেরে আমরা খুশি।’’