ভোট দিতে পৌঁছলেন সস্ত্রীক ডেভিড ক্যামেরন। ছবি: এএফপি।
সকাল থেকেই বৃষ্টি। গত কয়েক দিন ধরে এমনই চলছে। কোথাও কোথাও এত বৃষ্টি হয়েছে যে, রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
সেই বৃষ্টি-বাদলা মাথায় করেই আজ ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোট দিল ব্রিটেন। রায় বেরোতে বেরোতে শুক্রবার। তখনই জানা যাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকবে, না এই জোট থেকে বেরিয়ে যাবে রানির দেশ।
ব্রিটিশ সরকার জানিয়ে দিয়েছে, গণভোটের রায় যাই হোক না কেন, সেটাই মেনে নেওয়া হবে। অর্থাৎ গণভোটের রায় যদি ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে যায়, তা হলে ব্রিটেনই হবে প্রথম দেশ, যারা ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে।
ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথম থেকেই দ্বিধাবিভক্ত ব্রিটেন। লড়াই চলছে হাড্ডাহাড্ডি। সর্বশেষ জনমত সমীক্ষাতেও স্পষ্ট নয়, কী হতে চলেছে গণভোটের রায়। প্রথমে বলা হচ্ছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে ৪৫ শতাংশ মানুষ। আর ৪৪ শতাংশ মানুষ ইইউ না-ছাড়ার পক্ষে। পরে দেখা যায়, সমীকরণটা ঠিক উল্টে গিয়েছে। অর্থাৎ, স্বল্প সংখ্যায় হলেও বেশি মানুষ ইইউ-তে থেকে যেতে চাইছেন। তবে প্রায় প্রত্যেকটি সমীক্ষাই বলছে, ভোটদাতাদের একটা বড় অংশ (১০-১১ শতাংশ) এখনও দোটানায় ভুগছেন। আর এই ১০-১১ শতাংশ মানুষের উপরেই ব্রিটেনের ইইউ-তে থাকা না-থাকার নির্ভর করছে বলে সমীক্ষকদের মত।
ইইউ-তে থাকা এবং বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রচারও উঠেছিল তুঙ্গে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইইউ-তে থাকার পক্ষে। জনগণকে তিনি ইইউ-তে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এ দিন স্ত্রী সামান্থার সঙ্গে ভোট দিতে যান প্রধানমন্ত্রী। তারপর বুথের বাইরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিলে তা হবে একটি বিরাট ভুল।’’
তবে এই বিষয়টি নিয়ে তাঁর নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যেই মতভেদ রয়েছে। অন্য দিকে, বিরোধী লেবার পার্টির নেতারাও ইইউ-তে ব্রিটেনকে রেখে দেওয়ার পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছেন। এই সব লেবার নেতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি টিউলিপ সিদ্দিকি এবং রোশেনারা আলি।
এ দিন সকাল দশটা থেকে ৪০ হাজার ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলসে একসঙ্গে ভোট নেওয়া চলছে। ভোট দিচ্ছেন, ৪ কোটি ৬০ লক্ষেরও বেশি ভোটার। তবে প্রবল বৃষ্টিতে প্রচুর জল জমে যাওয়ার ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয় কিংস্টন ও বার্কিং-এর দু’টি ভোট কেন্দ্র। শুক্রবার সকালে ম্যাঞ্চেস্টার টাউন হল থেকে গণভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।
ভোটারদের আজ যে ব্যালটপেপার দেওয়া হয়েছে, তার দু’টি ভাগ। একটি ভাগে লেখা রয়েছে ‘ব্রিটেনের ইইউ-র সদস্য থাকা উচিত’। অন্য ভাগে লেখা রয়েছে, ‘ব্রিটেনের ইইউ-তে থাকা উচিত নয়।’ এই দু’টি লেখার পাশে একটি করে বক্স রয়েছে। ভোটদাতারা তাঁদের পছন্দের বক্সে ‘ক্রস’ চিহ্ন দেবেন।
কার ঝুলিতে ক’টা ‘ক্রস’ পড়ল, সেই উত্তরের দিকে তাকিয়েই তামাম দুনিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy