Advertisement
E-Paper

তিন শব্দসঙ্কেতের সন্ধানে ভারত মহাসাগর তোলপাড়

তিরিশ দিনে তিনটি শব্দসঙ্কেত। ভারত মহাসাগর থেকে বাকি যা কিছুর সন্ধান মিলেছিল, তা ইতিমধ্যেই অর্থহীন বলে প্রমাণিত। আপাতত তাই এই শব্দসঙ্কেতগুলির উৎস খুঁজতেই ব্যস্ত তদন্তকারী দল। তাঁদের আশা, হয়তো এই তিনটির কোনও একটিই নিখোঁজ বিমান বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআরের ব্ল্যাক বক্সের সন্ধান বাতলে দেবে। অস্ট্রেলীয় প্রশাসন জানিয়েছিল, শনিবার চিনা জাহাজ হেক্সিয়ান ০১-এর তিন কর্মী অস্পষ্ট কিছু সঙ্কেত শুনতে পেয়েছিলেন। এ দিন জানা গিয়েছে, সে সঙ্কেতের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৯০ সেকেন্ড।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১০

তিরিশ দিনে তিনটি শব্দসঙ্কেত। ভারত মহাসাগর থেকে বাকি যা কিছুর সন্ধান মিলেছিল, তা ইতিমধ্যেই অর্থহীন বলে প্রমাণিত। আপাতত তাই এই শব্দসঙ্কেতগুলির উৎস খুঁজতেই ব্যস্ত তদন্তকারী দল। তাঁদের আশা, হয়তো এই তিনটির কোনও একটিই নিখোঁজ বিমান বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআরের ব্ল্যাক বক্সের সন্ধান বাতলে দেবে।

অস্ট্রেলীয় প্রশাসন জানিয়েছিল, শনিবার চিনা জাহাজ হেক্সিয়ান ০১-এর তিন কর্মী অস্পষ্ট কিছু সঙ্কেত শুনতে পেয়েছিলেন। এ দিন জানা গিয়েছে, সে সঙ্কেতের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৯০ সেকেন্ড। আরও খবর, সঙ্কেতটি বেশ অনিয়মিত ছিল। এবং গোটা বিষয়টিই এত দ্রুত ঘটেছিল যে তা রেকর্ড করারও সময় পাননি ওই তিন কর্মী। এ দিন তদন্তকারী দলের কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবারও একই ধরনের শব্দসঙ্কেত ধরা পড়েছিল ওই চিনা জাহাজের ‘হাইড্রোফোন’-এ। তবে শুক্রবার যেখান থেকে শব্দসঙ্কেত ধরা পড়েছিল, সেখান থেকে মাত্র ২ নটিক্যাল মাইল দূরের অঞ্চল থেকে শনিবারের শব্দসঙ্কেতের হদিস পায় হেক্সিয়ান ০১। দু’টির কম্পনমাত্রার মধ্যেও অবিশ্বাস্য মিল ছিল। তদন্তকারী দলের দাবি, গত কালের শব্দসঙ্কেতের কম্পনমাত্রা ছিল সেকেন্ড প্রতি ৩৭.৫ হার্ৎজ। তথ্য বলছে, নিখোঁজ বিমানটির ব্ল্যাক বক্সের কম্পনমাত্রাও এটি।

বিশেষজ্ঞদের আরও দাবি, পারথ থেকে ১০০০ মাইল পশ্চিমে যেখান থেকে ওই দু’টি শব্দসঙ্কেত ধরা পড়েছিল, সেটি নয়া তদন্ত এলাকার মধ্যেই। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান তথা তদন্তকারী দলের প্রধান অ্যাঙ্গাস হিউস্টন জানিয়েছেন, এই শব্দসঙ্কেতটিকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেই শব্দের উৎস খুঁজতে এবং তা নিখোঁজ এমএইচ ৩৭০-রই কি না তা নিয়ে নিশ্চিত হতে উন্নততর প্রযুক্তিসম্পন্ন ব্রিটিশ জাহাজ এইএমএস ইকো ওই এলাকায় রওনা দিয়েছে। আগামিকাল তার পৌঁছনোর কথা। রবিবার দিনভর ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে কোনও সূত্রই মেলেনি।

অন্য দিকে, রবিবার মার্কিন ‘ব্ল্যাক বক্স লোকেটর’ প্রযুক্তি সম্পন্ন ওশেন শিল্ড জাহাজটিও একটি শব্দসঙ্কেতের সন্ধান পেয়েছে। তবে ভারত মহাসাগরের সম্পূর্ণ অন্য একটি অংশ থেকে ওই সঙ্কেতটি মিলেছে বলে খবর। সেটি খতিয়ে দেখার পর চিনা জাহাজের শব্দসঙ্কেতটির সন্ধান পেতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাড়ি দেবে ওশেন শিল্ড। নিখোঁজ হওয়ার তিরিশ দিন পর ওই সঙ্কেতগুলির হদিস মেলায় হঠাৎ যেন নতুন আশার আলোর দেখা মিলেছে। হিউস্টন অবশ্য বার বার জানিয়েছেন, এত তাড়াতাড়ি কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত হবে না। কিন্তু চিনা জাহাজের যন্ত্রে ধরা পড়া ওই দুই সঙ্কেত যেন সামান্য হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে। কারণ, বিমানটির ব্ল্যাক বক্সের প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রধান অনীশ পটেল এ দিনও জানিয়েছেন, প্রতি সেকেন্ডে ৩৭.৫ হার্ৎজের বিশেষ কম্পনমাত্রা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল ব্ল্যাক বক্সটির জন্য। সমুদ্রে তৈরি হওয়া যে কোনও তরঙ্গের কম্পনমাত্রা হুবহু এরই মতো হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। অতএব চিনা জাহাজের যন্ত্রে যে দু’টি সঙ্কেত ধরা পড়েছে, সেটি এমএইচ ৩৭০-র হতেও পারে।

অন্য দিকে, এ দিন মালয়েশিয়ার তদন্তকারী দলের একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে, ৮ মার্চ রাতে রেডারের নজর এড়াতে ইচ্ছা করেই ইন্দোনেশিয়ার উত্তর দিক দিয়ে উড়ে গিয়েছিল বিমানটি। সে দিক থেকে দেখতে গেলে আবার ঘুরে ফিরে আসে নাশকতার তত্ত্ব। যার সপক্ষে এখনও কোনও জোরদার প্রমাণ নেই তদন্তকারীদের কাছে।

আপাতত তাই প্রার্থনাই সম্বল। এ দিনও কুয়ালা লামপুরে বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে জমায়েত হয়েছিলেন অন্তত তিন হাজার বাসিন্দা। সকলেরই প্রার্থনা ছিল, সুস্থ ভাবে ফিরে আসুন যাত্রীরা। শেষ হোক তদন্ত। আর সেটি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা এ দিন ফের উঠে এসেছে নিখোঁজ ভারতীয় যাত্রী চন্দ্রিকা শর্মার স্বামী কে এস নরেন্দ্রনের কথায়। তিনি বলেন, “আমরা যদি এই তদন্তের শেষ দেখতে না পারি, সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কখনও মানুষ বিমানে চড়ার সময় নিরাপদ বোধ করবেন না।”

mh 370 boeing malysia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy