নীলের মধ্যে ছোট ছোট হাজার খানেক বিন্দু প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। ৭০ হাজার বাসিন্দার সেই দ্বীপরাষ্ট্র আজ অস্তিত্ব-সঙ্কটে!
কারণ, এগিয়ে আসছে সমুদ্র! গিলে ফেলছে জমিজমা, রাস্তাঘাট, সাজানো গোছানো সমুদ্রতট। এমনকী বেলাভূমিতে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নারকেল গাছগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে।
সেই হারানোর তালিকায় নবতম সংযোজন, গোরস্থান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার সেনা ছাউনি ছিল মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে। যুদ্ধে নিহত সেনাদের কবর দেওয়া হয়েছিল ওই দ্বীপগুলোতেই। সেখানের ২৬টি কবর চলে গিয়েছে সমুদ্রগহ্বরে। ধুয়ে নিয়ে গিয়েছে দেহাবশেষ। আর তাতেই দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে বাসিন্দাদের মনে। মনে করিয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সতর্কবার্তা বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে বরফ গলছে, বাড়ছে জলস্তর। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই শতকের মধ্যেই ছ’ফুট বেড়ে যেতে পারে জলস্তর। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে তো এখনই সমুদ্রস্তর ভূমিভাগ থেকে ৫-৬ ফুট উঁচুতে।
তা হলে?
জবাব জানা নেই প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টোফার লোয়েকের। জানালেন, ছেলেবেলায় সমুদ্রের তীর ঘেঁষে যে পথে হেঁটেছিলেন, যেখানে এক সময় খেলাধুলো করেছেন, সেখানে এখন গর্জন করছে সমুদ্র। বললেন, “ভয় করছে। আমার সন্তান কিংবা নাতিনাতনিদের কী হবে?” লোয়েকের কথায়, “জমি যে ভাবে উধাও হয়ে যাচ্ছে, তা দেখে ইতিমধ্যেই বহু বাসিন্দা অন্যত্র চলে গিয়েছে। আশ্রয় নিয়েছে অন্য কোনও দেশে।” শুধু জমি, বাসস্থান নয়, খাদ্যাভাবও দেখা দিয়েছে এর মধ্যেই। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে আয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ হচ্ছে নারকেল চাষ। সেখানে সারি সারি নারকেল গাছও চলে গিয়েছে সমুদ্রের জলে। ফলে মার খাচ্ছে চাষাবাসও।
তবে এখনই উষ্ণায়নের এ হেন প্রভাব, মানতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ মুরি ফোর্ড যেমন জানালেন, ১৯৭০ সালের কিছু ছবির সঙ্গে দ্বীপপুঞ্জের সাম্প্রতিক ছবিগুলো মেলালে কিন্তু দেখা যাবে, বিষয়টা সর্বৈব সত্য নয়। কিছু দ্বীপ আবার আকারে বেড়েছেও। তা ছাড়া সমুদ্রতট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে ফোর্ডের ব্যাখ্যা, “দায়ী অবৈধ নির্মাণ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy