Advertisement
E-Paper

মমতার ঢাকা সফর শেষে রাজ্যের পাওনা শূন্যই

গত তিন দিন ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরকে ঘিরে বাহ্যিক উচ্ছাস, আন্তরিকতা এবং সৌজন্যের কোনও অভাব ছিল না। আজকের বৈঠকেও দিদি শেখ হাসিনা তাঁর বাসস্থান ‘গণভবনে’ ঢালাও আপ্যায়ন করলেন তাঁর ছোট বোন মমতাকে। গত কাল মাঝরাতে ঐতিহাসিক শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর যে ভাবে প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছু’টে গিয়েছিলেন একে অপরের দিকে, আজ গোটা দিন সেই সুর বেজে গিয়েছে মমতার ফিরতি বিমান ধরা পর্যন্ত।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪২

গত তিন দিন ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরকে ঘিরে বাহ্যিক উচ্ছাস, আন্তরিকতা এবং সৌজন্যের কোনও অভাব ছিল না। আজকের বৈঠকেও দিদি শেখ হাসিনা তাঁর বাসস্থান ‘গণভবনে’ ঢালাও আপ্যায়ন করলেন তাঁর ছোট বোন মমতাকে। গত কাল মাঝরাতে ঐতিহাসিক শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর যে ভাবে প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছু’টে গিয়েছিলেন একে অপরের দিকে, আজ গোটা দিন সেই সুর বেজে গিয়েছে মমতার ফিরতি বিমান ধরা পর্যন্ত। কিন্তু, এ সবের পরেও একটি প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে, সরকারি অর্থে পাত্র-মিত্র-অমাত্য নিয়ে মমতার এই ঢাকা সফরে রাজ্য কী পেল?

গত কাল ভারতীয় হাই কমিশনার পঙ্কজ সারনের বাড়িতে চা-চক্রের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রতিনিধি দলের খোশগল্প ও গানবাজনা অথবা দুপুরের বৈঠকি আড্ডায় মনভরানো বিচিত্রানুষ্ঠান হলেও, রাজ্যের পাওনার ঘরে কিন্তু বলার মতো কিছুই নেই। তবে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যৌথ উদ্যোগে সিনেমা তৈরি নিয়ে আজ বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী অভিনেতা প্রসেনজিৎ ও পরিচালক গৌতম ঘোষ। দুই বাংলার মধ্যে যৌথ উদ্যোগে চলচ্চিত্র নির্মাণ, কালকাতায় বাংলাদেশি ছবির উৎসব-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খুব শীঘ্রই উদ্যোগ শুরু হবে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু এই আলোচনার বিষয়টিও নতুন নয়। বছর তিনেক ধরেই চলছে। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু প্রভাবশালী প্রযোজকের বাধায় কিছুই এগোচ্ছে না।

আজ বিকেলে দু’দেশের বণিকসভার সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক হল। তাতে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ থেকে শুরু করে উপস্থিত ছিলেন দু’পক্ষের বহু বাণিজ্য কর্তা। কিন্তু গোটা আলোচনাটিই ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী এবং তিস্তা-ছিটমহলের দাবিদাওয়ার চড়াতেই গিয়ে ঠেকলো। কোনও নির্দিষ্ট বিনিয়োগ সম্ভাবনা তৈরি হল না। দু’দেশের বিমানবন্দরে পারস্পরিক দোকান করার মত কিছু অকিঞ্চিৎকর মৌখিক প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী দিলেও, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হল না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের বিমানে ওঠার আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে তৃণমূল-জামাত যোগাযোগ নিয়ে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে ঢাকার মন জয় করতেই তাঁর এই সফর। বাংলাদেশের নেতৃত্ব তাঁদের আচার ব্যবহারে সন্দেহের কোনও বহিঃপ্রকাশ অবশ্যই দেখাননি। আজও প্রোটোকল বহির্ভূত ভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে বিদায় দিতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। দাঁড়িয়ে থেকেছেন যত ক্ষণ না গাড়ি ছাড়ে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দিুল হামিদ তাঁকে বলেছেন, পরের বার এসে হোটেলে নয়, তাঁর বাড়িতেই যেন আতিথ্য নেন মমতা। তিস্তা নিয়ে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরুর কথা বলে এসেছেন মমতা। তিনি হয়তো ভাবছেন, এই আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হলে তকাঁর দলের বিরুদ্ধে ওঠা জামাত যোগের অভিযোগ নিয়ে খোঁচাখুঁচি করা হয়তো বন্ধ করবে ঢাকা।

সেটা হবে কি না, তা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলতে পারে।

agni roy dhaka tour mamata dhaka
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy