আড়াই লক্ষ মানুষের জাতীয় সঙ্গীত। বুধবার ঢাকার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে। —নিজস্ব চিত্র।
মঞ্চের ওপরে সঞ্চালক। তাঁর সঙ্গে গলা মেলালেন দু’লক্ষ ৫৪ হাজার ৬২১ জন। সমবেত কণ্ঠে গান গাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন বাংলাদেশের মানুষ। আর এ গান রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।’ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সংস্কৃতি মন্ত্রকের এই অনুষ্ঠান ঘিরে বাংলাদেশ জুড়ে জাতীয়তাবাদের যে প্রবল সিডার-ঝড় বয়ে গেল, অনিবার্য ভাবে তাতে উঠে এল জামাতে ইসলামির মতো মৌলবাদী, স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি।
বুধবার দিনের আলো ফোটার পর থেকেই ঢাকার সব পথ মিলেছিল জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে। নামে মানুষের ঢল। গোটা অনুষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনায় ছিল সেনাবাহিনী। উপস্থিত ছিলেন গিনেস বুকের কর্মকর্তারাও। ৫০ জন মানুষপিছু একটি করে ব্লক তৈরি করা হয়। মোট ব্লকের সংখ্যা ৬ হাজারেরও বেশি। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে একটি করে টুপি ও ব্যাগ দেওয়া হয়। ব্যাগে ছিল জাতীয় পতাকা, গানের বাণী ও প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা লেখা কার্ড, জলের বোতল, ওষুধ ও টিফিন।
স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশাল মঞ্চে আগে থেকেই হাজির ছিলেন মন্ত্রিসভার অন্য সদস্য, সেনাকর্তা, বিশিষ্ট নাগরিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। পর পর দু’বার মহড়ার পরে বেলা ১১টায় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সকলকে ধন্যবাদ জানান হাসিনা। ১১টা ২০ মিনিটে শুরু হয় গান। মঞ্চ থেকে তা সঞ্চালন করেন সুজেয় শ্যাম।
ঘড়ি ধরে একই সময়ে গোটা দেশের প্রায় সব ছোট-বড় শহরে গঞ্জে ছাত্র-ছাত্রী, সংস্কৃতি কর্মী-সহ সব পেশার মানুষ জমায়েত হয়ে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলান। এমনকী বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক অফিসেও একই কর্মসূচি নেওয়া হয়। কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আবিদা ইসলামের নেতৃত্বে দফতরের ফটকের বাইরে জমায়েত হয়ে ‘আমার সোনার বাংলা’-য় গলা মেলান শহরে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা।
কালই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের গড়া একটি তদন্ত কমিটি স্বাধীনতা-বিরোধিতা, গণহত্যা ও পাক সেনাবাহিনীর সহযোগী ভূমিকা নেওয়ার জন্য জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে। আজ স্বাধীনতা দিবসে সেই দাবি ফের তুলেছেন বিভিন্ন মানুষ।
রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ মুসলিম নন বলে আজও জাকীয় সঙ্গীত গায় না জামাতে ইসলামি। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছেন, সরকার যে কোনও সময়ে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চলেছে। তার পরে আজ বিকেলেই জামাতের মহানগর কমিটির দফতরে হানা দিয়ে বোমা তৈরির প্রচুর মালমশলা উদ্ধার করেছে পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে ভোররাতে সাধারণ মানুষ শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময়ে বোমা ফেটে এক জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ জন।
এ দিন স্বাধীনতা দিবসের সকালে সাভারে জাতীয় স্মারকে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-সহ বিভিন্ন মন্ত্রীরা। ফুল দেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও। তার পরে তিনি তাঁর স্বামী জিয়াউর রহমানের স্মারকেও শ্রদ্ধা জানান। কিন্তু যে রেকর্ড ভাঙার অনুষ্ঠান ঘিরে বাংলাদেশে আজ জাতীয়তাবাদের প্লাবন বয়ে গেল, খালেদা বা তাঁর দলের নেতারা কি কেউ তাতে অংশ নিয়েছেন? নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরা কেউ কি মনে মনে হলেও জাতীয় সঙ্গীত গুনগুনিয়ে গেয়েছেন?
এর আগে বিএনপি সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়নি, কারণ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার নেতৃত্বে তা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সাধারণ মানুষ আজ জানতে চেয়েছেন, আজকের অনুষ্ঠানে তাঁরা ঠিক কী করেছেন।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নালিশ
সংবাদ সংস্থা • মস্কো, কিয়েভ
রুশ বিমানচালক এবং কর্মীদের বিমান থেকে নেমে বিশ্রাম নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি, বুধবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এমনই মারাত্মক অভিযোগ আনল রাশিয়া। যদিও ইউক্রেনের দাবি, আসল ঘটনাকে বিকৃত করে ওই রিপোর্ট তৈরি করেছে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই ক্রাইমিয়ায় রুশ সেনার আধিপত্যকে ঘিরে এখন মস্কো এবং কিয়েভের সম্পর্কে যে টানাপড়েন চলছে, তার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রুশ বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, রাশিয়ার সরকারি বিমান সংস্থার একটি বিমান নেমেছিল ইউক্রেনে। কিন্তু ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীরা ওই বিমানের চালক এবং কর্মীদের বিমান থেকে বিশ্রাম নেওয়ার অনুমতি দেননি। যা কি না আন্তর্জাতিক আইন ভাঙার সামিল। এর ফলে বিমানের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও ছেলেখেলা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। এই ঘটনার প্রতিবাদে ইউক্রেন দূতাবাসকে দু’টি চিঠিও দেওয়া হয়েছে রুশ মন্ত্রকের তরফে। যদিও ইউক্রেনের দাবি, রুশ বিমান চালক এবং কর্মীরাই ইউক্রেনের মাটিতে নামতে চান না বলে জানিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy