জাকিউর রহমান লকভি
মুম্বই হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জাকিউর রহমান লকভিকে বন্দি রাখার আদেশ আপাতত খারিজ করল ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। তার পরেই লকভির বিচার নিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা ফের পাকিস্তানকে জানিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
মুম্বই হামলার মামলায় লকভিকে সম্প্রতি ইসলামাবাদের সন্ত্রাস-দমন আদালতে জামিন পায় লকভি। ওই লস্কর নেতার মুক্তিতে কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সরকার। লকভির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ সঠিক ভাবে সাজানো হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। পেশোয়ারের স্কুলে জঙ্গি হামলার পরেও পাক সরকার সন্ত্রাস দমনে আন্তরিক নয় বলেও অভিযোগ করে কোনও কোনও শিবির। তার পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিশেষ আইনে (মেনটেন্যান্স অব পাবলিক অর্ডার অ্যাক্ট) লকভিকে ফের আটককরে সরকার।
কিন্তু তার পরেও লকভি মামলায় পাক সরকারের তৎপরতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছিল। কারণ, হাইকোর্টে শীতের ছুটি পড়ার আগে লকভির জামিনের বিরোধিতার আর্জি পেশ করতে পারেনি তারা। দু’দিন চেষ্টা করেও নিম্ন আদালতের লকভির জামিন সংক্রান্ত নির্দেশের কপি হাতে না পাওয়ায় অবাক হয়েছিলেন প্রধান সরকারি কৌঁসুলিও। প্রশাসনের একাংশ লকভি মামলা কৌশলে পিছিয়ে দিতে চাইছে বলে পাকিস্তানের কোনও কোনও শিবিরেই সন্দেহ দেখা দিয়েছিল।
বিশেষ আইনে আটক রাখার বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিল লকভি। শীতের ছুটির মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে আজ সেই আর্জির শুনানি হয়। সওয়ালে লকভির কৌঁসুলি রাজা রিজওয়ান আব্বাসি জানান, বিশেষ আইনে লকভিকে আটক করার নির্দেশের কোনও ভিত্তি নেই। সরকার উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তাকে আটক করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ সরকারি কৌঁসুলি হাজির ছিলেন না। আব্বাসির আর্জি মেনে লকভিকে আটক রাখার নির্দেশ আপাতত বাতিল করেছে হাইকোর্ট। পরের শুনানিতে এই বিষয়ে পাক সরকারের বক্তব্য শুনবে বেঞ্চ। জামিনের শর্ত মেনে ১০ লক্ষ পাকিস্তানি টাকার বন্ডও জমা দিয়েছে লকভি। ফলে, আদিয়ালা জেলের বাইরে নেতার জন্য এখন অপেক্ষায় লস্কর সমর্থকেরা।
তবে পাক প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ অফিসারের মতে, লকভি ছাড়া পেলে শরিফ সরকার বেকায়দায় পড়বে। তাই অন্য মামলায় তাকে ফের গ্রেফতার করা হতে পারে।
তবে শরিফ সরকারের কাজকর্মে আদৌ খুশি নয় নয়াদিল্লি। আজ দিল্লিতে পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিতকে ডেকে পাঠান বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, লকভিকে আন্তর্জাতিক শিবিরও জঙ্গি আখ্যা দিয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে পাক সরকার। সে কথাই বাসিতকে কড়া ভাষায় জানিয়েছেন বিদেশসচিব। ইসলামাবাদেও পাক বিদেশ মন্ত্রককে কড়া বার্তা দিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।
শরিফ সরকার কোন পথে হাঁটে, তা দেখতে আগ্রহী নয়াদিল্লিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy