কড়িধ্যা পঞ্চায়েতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির পাশেই ঝোলানো হল প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও ভারতমাতার ছবি। যদিও শুভেন্দুর দাবি, “ছবি বদলের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি পঞ্চায়েতের সদস্যদের ডাকে চা খেতে এসেছিলাম এবং তাঁদের সঙ্গে কিছু সাংগঠনিক আলোচনা সারলাম। আমরা কোনও প্রশাসনিক প্রধানের ছবি সরানোর পক্ষপাতী নই। স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরানোরও পক্ষপাতী নই।”
কড়িধ্যা পঞ্চায়েতে বিজেপির বোর্ড গঠনের পরেই ছবি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। তৃণমূলের সদস্যরা দাবি করেন, পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বিজেপি সদস্যরা। অন্য দিকে বিজেপি দাবি করেছিল, মুখ্যমন্ত্রীর ছবিকে কার্যালয়ের অন্যত্র রেখে প্রধান ও উপপ্রধানের আসনের মাথার উপর ভারতমাতার ছবি ঝোলাতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তৃণমূল সদস্যরা তাতে বাধা দেন।
এ নিয়ে গত ১১ অগস্ট ধুন্ধুমার বেধেছিল কড়িধ্যা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। একাধিকবার হাতাহাতির পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। ১৪ অগস্ট কড়িধ্যা এলাকায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে বড় মিছিল করে দাবি করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর ছবিকে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। তবে শেষ পর্যন্ত কোনও পরিবর্তন হয়নি। মাথার উপর মুখ্যমন্ত্রীর ছবিকে রেখেই পঞ্চায়েতের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করছিলেন প্রধান ও উপপ্রধান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আসার পরেই বদলে গেল ছবি। মুখ্যমন্ত্রীর ছবির পাশেই স্থান পেল প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও ভারতমাতার ছবি। তবে শুভেন্দু স্বীকার না করলেও পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সঞ্জীব বাগদি জানান, শুভেন্দুর উপস্থিতিতে এবং নির্দেশেই এই তিনটি ছবি লাগানো হয়েছে।
যদিও এ দিনের এই ছবি লাগানোকে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছে তৃণমূল। কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো প্রথম থেকেই বলেছিলাম মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রেখে, তারপর তাঁরা অন্য যে কারও ছবি লাগাতে পারেন। কিন্তু তখন বিজেপির কর্মীরা সে কথা মানেননি। তারা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরাতে উদ্যত হয়েছিলেন। এ বার সেই আমাদের কথাই মেনে নিতে হল।”
একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “এ দিন যে শুভেন্দু অধিকারী আসবেন তা আমাদের জানানো হয়নি। জানতে পারলে আমরাও কিছু প্রশ্ন করতে পারতাম। নির্বাচনের আগে বিজেপি বলেছিল পঞ্চায়েতে বিজেপি জয়ী হলে একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা মিলবে। সেই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা কোনও আশ্বাস দিলে খুশি হতাম।”
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বার্তা, “এ বার আমরাও বিধায়ক, সাংসদ, সভাধিপতি ও জাতীয় পতাকার ছবি ঝোলাবো। এই বিতর্ক আমরা শুরু করিনি। তবে বিজেপি যখন বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চাইছে, তখন আমরাও আমাদের মতো কর্মসূচি নেব।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)