Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
International

পদ্মা সেতু: বিশ্বব্যাঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ টিকল না কানাডার আদালতে

বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি পায়নি কানাডার আদালত। কানাডার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের তিন কর্মকর্তাকে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস করে দিয়েছে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের একটি আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৫:৩৫
Share: Save:

বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি পায়নি কানাডার আদালত। কানাডার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের তিন কর্মকর্তাকে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস করে দিয়েছে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের একটি আদালত। ওই তিনজনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পেতে বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন কর্তাকে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
বিশ্বব্যাঙ্ক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে তদন্ত শুরু করে। ২০১১ সালে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরেও যায় বিশ্বব্যাঙ্ক। বাংলাদেশ সরকারও বিশ্বব্যাঙ্ককে আর এ নিয়ে কোনও উপরোধ অনুরোধের রাস্তায় যায়নি। বরং তাদের বাদ দিয়েই কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
কানাডার আদালতে খালাস পাওয়া তিন ব্যক্তি হলেন এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের এনার্জি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি-কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার আলি ভুঁইয়া।
রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) করা ওই মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তবে দুই আসামি মহম্মদ ইসমাইল ও বাংলাদেশের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন চৌধুরীর নাম আগেই মামলার নথি থেকে বাদ দেয় পুলিশ।
খালাস পাওয়া তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তাঁদের টেলিফোন আলাপের রেকর্ড সংগ্রহ করে আরসিএমপি। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধেই ওই টেলিফোন কল রেকর্ড করা হয়। ওই টেলিফোন সংলাপে অভিযোগ প্রমাণ করার মতো কিছুই ছিল না বলে জানান বিচারক ইয়ান নর্ডহেইমার। অন্টারিওর ওই বিচারক বলেন, “সেখানে (টেলিফোন রেকর্ডে) গল্প-গুজব ও সাধারণ কথাবার্তা ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি।... তদন্তে যা পাওয়া গেছে তা গুজব বা অভিযোগের বিপরীতে অকাট্য প্রমাণ হিসেবে ধরা যায় না। যা পাওয়া গেছে তা একটা গুজবের সঙ্গে আরেকটা গুজব মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে।”

২০১০ সালে বিশ্বব্যাঙ্ক নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আরসিএমপিকে অনুরোধ জানায়।
এরই ভিত্তিতে আরসিএমপি, কানাডিয়ান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কিছু কর্মকর্তার টেলিফোন সংলাপ রেকর্ড করার অনুমতি নেয়। পরে তারা এসএনসি-লাভালিনের কার্যালয়ে তল্লাশিও চালায়। ২০১২ সালে মোহাম্মদ ইসমাইল ও রমেশ শাহকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে কেভিন ওয়ালেস ও বাংলাদেশি কানাডিয়ান ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়াকে এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন: ভারত ভ্রমণে আমেরিকানদের ছাপিয়ে এক নম্বরে বাংলাদেশিরা

বিশ্বব্যাঙ্ক সরে যাবার পর নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেয় বাংলাদেশ সরকার। ২০১৪ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করে সরকার। গত মার্চে নির্মাণকাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পদ্মা সেতুর নদীর মধ্যেকার কাজ করছে সিনো হাইড্রো করপোরেশন। চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি মূল সেতুর নির্মাণকাজ করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE