Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাবা আমার ভীষণ ভয় করছে! বাথরুমে লুকিয়ে শেষ ফোন তারিশির

শুক্রবার দুই বাংলাদেশি বন্ধুকে নিয়ে হোলি আর্টিসান বেকারির রেস্তোরাঁয় ডিনার করতে গিয়েছিলেন তারিশি। ইউনিভার্সিটির ছুটিতে আমেরিকা থেকে ঢাকা এসেছিলেন। পরিকল্পনা ছিল বাবা, মা, দাদাকে সঙ্গে নিয়ে কটা দিন কাটিয়ে যাবেন উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের পারিবারিক ভিটেতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৬ ১৪:১০
Share: Save:

শুক্রবার দুই বাংলাদেশি বন্ধুকে নিয়ে হোলি আর্টিসান বেকারির রেস্তোরাঁয় ডিনার করতে গিয়েছিলেন তারিশি। ইউনিভার্সিটির ছুটিতে আমেরিকা থেকে ঢাকা এসেছিলেন। পরিকল্পনা ছিল বাবা, মা, দাদাকে সঙ্গে নিয়ে কটা দিন কাটিয়ে যাবেন উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের পারিবারিক ভিটেতে। তার পরই তারিশির আবার ঢাকা হয়ে আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

বাবা সঞ্জীব জৈন বাংলাদেশে গত ২০ বছরে ধরে জামাকাপড়ের ব্যবসা করছেন। এ সুবাদে স্ত্রী তুলিকাকে নিয়ে ঢাকাতেই তাঁর বসবাস। তারিশির বড় ভাই সঞ্চিত ঘটনার এক দিন আগে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার কানাডা থেকে দিল্লিতে পৌঁছোন। কিন্তু বাবা-মা ও ভাইয়ের সঙ্গে তারিশির আর ফিরোজাবাদের ভিটেবাড়িতে যাওয়া হয়ে উঠল না। আর কোনও দিন যাওয়াও হবে না। শনিবার ভোরের দিকেই কোনও এক সময়ে তাকে গলা কেটে খুন করে সন্ত্রাসবাদীরা।

খুন হওয়ার আগে আরিশি শেষ ফোনটা করেছিলেন বাবাকে। শনিবার ভোর ছ’টার কিছুক্ষণ আগে। শুক্রবার রাত থেকে পণবন্দি হয়ে ছিলেন রেস্তোরাঁয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গেছে। রাতেই বেশ কয়েক জনকে মেরে ফেলেছে জঙ্গিরা। দম বন্ধ হয়ে থাকা আতঙ্কে গলা দিয়ে কয়েকটা কথাই বেরিয়েছিল, ‘‘বাবা, আমার ভীষণ ভয় করছে। বেঁচে ফিরতে পারবো কি না জানি না।। ওরা এখানকার প্রত্যেককে খুন করছে।’’ তারিশির কাকা, ফিরোজাবাদের বাসিন্দা রাকেশ জৈন জানিয়েছেন এই শেষ টেলিফোনের কথা। তারিশি বাবাকে বলেছিলেন, ‘‘বন্ধুদের নিয়ে আমি একটা টয়লেটে লুকিয়ে আছি। আমাদের সবাইকে একে একে খুন করা হবে বলে মনে হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: শেষ যাত্রায় তারিশি জৈন

এই ছিল শেষ যোগাযোগ। তার পর আর টেলিফোন লাইন পাওয়া যায়নি আরুশির। হয়ত তার পরপরই। বা কিছুক্ষণ পর। পৈশাচিক উল্লাসে সন্ত্রাসবাদীদের ধারালো অস্ত্রটা নেমে এসেছিল তাঁর উপর।

১৯ বছরের তারিশি জৈন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলেতে অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের মাধ্যমে ঢাকার একটি ব্যাঙ্কে ইন্টার্নশিপ করারও সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সব শেষ। এক দল হিংস্র মতান্ধের হাতে জীবনের সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেল এক নিমেষেই।

তারিশির শেষকৃত্য ভারতেই হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর কাকা রাকেশ জৈন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tarishi last phone call dhaka attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE