Advertisement
E-Paper

এত বেতন যাঁদের তাঁরাই করলেন চুরি? বিস্মিত বাংলাদেশ

সন্দেহটাই সত্যি। সর্ষেতেই ভূত। বাংলাদেশ রিজার্ভ চুরির মামলায় আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে চলেছেন বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ১০ কর্মকর্তা। তিন মাসেই চার্জশিট। তদন্তের সত্তর শতাংশ শেষ। বিস্ময় অপার। যাঁরা এত বেতন, সুযোগ সুবিধে পান- তাঁরা চুরি করতে গেলেন কেন! কীসের অভাব তাঁদের।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:০৩
বাংলাদেশ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফাইল চিত্র।

সন্দেহটাই সত্যি। সর্ষেতেই ভূত। বাংলাদেশ রিজার্ভ চুরির মামলায় আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে চলেছেন বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ১০ কর্মকর্তা। তিন মাসেই চার্জশিট। তদন্তের সত্তর শতাংশ শেষ। বিস্ময় অপার। যাঁরা এত বেতন, সুযোগ সুবিধে পান- তাঁরা চুরি করতে গেলেন কেন! কীসের অভাব তাঁদের। জাতীয় সম্পদ উড়িয়ে, ডলার ধরার ঝোঁকের মানেটাও দুর্বোধ্য। অভিযুক্তরা, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম, ফরেন রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা। এটা চুরি না নিতান্তই অদক্ষতার পরিণাম স্পষ্ট নয়। আইটি নিরাপত্তায় অদক্ষতা, গাফিলতি, অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিচারে উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার হবে।

সুইফট সার্ভারের তিন কর্মকর্তাও অপরাধে জড়িয়েছেন। তাঁদের সহায়তা ছাড়া হ্যাক করে ডলার পাচার সম্ভব ছিল না। ডলার যে সব সংস্থার হাতে পড়েছে তারাও চিহ্নিত। ফিলিপিন্সের ব্যাঙ্ক, আরসিবিসি, মনি লন্ডারিং প্রতিষ্ঠান ফিলরেম, ইস্টার্ন হাওয়াই লেইসার ক্যাসিনো, ব্লুমবেরি হোটেল, শ্রীলঙ্কার সালিকা ফাউন্ডেশন তদন্তের জালে। অর্থ চুরিতে ৭০টা পেমেন্ট অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। প্রথম অর্ডারটা যায় শ্রীলঙ্কায়। সেই অর্থ ফেরত এলেও তাদের দিয়ে শুরু কেন। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে টেলিকনফারেন্সে যোগাযোগ রয়েছে। তথ্য দেওয়া নেওয়া অব্যাহত। শ্রীলঙ্কাকে সামনে রেখে অপরাধীরা কী কাজ গুছোতে চেয়েছিল।

তদন্তে চার ভাগ। হ্যাকার, মানি লন্ডার, নেগোশিয়েটর ইনসাইডার। ইনসাইডার তারাই যারা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ভেতরে বসে হ্যাকারদের সার্ভারে ঢোকার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তারা ছাড়া সেটা কারা পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের আট তলার বিশেষ ঘর থেকে সুইফটের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। ব্যাঙ্কের আট কর্তার কাছে সুইফট আই ডি থাকে। তারাই শুধু সুইফট সার্ভার ব্যবহার করতে পারে। লোকাল সার্ভার, সুইফটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ব্যাঙ্ক থেকেই হ্যাকারদের জানান হয়েছিল। সুইফট স্মার্টকার্ড কোনও ভাবেই ভল্টের বাইরে রাখা যায় না। পেমেন্টের পরেও সেটা বাইরে ছিল। সুইফট সার্ভার, লোকাল ইন্টারনেটের সঙ্গে যারা যুক্ত করেছে তারাই আসামি। এক বছর আগে সব বেসরকারি ব্যাঙ্ক সুইফট নেটওয়ার্কের সঙ্গে রিয়েল টাইম গ্রোস সিস্টেম বা আর টিজিএস ব্যবহারের সুযোগ পায়। মাত্র তিনটি ব্যাঙ্ক সেটা কাজে লাগায় ৪ ফেব্রুয়ারি। সে দিনই চুরির ঘটনা ঘটে।

বিদেশি অপরাধী তালিকায় জাপানের সাসাকিম তাকাশি, জয়দেবা। আরসিবিসি’র জুপিটার শাখার মায়া সান্টোস দেগুইতো ফিলিপিনের ক্যাসিনো ইস্টার্ন হওয়াই লেইসার কোম্পানির মালিক কিম অং, ফিলরিমের প্রেসিডেন্ট স্নুইড বাতিস্তা, ফিলিপিন্সের বণিক উইলিয়াম গো সোসালিকা ফাউন্ডেশনের ছয় পরিচালক গামাজ সালিতা পেরেরা, সানজেবা টিসা বান্দারা, শিরানি ধার্মিকা ফানান্দো, ডন প্রসাদ রোহিতা, নিশান্থা নালাকা, ওয়ালাকুরুয়ারাচ্চি। যথার্থ প্রমাণ মেলাতেই চাজশিটে তাদের নাম থাকবে। তদন্তের শেষ পর্যায়ে অপরাধীর তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে। কেউ যাতে পার না পায়, সতর্ক বাংলাদেশের নিরাপত্তা দফতর। তাদের তদন্তের সাফল্যেই চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

আরও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগের আস্থা ফেরাতে মরিয়া ঢাকা

Bangladesh Reserve Bank
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy