শীর্ষেন্দুকে লেখা প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি তার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
পটুয়াখালির স্কুলছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাসকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছে তার শিক্ষক, সহপাঠী-সহ এলাকাবাসী। সোমবার পটুয়াখালি সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে শীর্ষেন্দুকে লেখা প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
শীর্ষেন্দুকে ঘিরে তার সহপাঠীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শীর্ষেন্দুর চিঠির জবাব দেওয়ায় আমরা খুব আনন্দিত। ওকে নিয়ে গর্বিত।’’ শীর্ষেন্দুর মা শীলা রানি সন্নামত বলেন, ‘‘বিশ্বাসই হয় না প্রধানমন্ত্রী আমার ছেলের চিঠির উত্তর দিয়েছেন! তিনি চিঠির জবাব দেওয়ায় আমরা ভীষণ খুশি।’’ পাশাপাশি চিঠি হস্তান্তরের ওই অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, শীর্ষেন্দুর পড়াশোনার দায়িত্ব এ বার থেকে সরকারের। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক পরিষদের পক্ষ থেকে শীর্ষেন্দুকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।
মায়ের সঙ্গে শীর্ষেন্দু।
জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকী বলেন, ‘‘শীর্ষেন্দু পায়রা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখে। প্রধানমন্ত্রী তার চিঠি পেয়ে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। এখন থেকে শীর্ষেন্দুর লেখাপড়ার খরচ জেলা প্রশাসন বহন করবে।’’ পৌর প্রশাসক ও জেলা আওয়ামি লিগের সম্পাদক খান মোশাররফ বলেন, ‘‘শিশুদের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই উদার। শীর্ষেন্দুর দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে তিনি আবারও মহানুভবতার পরিচয় দিলেন।’’
অন্য দিকে শীর্ষেন্দুর চিঠির জবাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে পটুয়াখালি জেলার মির্জাগঞ্জে পায়রা নদীর উপর সেতু তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিববহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ দিন মিরপুর দিয়াবাড়ি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় গাবতলী-শিরনিরটেক সড়কের উদ্বোধনের সময়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দুর চিঠি প্রধানমন্ত্রী সানন্দে গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেতু তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি। আগামী সপ্তাহে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি দল মির্জাগঞ্জে যাবে।’’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘পায়রা নদী প্রচণ্ড খরস্রোতা এবং প্রশস্ত নদী। এখানে দীর্ঘ লেনের সেতু তৈরি করতে হবে। এ কারণে সময় লাগবে। কাজ শুরু করেছি, আশা করি, দেড় বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।’’
সহপাঠীদের উচ্ছ্বাস।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘‘অনেক আগে থেকে এখানে একটা সেতুর দাবি ছিল। সেতুটা হলে পটুয়াখালি থেকে ঝালকাঠি সরাসরি যাওয়া যাবে, যেখানে এখন বরিশাল হয়ে যেতে হয়। খুলনা যেতে পাঁচ-ছয় ঘণ্টার পরিবর্তে মাত্র দু’ঘণ্টার মতো লাগবে। শীর্ষেন্দুর এ সাহসিকতা আসলেই প্রসংশনীয়। পায়রা নদী মির্জাগঞ্জের উপর দিয়ে গিয়েছে। মির্জাগঞ্জবাসীসহ গোটা পটুয়াখালিবাসী শীর্ষেন্দুর কাছে ঋণী।’’
খরস্রোতা পায়রা নদী পারাপারে জনসাধারণের দুর্ভোগ কমাতে গত ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে সেতু নির্মাণের দাবি জানায় পটুয়াখালি সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রী তার চিঠির জবাবে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ৮ সেপ্টেম্বর লেখা প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি ২০ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলে পৌঁছয়।
ছবি: সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন
আরও পড়ুন: দুর্গোৎসব এর নতুন ঠিকানা: আনন্দ উৎসব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy