Advertisement
E-Paper

মুদ্রা বাজার বন্ধ, বিপাকে বাংলাদেশ

ভারত সরকার হঠাৎ ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করায় জাল নোট ও অবৈধ ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। কিন্তু একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন বৈধ আমদানিকারী ও ভারতে যাওয়া কয়েক হাজার সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিক।

কুদ্দুস আফ্রাদ

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫১

ভারত সরকার হঠাৎ ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করায় জাল নোট ও অবৈধ ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। কিন্তু একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন বৈধ আমদানিকারী ও ভারতে যাওয়া কয়েক হাজার সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিক। এঁদের অনেকে বেড়াতে বা চিকিৎসার প্রয়োজনে বৈধ উপায়ে মুদ্রা পরিবর্তন করে ভারতে গিয়েছেন।

এ দেশের বহু মানি এক্সচেঞ্জারের কাছে এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাতে থাকা পুরনো নোটের বান্ডিল। ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহি, যশোর বা সাতক্ষীরার মানি এক্সচেঞ্জারদের হাতে রয়েছে অন্তত এক কোটি টাকা মূল্যের বাতিল ঘোষিত পুরনো নোট। হন্যে হয়ে তাঁরা বাংলাদেশের ৪ সরকারি ব্যাঙ্কের দোরে দোরে ঘুরছেন নতুন ভারতীয় নোটের সন্ধানে। কিন্তু ব্যাঙ্কের তরফ থেকে কোনও সদুত্তর দিতে না-পারায় আপাতত ভারতীয় মুদ্রা বিক্রি বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন নানা প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলা বাংলাদেশিরা। তাঁদের অনেককেই সফর বাতিল করতে হয়েছে। এর মধ্যেই একটি চক্র নামমাত্র দামে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট কিনে নিচ্ছে। ব্যাঙ্কগুলির নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, কেবল মাত্র সরকার নিয়ন্ত্রিত ব্যাঙ্ক ও বৈধ এজেন্সিগুলির হাতে থাকা পুরনো নোট কী ভাবে পরিবর্তন করা যায়, তা নিয়ে তাঁদের কর্তৃপক্ষ ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা
বলছেন। চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাতে এখন প্রায় ১১ লক্ষ টাকার পুরনো নোট রয়েছে। ঠিক হয়েছে, তিন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক জনতা, অগ্রণী ও রুপালি ব্যাঙ্ক তাদের সব পুরনো নোট জমা দেবে সোনালি ব্যাঙ্কের কাছে। সোনালি ব্যাঙ্ক তাদের শিলিগুড়ি ও কলকাতা শাখার মাধ্যমে ওই নোট পরিবর্তন করে নতুন
নোট নেবে।

বৈধ মানি এক্সচেঞ্জারদের কাছেও হিসেবের বাইরে বহু পুরনো নোট মজুত রয়েছে, যা তাদের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক পর্যটক ও ব্যবসায়ী অবৈধ ভাবে বহু পুরনো ভারতীয় নোট তাঁদের কাছে জমা রেখেছেন, যেগুলি পরিবর্তনের কোনও দায়িত্ব সরকারি ব্যাঙ্কগুলি নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। সাতক্ষীরার এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, কাজের প্রয়োজনেই পুরনো বড় নোটে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা তিনি জোগাড় করে রেখেছিলেন। এই টাকা ব্যবহার করতে না পারায় তাঁর আমদানি ব্যবসা বন্ধ হয়ে রহয়েছে। গত কয়েক দিন হরিদাসপুর চেকপোস্টে ব্যবসা ও লোক পারাপার তিন ভাগের এক ভাগে নেমে গিয়েছে।

সব চেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ভারতে চিকিৎসার জন্য যাওয়া বাংলাদেশিরা। অনেকে কলকাতা ছাড়া চেন্নাই, দিল্লি ও বেঙ্গালুরুতেও রয়েছেন। তাঁদের অনেকে চিকিৎসা বন্ধ করে ফি-দিন নতুন নোট জোগাড়ের লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। অনেকে হোটেলের ভাড়া বা থাকার খরচ সঙ্কুলানও করতেও হিমশিম খাচ্ছেন। বাংলাদেশি দূতাবাসগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। কারণ টাকা পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই। অনেকে কাগজপত্র ছাড়াই পুরনো নোটে ডলার ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁরা কার্যত পথে বসেছেন।

তবে নরেন্দ্র মোদীর এক ঘোষণায় কর্মহীন হয়ে গিয়েছে সাতক্ষীরা, রাজশাহি বা চাঁপাই নবাবগঞ্জের জাল টাকা পাচারকারিরা। একই হাল চোরা কারবারি ও অবৈধ আমদানিকারীরও।

Currency markets Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy