Advertisement
১১ মে ২০২৪
International

ঢাকায় বিস্ফোরক সমেত পাঁচ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড় এলাকা থেকে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-এর (জেএমবি) সদস্য সন্দেহে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে টেকনিক্যাল মোড় এলাকা থেকে ওই পাঁচ জনকে ধরা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ১৭:০৪
Share: Save:

রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড় এলাকা থেকে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-এর (জেএমবি) সদস্য সন্দেহে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে টেকনিক্যাল মোড় এলাকা থেকে ওই পাঁচ জনকে ধরা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, ওই দিন রাতে পুলিশের ‘কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল অভিযান চালায়। ধৃতেরা হল আতিকুর রহমান আতিক, আবদুল করিম বুলবুল, আবুল কালাম আজাদ, মহম্মদ মতিউর রহমান ও শাহিনুর রহমান হিমেল। কল্যাণপুরে ‘লোকবল ক্ষয়ের ঘাটতি মেটাতে’ তাদের উত্তরবঙ্গ থেকে রাজধানীতে আনা হয়েছে বলে জানান মাসুদুর। আটক পাঁচ জনের কাছ থেকে ৮৭৫ গ্রাম বিস্ফোরক ও ২৫টি ডিটোনেটর উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার দুপুরে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশি অভিযানের সময় পাঁচ জনকে ধরা গেলেও আরও চার জন পালিয়ে যায়। তাদের নাম নান্নু, সজীব, ইমরান এবং জিপসি বলে ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে। মনিরুল বলেন, “কল্যাণপুরের ঘটনায় ন’জন নিহত হওয়ার পর ঢাকায় জেএমবি-র লোকাভাব দেখা দেয়। তাই এদেরকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় আনা হয়। মূলত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তাদের ঢাকায় আনা হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা জানিয়েছে।” ধৃত পাঁচ জনের নাম নিখোঁজদের তালিকায় ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কয়েক মাস আগে তারা বাড়ি ছেড়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে। তাদের দেওয়া ঠিকানা পেয়ে বিষয়টি যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

২০০৫-এর ২১ ফেব্রুয়ারি সরকার জেএমবি-র কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে ওই বছর ১৭ অগস্ট ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা ফাটিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দেয় সংগঠনটি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টানা অভিযানে দলটি দুর্বল হয়ে গেলেও গত দু’বছরে তারা নতুন করে সংগঠিত হয়ে একের পর এক হত্যা ও হামলা চালাচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নতুন করে সংগঠিত এই জেএমবি-কেই ‘নিও জেএমবি’ বলছেন পুলিশকর্তারা। পয়লা জুলাই ঢাকার গুলশনে এবং ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার জন্যও ওই দলের সদস্যদের দায়ী করছেন তাঁরা। গুলশন ও শোলাকিয়ার ঘটনার পরে গত ২৬ জুলাই এই কল্যাণপুরেই এক বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হয়। তারাও জেএমবি-র সঙ্গে জড়িত ছিল বলে পুলিশের দাবি।

এদের ‘নিও জেএমবি’ কেন বলা হচ্ছে? সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল বলেন, “গত এক বছর ধরে আমরা বলে আসছি যে জেএমবি দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে। তারা মওলানা সাইদুর রহমানের জেএমবি-তে ঢুকলেও এখান থেকে একটি গ্রুপ বেরিয়ে যায়। ওই গ্রুপটিই ‘নিও জেএমবি’।” এই পুলিশকর্তা জানান, গুলশনের ঘটনার পর কল্যাণপুর ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের অন্তত দশটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। গুলশনের ঘটনার দিন জঙ্গিরা ভেতর থেকে বাইরে যে ছবি ও মেসেজ পাঠিয়েছিল, তা মারজান (সাংগঠনিক নাম) নামের এক তরুণ ছড়িয়ে দেয় বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তিনি বলেন, “সে ঢাকায় রয়েছে। সে শিক্ষিত ছেলে বলে মনে হয়েছে। তার একটি ছবি গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে।” যে দু’জনকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জঙ্গি কর্মকাণ্ডের হোতা বলে আসছে পুলিশ, সেই তামিম চৌধুরী ও মহম্মদ জিয়াউল হক ঢাকাতেই রয়েছে বলে ধারণা মনিরুলের। তিনি জানান, তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা করে পুরস্কারের ঘোষণাও হয়েছে। এদের মধ্যে বরখাস্ত মেজর সৈয়দ মহম্মদ জিয়াউল হককে ২০১২ সালে সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টার পরিকল্পনাকারী বলছে পুলিশ। তিনি উগ্রপন্থী সংগঠন আনসার আল ইসলামের হয়ে কাজ করছেন বলে এর আগে মনিরুল জানিয়েছিলেন। আর এক জন হল কানাডীয় পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি নাগরিক তামিম চৌধুরী। এদের দু’জনকে সাম্প্রতিক জঙ্গি কর্মকাণ্ড ও হামলার হোতা হিসেবে চিহ্নিত করে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন- সন্ত্রাসীদের অপচেষ্টা জলে, আসেমের সব দেশ বাংলাদেশের পাশে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dhaka JMB Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE