Advertisement
২৪ মে ২০২৪
Pakistan

ফাঁসি নিয়ে ঢাকার পাশেই, অপপ্রচার উড়িয়ে জানাল নয়াদিল্লি

বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে, বিচারের রায়ে যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড কার্যকর হচ্ছে, তখনও সেই বিচারের বিরোধিতা করেই চলেছে পাকিস্তান। আর তার সঙ্গে বন্ধু হয়ে গলা মেলাচ্ছে তুরষ্কও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:০০
Share: Save:

বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে, বিচারের রায়ে যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড কার্যকর হচ্ছে, তখনও সেই বিচারের বিরোধিতা করেই চলেছে পাকিস্তান। আর তার সঙ্গে বন্ধু হয়ে গলা মেলাচ্ছে তুরষ্কও। এই সময়েই একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের প্রতি ফের জোরালো সমর্থন জানাল ভারত। শুক্রবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেছেন, “ভারত সরকার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।”

জামাত নেতা মির কাশেম আলির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে পাকিস্তান ও তুরষ্কের মন্তব্য মেনে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকার। সোচ্চার হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলিও।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বিচারের রায় বিষয়ে রেডিও পাকিস্তান প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল তাদের বিরোধিতামূলক বক্তব্য। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচারকে নানা বিশেষণে ভূষিত করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের জন্য তারা সংসদে শোকও জানিয়েছে। পাকিস্তানের জামাত, ইমরান খানের দল তেহেরিক-ই-ইনসাফ সোচ্চার হয়েছে বাংলাদেশের প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধীদের শোকে।

ছেড়ে দেয়নি বাংলাদেশও। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তান যে যুক্তি দিচ্ছে তা স্পষ্টতই মিথ্যাচার। ১৯৭৪ সালের চুক্তি ছিল ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর দেশে প্রত্যর্পন বিষয়ে। বাংলাদেশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যাবে না, এমন কোনও কথা সেখানে নেই। এমনকী পাকিস্তান এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ওয়াদা দিতেও না রেখে তাদের অসৎ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। অন্য দিকে ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী সেনা কর্মকর্তার বিচারের বিষয়টা এখন ক্রমে গণদাবীতে পরিণত হচ্ছে। এ নিয়ে নিয়মিত সভা সমাবেশ প্রতিবাদ চলছে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভয়াবহ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়া পাকিস্তানের দোসরদের ও সেনাবাহিনীর অপরাধ নিয়ে একটি কথাও না বলে পাকিস্তান সেই অপরাধী ও তাদের অপরাধকেই সমর্থন করছে এমনটিই দাবি ঢাকার সিভিল সোসাইটির।

বাংলাদেশ পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো ১৯৭১ সালের গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততাই প্রমাণ করছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরুর পর থেকেই দেশি বিদেশী বিভিন্ন মহল থেকে নানারকম বাধা এবং বৈদেশিক যড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিচারকার্য চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। অনেক আন্তর্জাতিক চাপ, লবিস্টদের ধান্দা, টাকার খেলা হাসিনা সরকার শক্ত ভাবে রুখে চলেছে।

এ বার একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের প্রতি ফের জোরালো সমর্থন জানিয়েছে ভারত। শুক্রবার বিকাশ স্বরূপ বলেছেন, “ভারত সরকার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) আওতায় বিচার পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল বিচারকার্য নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে এবং পূর্ণ আস্থা আছে। এটা বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। যেখানে হস্তক্ষেপ করার অধিকার অন্য কোনও দেশের নেই।”

বিকাশ স্বরূপ আরও বলেছেন, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধাপরাধ করেছিল, তাদের বিচার এতদিন ধরে বকেয়া ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে ট্রাইবুনাল গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

সম্প্রতি পশ্চিমের কিছু গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের এ বিচারকে সম্ভবত ভারত সমর্থন করছে না। বিকাশ স্বরূপ এটিকে উদ্দেশ্যমূলক প্রচার বলে অভিহিত করেন। তিনি জানান, এর আগেও যতগুলো দণ্ড কার্যকর হয়েছে, ভারত তাতে সমর্থন জানিয়েছে। সর্বশেষটির ক্ষেত্রেও (মীর কাসেমের ফাঁসি) এর ব্যতিক্রম হয়নি। সামনেও থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE