E-Paper

ভ্রমণে গিয়ে দুর্ঘটনা কাড়ল জীবন

এই ঘটনায় গোটা লালগোলা জুড়েই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মৃত দুজনের এক জন সেলিম আনসারি ছিলেন জনপ্রিয় ইংরেজি শিক্ষক। কয়েকশো ছাত্রছাত্রীকে টিউশন দিতেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ১০:৪১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বাইকে ভ্রমণের নেশাই শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিল জীবন। রবিবার লালগোলা থেকে মোটরবাইক চালিয়ে বেরিয়েছিলেন সেলিম আনসারি (৩৩)। বাইকের সঙ্গী ছিলেন প্রতিবেশী যুবক দেবজিৎ ঘোষ (২১)। গন্তব্য ছিল উত্তরাখণ্ড। বৃহস্পতিবার দু’জনেরই দেহ ফিরল লালগোলায়। মঙ্গলবার বিকেলে উত্তরপ্রদেশের অমেঠির কাছে জাতীয় সড়কের উপর থাকা একটি ডিভাইডারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারেন তাঁরা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁদের পরিজনেরা বুধবার পৌঁছন উত্তরপ্রদেশে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে লালগোলায় এসে পৌঁছয় দুজনেরই দেহ।

এই ঘটনায় গোটা লালগোলা জুড়েই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মৃত দুজনের এক জন সেলিম আনসারি ছিলেন জনপ্রিয় ইংরেজি শিক্ষক। কয়েকশো ছাত্রছাত্রীকে টিউশন দিতেন তিনি। প্রতিবেশীরা বলেন, অত্যন্ত প্রাণবন্ত ছেলে ছিলেন তিনি। মাঝে মধ্যেই বেরিয়ে মোটরবাইক নিয়ে ভিন্ রাজ্যে ভ্রমণের নেশা ছিল তাঁর। দেবজিৎ লালবাগ কলেজের ভূগোল অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এ বারই প্রথমবার মোটরবাইক ভ্রমণে সঙ্গী হয়েছিলেন তিনি। বাড়িতে বাইকে ভিন্ রাজ্য ভ্রমণে বাধা দেবে বলে দেবজিৎ জানিয়ে যান বাসে বন্ধুরা মিলে যাচ্ছেন।

দেবজিতের শিক্ষক ছিলেন এলাকারই বাসিন্দা মহম্মদ মিজানুর খান। লালগোলার আই সি আর হাইমাদ্রাসার শিক্ষক। মিজানুর জানান, ‘‘দুজনেই শুধু জনপ্রিয় নয়, ভাল ছেলে হিসেবে পরিচিত লালগোলায়। সেলিমের দাদা ছিলেন আমার সহপাঠী।’’

তিনি বলেন, “মোটরবাইক নিয়ে এর আগে দার্জিলিং, সিকিম সহ বহু জায়গায় গিয়েছে সেলিম। ভ্রমণের সময় মোটরবাইকে দূরে কোথাও গেলে নিরাপত্তার যাবতীয় সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যেত সে। এ বারও সেই ভাবেই গিয়েছিল।রাস্তায় খুব দ্রুত গতিতেই ছিল বাইক। সেলিমই চালাচ্ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে বাইকটি কোনওভাবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই মোটরবাইক নিয়ে লালগোলা ও আশপাশ থেকে এ ভাবেই ভ্রমণে যাচ্ছেন। প্রচন্ড গতিতে চলছে মোটরবাইক। ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটছে।”

লালগোলা লস্করপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “মোটরবাইক নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার এই প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। আমাদের এক শিক্ষকও মোটরবাইক নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন লাদাখে। ৫টি মোটরবাইক নিয়ে গিয়েছিলেন, মোট ১০ জনে গিয়েছিলেন তারা। আসলে আমারও এ নেশা ছিল একদিন। মোটরবাইক নিয়ে চলে যেতাম দূরে। দু’দু’বার হাত ভাঙার পরে যাতায়াত বন্ধ করেছি। আগে এত গতির মোটরবাইক তো ছিল না।এখন সে সব মোটরবাইক চলে এসেছে সাধারণ মানুষের হাতে। বাইকাররা যদি গতি নিয়ন্ত্রণে রেখে চলে তাহলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। তাতে হয়ত একটু সময় বেশি লাগবে। কিন্তু নিরাপদ থাকা যাবে। তা মানা হচ্ছে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jangipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy