Advertisement
E-Paper

সুদ বাড়াল না মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক

সুদ বাড়ানো থেকে পিছিয়ে এল সাবধানী আমেরিকা। বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতা, বিশেষ করে চিনের মন্দা নিয়ে উদ্বেগের জেরে ঋণের খরচ বাড়ালেন না মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারপার্সন জেনেট ইয়েলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:০৬
জেনেট ইয়েলেন

জেনেট ইয়েলেন

সুদ বাড়ানো থেকে পিছিয়ে এল সাবধানী আমেরিকা।

বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতা, বিশেষ করে চিনের মন্দা নিয়ে উদ্বেগের জেরে ঋণের খরচ বাড়ালেন না মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারপার্সন জেনেট ইয়েলেন। মার্কিন আর্থিক বৃদ্ধি কমার পূর্বাভাসও আগেই দিয়েছে ফেড। কর্মসংস্থান এখনও আশা অনুযায়ী বাড়েনি। চাহিদা কমায় মূল্যহ্রাসের জেরে জেরবার মার্কিন অর্থনীতি। শীর্ষ ব্যাঙ্কের লক্ষ্য তা ২ শতাংশে নিয়ে যাওয়া। শিল্পে প্রাণ ফেরাতে তাই সুদ বাড়ানোর ‘ঝুঁকি’ এখনই নিলেন না ইয়েলেন।

মন্দার পরে ২০০৯ সাল থেকেই সুদ প্রায় শূন্যের কাছাকাছি বেঁধে রেখেছে আমেরিকা। অর্থনীতির হাল কিছুটা ফেরায় এ বার ফেড রিজার্ভ সুদ বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারে বলে মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় গভীর রাতে ফেডের দু’দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সুদের হার আপাতত একই জায়গায় ধরে রাখার কথা জানিয়ে দেন ইয়েলেন। তবে অক্টোবরের বৈঠকে সুদ বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

এর আগে অবশ্য মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ালেও ভারতের দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে বৃহস্পতিবার দিনভর লগ্নিকারী ও শিল্পমহলকে ভরসা দেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। শঙ্কা ছিল, ফেড সুদ বাড়ালে ভারত থেকে বিদেশি লগ্নি মুখ ফিরিয়ে নেবে। শেয়ার বাজারে ধস নামবে। টাকার দাম হু হু করে কমতে শুরু করবে। ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তের আগে জেটলির যুক্তি ছিল: ভারতের অর্থনীতি ফেডের যে-কোনও সিদ্ধান্তের মোকাবিলায় তৈরি। বিদেশি লগ্নি ধরে রাখতে আরও আর্থিক সংস্কার, শিল্পের জন্য অনুকূল পরিবেশের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে তাঁর আশ্বাস ছিল, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কর সংক্রান্ত যে-সব বিবাদ রয়েছে, সেগুলিও মিটিয়ে ফেলতে প্রশাসনিক ও বিচারবিভাগীয় স্তরে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে।

মনমোহন জমানার কঠোর কর নীতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ত্রাসের কারণ হয়ে উঠেছিল। নরেন্দ্র মোদীর জমানাতেও ম্যাট নিয়ে একই ভাবে লগ্নিকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সেই বিভ্রান্তি কাটাতে কিছুদিন আগেই জেটলি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ১ এপ্রিলের আগে লগ্নির উপর ম্যাট বসবে না। খুব শীঘ্রই আয়কর আইনে সংশোধন করা হবে। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে শিল্পপতি ও অর্থনীতিবিদদের একটি সম্মেলনে জেটলি বলেন, ‘‘অধিকাংশ কর সংক্রান্ত বিবাদ মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আরও কিছুর নিষ্পত্তি হবে।’’

কংগ্রেসের বিরোধিতায় জিএসটি বিল আটকে যাওয়ায় আগামী বছরের ১ এপ্রিল থেকে পণ্য-পরিষেবা কর চালু হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই জেটলি আশ্বাস দিয়েছেন, জিএসটি আটকে গেলেও দেউলিয়া বিধি, বড় ব্যবসায়িক চুক্তিতে তাড়াতাড়ি বিবাদের মীমাংসা, দ্রুত সালিশি প্রক্রিয়া চালুর মতো সংস্কারের কাজ চলছে। জেটলি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে যখন প্রতিদিন অস্থিরতা চলছে, তখন আমরা অর্থনীতির ভিত আরও মজবুত করার চেষ্টা করছি, যাতে যে-কোনও পরিবর্তনের ধাক্কা সামলানোর ক্ষমতা বাড়ে।’’

দু’বছর আগে ফেডারেল রিজার্ভের তদানীন্তন চেয়ারম্যান বেন বার্নানকে প্রথম সুদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তাতেই এ দেশের অর্থনীতিতে যে-অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, জেটলি অ্যান্ড কোং তার পুনরাবৃত্তি চাইছেন না। তাঁরা আগে থেকেই জানতেন, এই দফায় না-বাড়ালেও অবশেষে আমেরিকা সুদ বাড়াবেই। তাই জেটলির পাশাপাশি অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্‌হাও বলেছেন, শেয়ার বাজারের অস্থিরতা কমাতে তাঁরা আরও বেশি পরিমাণে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের তহবিল শেয়ার বাজারে লগ্নির অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছেন। এখন এর মাত্র ৫ শতাংশই শেয়ার বাজারে লগ্নি হয়েছে, যা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চান তাঁরা। দীর্ঘ মেয়াদে শেয়ার বাজারে লগ্নি এলে অস্থিরতাও কমবে।

মোদী সরকারের সবথেকে বড় চিন্তা অবশ্যই নতুন লগ্নিতে টান। বিশেষত কারখানায়। কিন্তু শিল্পমহল এখনও ঋণের উপর সুদ কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে। অর্থ মন্ত্রকও চাইছে, সেপ্টেম্বরের শেষে যখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণনীতির পর্যালোচনায় বসবে, তখন যেন সুদের হার কমানো হয়।

recession cautious federal reserve chinsese recession abp business news interest rate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy