অবাধ বাণিজ্য চুক্তি পাকা করে অনেক কিছুর ক্ষেত্রেই পরস্পরের জন্য বাজার খুলে দিয়েছে ভারত এবং ব্রিটেন। তাতে লাভ দেখতে পেয়ে খুশি শিল্পমহলও। তবে এরই মধ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা জিটিআরআই মনে করিয়েছে ব্রিটেনে ২০২৭ সাল থেকে চালু হতে চলা ‘কার্বন কর’-এর কথা। শুক্রবার তারা বলেছে, ভারত ব্রিটেনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে কার্বন কর থেকে ছাড় আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আগামী দিনে যে সব পণ্য উৎপাদনে কার্বন নিঃসরণ বেশি হয়, সেগুলির রফতানি বিরাট ধাক্কা খেতে পারে। তার থেকে দেশের শিল্পকে বাঁচানোর ঢালও তৈরি রাখা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে দেশভর চর্চা শুরু হওয়ার পরে সরকারি সূত্র অবশ্য দাবি করে, প্রস্তাবিত কার্বন কর বাণিজ্য চুক্তির আওতায় না থাকলেও, ভারত নিজের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে। আগামী দিনে এই ধরনের কর যাতে দেশের রফতানির উপরে প্রভাব না ফেলে, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করার অধিকার থাকবে নয়াদিল্লির।
২০২৩-এর ডিসেম্বরে ব্রিটিশ সরকার ‘কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজ়ম’ (সিবিএএম) ২০২৭ সাল থেকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে লোহা, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, সার, হাইড্রোজেন, সেরামিক্স, কাঁচ এবং সিমেন্টের মতো ক্ষেত্রের রফতানিতে এই কর বসাবে তারা। যা হতে পারে ১৪-২৪ শতাংশ। ভারত বহু দিন আগেই এই করকে বাণিজ্যে বাধা তকমা দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। জিটিআরআই-এর দাবি, এর থেকে ছাড় আদায়ে করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ নষ্ট করল ভারত। ভারতের বাজারে ব্রিটেনের পণ্য শুল্ক ছাড়া ঢোকার সুবিধা পেলেও ২০২৭-এর জানুয়ারি থেকে এ দেশের ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, সার, সিমেন্ট ইত্যাদি সে দেশে রফতানি হলেই কার্বন কর গুনতে হবে। এটা গুরুতর অসঙ্গতি।
নয়াদিল্লির সূত্রের দাবি, যেহেতু ব্রিটেন এই কর নিয়ে এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি, তাই বিষয়টি চুক্তির মধ্যে নেই। তবে এটি বাস্তবায়িত হলে এবং তাতে চুক্তির আওতায় থাকা কোনও সুবিধা থেকে ভারত বঞ্চিত হলে তাতে ভারসাম্য আনার স্বাধীনতা থাকবে নয়াদিল্লির। এই সমঝোতা মৌখিক ভাবেই হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। সে ক্ষেত্রে ভারত পাল্টা পদক্ষেপও করতে পারবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)