উৎপাদন বেড়েছে। ফলে কয়লা জোগানে কোনও সমস্যা তো নেই-ই, উল্টে চলতি অর্থবর্ষে (২০১৫-’১৬) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি জ্বালানি দিতে পেরেছে কোল ইন্ডিয়া। সংস্থা সূত্রে খবর, এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারি— এই ১১ মাসে দেশের বিদ্যুৎ শিল্পে তারা কয়লার জোগান বাড়িয়েছে ৬.৪ শতাংশ হারে। এই সময়ে দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে সংস্থাটি ৩৭ কোটি টনেরও বেশি কয়লা দিয়েছে।
এ বছর কোল ইন্ডিয়ার উৎপাদন বৃদ্ধির গড় হার ৯.২ শতাংশ। গত পাঁচ বছর ধরে যা তিন শতাংশের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করেছে। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের তুলনায় এ বার উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি হারে। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লা জোগানে এখন আর কোনও সমস্যা হচ্ছে না। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশেরও দাবি, যেখানে বছর দেড়েক আগে প্রায়শই বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থা কোল ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে চাহিদা মতো কয়লা না-দেওয়ার অভিযোগ তুলত, সেখানে তাদের ঘরেই এখন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি মজুত হয়ে গিয়েছে।
আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে সারা দেশের প্রতিটি প্রান্তে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। যে কারণে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজ যেমন দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি ঋণ ভারে জর্জরিত বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকেও আর্থিক ভাবে চাঙ্গা করে তুলতে কোমর বেঁধেছেন তাঁরা। আর সেই সূত্র ধরেই কোল ইন্ডিয়ার কয়লা উৎপাদন বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। ২০২০ সালের মধ্যে কোল ইন্ডিয়ার কয়লা উৎপাদন ১০০ কোটি টনে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে সরকার। কারণ কয়লার জোগান পর্যাপ্ত না-হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টনে সমস্যা দেখা দেবে। কোল ইন্ডিয়া সেই লক্ষ্য পূরণের পথেই এগিয়ে চলেছে বলে সংস্থা সূত্রের দাবি।
মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংস্থাটি ৫০ কোটি টনের মাইলফলক ছুঁয়েছে। তারা বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে এই খবর জানিয়ে বলেছে, ১৩ মার্চ তাদের সবক’টি সহযোগী সংস্থা মিলিয়ে যে কয়লা উৎপাদন হয়েছে, তা প্রায় ৯.১ শতাংশ বেশি। সংস্থার দাবি, উৎপাদিত কয়লা বিক্রি হতেও সময় লাগছে না। কোল ইন্ডিয়া কর্তাদের একাংশের মতে, উৎপাদনের কাজ যে ভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে আগামী চার বছরের মধ্যে ১০০ কোটি টনের অঙ্কে তাদের পৌঁছতে সময় লাগবে না।
এ দিকে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলি যাতে তাদের চাহিদা মতো কয়লা পেতে পারে সে জন্য নতুন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করতে চলেছে কয়লা মন্ত্রক। পোর্টালে গিয়ে সংস্থাগুলি নিজেরাই নিজেদের চাহিদার কথা জানিয়ে দিতে পারবে। সম্প্রতি রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এই কথা জানিয়েছেন কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তিনি বলেন, ক্রেতা সংগঠনগুলির পাশাপাশি তাঁরা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গয়াল জানান, দামের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫% পরিষেবা কর দিয়ে সংস্থাগুলিকে কয়লা কিনতে হবে। তাঁর দাবি, কয়লা কেনার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই সংস্থাগুলি ঠিকঠাক নথিপত্র জমা দিতে পারে না। তাই পোর্টালটিতে তথ্য জানানোর ব্যাপারে অনেক কিছু সরল করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ক্ষুদ্র-মাঝারি সংস্থাগুলির এখন বছরে ৪,২০০ টনের কিছু কম কয়লা লাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy