তার উপরে পরিস্থিতি সামলানোর মতো দক্ষ কর্মী, বিদ্যুৎ সরঞ্জামের অভাবে বণ্টন সংস্থা এবং বেসরকারি সিইএসসি, দুই সংস্থাই কার্যত নাকানি-চোবানি খাচ্ছে বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন, করোনার জেরে বহু কর্মী ফিরে গিয়েছেন। আবার সংস্থাগুলিতে কম কর্মী নিয়ে কাজ চলছে। ফলে সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে তার মধ্যেও বিভিন্ন ভাবে লোকবল বাড়িয়ে কলকাতা-সহ সারা বাংলায় জোর কদমে যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মানুষকে বলেছেন অন্তত কিছু দিন ধৈর্য ধরার কথা। কলকাতায় ২২৫টি ও সারা বাংলায় ১০০০টি দল পুরোদমে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
শুধু বণ্টন সংস্থারই নয়, সিইএসসি বহু এলাকাতেও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে মঙ্গল-বুধবার হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, শনিবারও যে ভাবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে ও তার ছিঁড়ে রয়েছে, তাতে দক্ষ বিদ্যুৎ কর্মীদের দিয়েও সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নাজেহাল অবস্থা সংস্থার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিইএসসি-কে ১৫০টি জেনারেটর ভাড়া করতে বলা হয়েছে। যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, সেগুলি কাজে লাগিয়ে কিছুটা করে বিদ্যুৎ, কিছুটা জল দেওয়া যাবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন জায়গা থেকে জেনারেটর জোগাড়ের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এই পরিস্থিতিতে বণ্টন কর্তৃপক্ষ এখন প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার আনার জন্য কথা শুরু করেছে। অন্য দিকে সিইএসসি রাজ্য, প্রয়োজনে রাজ্যের বাইরে থেকেও লোক নিয়ে আসতে কোমর বেঁধে নেমেছে। রাজ্যও সিইএসসিকে তাদের কাজের জন্য লোক দিয়ে সাহায্য করছে।
এ দিন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিদ্যুতের ন্যূনতম পরিষেবাটুকু চালু করতে কমপক্ষে দিন সাতেক সময় লেগে যাবে। তার পরেই ধাপে ধাপে পরিস্থিতি সর্বত্র স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলবে।’’ তিনি জানান, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে মানুষের সহযোগিতা নিয়েই লাইন সারানোর কাজ দ্রুত করতে হবে, করাও হচ্ছে।
দুই সংস্থা পুরোদমে কাজ শুরু করলেও, গ্রাহকদের অনেকেরই অভিযোগ, আমপানের তীব্রতা নিয়ে সাত দিন আগে থেকে পূর্বাভাস পেয়েও সিইএসসি কেন লোকবল বাড়ানো থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। শুধু তা-ই নয়, বুধবারের ঝড়ের পর থেকে সিইএসসিতে বারবার অভিযোগ জানানোর পরেও কাজ হয়নি। গাছ সরানো হলেও বিদ্যুৎ আসেনি বলে অভিযোগ।
সিইএসসি যদিও জানিয়েছে, লকডাউনে চলে যাওয়া কর্মীদের ফিরিয়ে আনার কথা শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দিয়েছেন, সেই মতোই কাজ করার চেষ্টা চলছে। সংস্থার এক কর্তা জানান, জেনারেটর ভাড়া করে বিভিন্ন বড় আবাসন, সোসাইটিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।