পয়লা এপ্রিল থেকে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু হওয়া নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন বসে গিয়েছিল আগেই। এ বার তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল জুন-জুলাইয়ে কার্যকর করার ক্ষেত্রেও। অবস্থা এমনই যে অ-বিজেপি রাজ্যগুলি মনে করছে সেপ্টেম্বরের আগে কোনও ভাবেই ওই কর বসানো সম্ভব নয়। যদিও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে শুধু বলেছেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি। আমরা সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়চ্ছি।’’
একই সঙ্গে জেটলির দাবি, নোট নাকচের জেরে রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েনি। বরং চলতি অর্থবর্ষের শেষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ, দুই ক্ষেত্রে কর আদায়ই বাজেট প্রস্তাবকে ছাড়িয়ে যাবে।
প্রথমে সরকারের লক্ষ্য ছিল এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু করা। কিন্তু তা পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরির কারণ এখনও কিছু বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির একমত হতে না-পারা। এই ধারণা আরও পোক্ত হয়েছে বুধবার। এ দিন শেষ হওয়া জিএসটি পরিষদের দু’দিনের বৈঠকেও কর চালুর পথে কিছু কাঁটা রয়েই গিয়েছে।
ঐকমত্য এখনও অধরা মূলত দু’টি জায়গায়। এক, করদাতাদের উপর নিয়ন্ত্রণ। দুই, রাজ্যের স্থলভূমি লাগোয়া সামুদ্রিক অঞ্চলে লেনদেন হওয়া পণ্যে কর বসানোর অধিকার হাতে রাখা। যে- কারণে ১৬ জানুয়ারি ফের বৈঠকে বসে পরিষদ এই সমস্ত বিষয় চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন জেটলি।
কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকের দাবি, সবক’টি জট না-ছাড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে এপ্রিলে কর চালু করা ঠিক হবে না। যার মধ্যে রয়েছে রাজ্যগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা জোগাড়ের পথ, আন্তঃ-রাজ্য জিএসটি কার্যকর করায় রাজ্যের ভূমিকা নির্ণয় ইত্যাদি। তাই তিনি-সহ অনেকেই বলছেন, জুন বা জুলাইয়ে তা চালু নিয়েও তাঁরা আর তেমন আশাবাদী নন। কারণ, একেই এই কর নতুন। তার উপর জটিলও। ফলে পুরোপুরি তৈরি হয়েই এগোনো ভাল। সে ক্ষেত্রে এটি সেপ্টেম্বরে চালু হতে পারে।
দ্রুত জিএসটি চালুর লক্ষ্যে রাজ্যগুলির বিভিন্ন প্রস্তাব খতিয়ে দেখার কথা অর্থমন্ত্রী বলেছেন ঠিকই। কিন্তু এই কর বসার পরে সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতির সঙ্গে নোট নাকচের তেমন যোগ নেই বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, প্রথমত, ক্ষতিপূরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলির সঙ্গে একমত হওয়া গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, যে সব রাজ্য দক্ষতার সঙ্গে সরকার চালিয়েছে, তাদের রাজস্ব বাড়ছে।
জেটলির কাছে প্রশ্ন ছিল, পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেছেন, নোট বাতিলের জেরে রাজ্যের রাজস্ব আদায় অনেকখানি কমেছে। সেই প্রসঙ্গে সরকার চালানোয় দক্ষতার প্রসঙ্গ তুলে আনেন জেটলি। বলেন, ভুগবে তারাই, যারা প্রশাসন ঠিক ভাবে চালাতে ব্যর্থ। নোট বাতিলের আবহে তৈরি হওয়া বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে অনেকেই। উল্লেখ্য, নোট বাতিলের পর থেকেই অমিতবাবু বলছেন, জিএসটি এলে এমনিতেই প্রথম দু’বছর রাজস্ব আদায় কমবে। তার উপর নোট বাতিলের জেরে তা আরও কমছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy