দু’দশক আগে যাত্রী গাড়ির বাজারে পা রেখেছিল তারা। কিন্তু তেমন সাড়া পায়নি। এ বার পায়ের তলার সেই মাটি পোক্ত করায় মন দিল টাটা মোটরস। যেখানে তাদের নতুন অস্ত্র স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল (এসইউভি) হেক্সা। লক্ষ্য, চার বছরে দেশে যাত্রী গাড়ি বাজারের প্রথম তিনে জায়গা পাওয়া।
১৯৯৮ সালে ইন্ডিকা। চার বছর পরে ইন্ডিগো। এ দু’টির বিক্রিবাটা ভাল চললেও ব্যক্তিগত গাড়ির বাজারে কুলীন হয়ে ওঠার কপাল খোলেনি এক সময়ে শুধুমাত্র এই বাণিজ্যিক গাড়ি প্রস্তুতকারকের। যার কারণ, গাড়ির মান ও কেনার পরে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে ক্রেতাদের একাংশের ক্ষোভ। আশা পূরণ করেনি আমজনতার গাড়ির তকমা এঁটে বাজারে আসা ন্যানো। তার পরেও ২০১৪ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলি যখন একের পর এক নতুন গাড়ি এনে নজর টেনেছে, টাটাদের ভাঁড়ার থেকেছে খালি। এই পরিস্থিতিতেই এপ্রিলে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রথম হাতিয়ার টিয়াগো নিয়ে হাজির হয় তারা। আর এ বার হেক্সা।
তুমুল প্রতিযোগিতার বাজারে দীর্ঘ দিন ঝুলিতে নতুন গাড়ি না-থাকার সমস্যা ও তার ফলে বাজারে তাদের প্রতি কিছুটা অনাস্থার বাতাবরণ তৈরির কথা মানছেন টাটা মোটরসের প্রেসিডেন্ট (যাত্রী গাড়ি) ময়াঙ্ক পারিকও।
গত এপ্রিলে এসেছে টাটার ছোট গাড়ি টিয়াগো। সেপ্টেম্বরে বিক্রি হয়েছে ৪,৫০০-রও বেশি। এ বারের বাজি হেক্সা। সম্প্রতি হায়দরাবাদে সংবাদ মাধ্যমের সামনে গাড়িটির উপর থেকে পর্দা তোলার অনুষ্ঠানে সংস্থার প্রধান নকশাবিদ প্রতাপ বোস বলেন, ‘‘মুক্তোর শহরে আমাদের হিরে হল টাটা-হেক্সা।’’
বস্তুত, সুমো-র পরে হেক্সা-র হাত ধরেই নতুন ধরনের এসইউভির বাজারে ঢুকছে টাটারা। যখন দেশে এসইউভি-র ব্যবসা বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ গাড়ির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী টয়োটার ইনোভা ও মহীন্দ্রার এক্সইউভি৫০০।
আগামী জানুয়ারিতে বাজারে আসছে হেক্সা। বুকিং শুরু নভেম্বর থেকে। দাম এখনই জানানো হচ্ছে না। তবে পারিক জানান, টাটার গাড়ি সম্পর্কে ক্রেতার ভরসা ফেরানোর লক্ষ্যে নতুন প্রচার কৌশল নিচ্ছে সংস্থা। যেমন, এ জন্য তাঁরা সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে গাড়িটির স্বাদ পৌঁছতে নভেম্বরেই ‘হেক্সপেরিয়েন্স’ শীর্ষক ৮-১০টি শহরে বিশেষ ‘টেস্ট ড্রাইভ’ কর্মসূচি নিয়েছেন। যেখানে আগ্রহীরা সেটি চালিয়ে দেখার সুযোগ পাবেন। চিহ্নিত করা হয়েছে চিকিৎসক, সম্পন্ন চাষি, হিরে ব্যবসায়ীর মতো সমাজের ২৩০টি সম্প্রদায়কে, যাঁরা গাড়িটি ক’দিন ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া বিক্রি পরবর্তী গাড়ি মেরামতির পরিষেবাতেও জোর দেওয়া হচ্ছে, জানান তিনি।
সংস্থার দাবি, নবীন প্রজন্মের কথা ভেবে তৈরি হয়েছে গাড়ির অন্দরসজ্জা, প্রযুক্তি। বিভিন্ন ধরনের রাস্তায় সাবলীল ভাবে চালাতে চার ধরনের ড্রাইভ মোড-এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এয়ারব্যাগ-সহ অন্যান্য সুরক্ষার পাশাপাশি সবক’টি চাকাতেই রয়েছে ডিস্ক ব্রেক। রয়েছে মোবাইল-অ্যাপ নির্ভর নানা সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা।
সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গিরীশ ওয়াঘ জানান, ভারত ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে হেক্সার যন্ত্রাংশ। পরীক্ষার জন্য -২০ ডিগ্রি থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার আবহাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ৮ লক্ষ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে গাড়িটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy