অডিট সংস্থা গ্রান্ট থর্নটন জানাল, ওই ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি (এনবিএফসি) বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন সব আর্থিক লেনদেন চালিয়েছে, যা নিয়মবহির্ভূত।
কেন্দ্র নিযুক্ত পর্ষদ সংস্থার দায়িত্ব নেওয়ার পরে ইঙ্গিত দিয়েছিল সম্ভাব্য অনিয়মের। পরে যার কয়েকটি স্পষ্ট হয় তাদের চালানো প্রাথমিক তদন্তে। এ বার আইএল অ্যান্ড এফএস গোষ্ঠীর আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গলদ ধরা পড়ল বিশেষ অডিটেও। অডিট সংস্থা গ্রান্ট থর্নটন জানাল, ওই ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি (এনবিএফসি) বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন সব আর্থিক লেনদেন চালিয়েছে, যা নিয়মবহির্ভূত। সব মিলিয়ে যার অঙ্ক ১৩,০০০ কোটি টাকারও বেশি।
পরিকাঠামোয় ঋণ প্রদানকারী ও নির্মাণ সংস্থা আইএল অ্যান্ড এফএসের ঘাড়ে চেপে প্রায় ৯৪,০০০ কোটি ধারের বোঝা। থর্নটন অডিট রিপোর্টে জানিয়েছে, এই সঙ্কটের জন্য মূলত দায়ী আসলে ঋণ সংক্রান্ত বেশ কিছু অনিয়মই। যেমন, ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ২৯টি ক্ষেত্রে যে ধার দেওয়া হয়েছে বলে খাতায় দেখিয়েছে তারা, তা আসলে গিয়েছে আইএল অ্যান্ড এফএস গোষ্ঠীরই বিভিন্ন সংস্থার ঘরে। তা দিয়ে মেটানো হয়েছে আইএল অ্যান্ড এফএস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের ঋণ। যার মোট পরিমাণ ২,৫০২ কোটি। রিপোর্টে দাবি, এ কথা তৎকালীন পর্ষদের সদস্যরাও জানতেন।
এ ছাড়া, ১৮টি ক্ষেত্রে এমন সংস্থাকে মোট ২,৪০০ কোটি টাকা ধার মঞ্জুর করা হয়েছে, যাদের ঋণ দিলে পরে তা অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হতে পারে বলে খবর ছিল বিভিন্ন মহলের কাছে। প্রধানত সংবাদ মাধ্যমের খবরের দৌলতেই। অথচ তা সত্ত্বেও ওই সব সংস্থার ঋণ মঞ্জুর করা হয়। সংস্থার ঝুঁকি বিষয়ক কমিটি বিরূপ রিপোর্ট দেওয়া সত্ত্বেও।
বিশেষ অডিট সংস্থাটি তাদের রিপোর্টে আইএল অ্যান্ড এফএসে ১০টি বড় মাপের আর্থিক অনিয়মের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে। যার সঙ্গে যুক্ত মোট ১৩,২৯০ কোটি।
এই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা স্বল্প মেয়াদে ঋণ নিয়ে তা দীর্ঘ মেয়াদে ধার দিয়েছে। থর্নটনের রিপোর্ট বলছে, ওই স্বল্প মেয়াদি ঋণের অঙ্ক ৫৪১ কোটি টাকা।
বস্তুত, তহবিল সংগ্রহের সঙ্গে ঋণ দেওয়ার সামঞ্জস্য রাখার জন্য ব্যাঙ্ক-সহ প্রতিটি ঋণদাতা সংস্থারই অ্যাসেট লায়াবিলিটি কমিটি (অ্যালকো) থাকে। থর্নটনের অডিটে প্রকাশ, বহু ক্ষেত্রে হাতে তহবিল না থাকা সত্ত্বেও ঋণ মঞ্জুর করেছে আইএল অ্যান্ড এফএস। যে কারণে বাজার থেকে বেপরোয়া ঋণ নিয়ে তা দিতেও হয়েছে তাদের। ফলে ২০১৩ সাল থেকেই আইএল অ্যান্ড এফএস ফিনান্সিয়াল সার্ভিস আর্থিক সমস্যায় ছিল।
শুধু তাই নয়, রিপোর্টে উঠে এসেছে ১৬টি ক্ষেত্রে এমন ঋণের তথ্য, যেখানে সুদ বাবদ আয়ের তুলনায় তহবিল সংগ্রহের খরচ বেশি। যার পরিমাণ ১,৯২২ কোটি। পরে এর মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে হিসাবের খাতা থেকে সেই সব ঋণ মুছে ফেলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy