গত মাসে দেশের খুচরো বাজারে আরও কমল মূল্যবৃদ্ধির হার। ফলে জোরালো হল জুনের ঋণনীতিতে ফের সুদ কমানোর সম্ভাবনা। এর আগে টানা দু’বার তা মোট ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমেছে। ফলে কিছুটা কমেছে সাধারণ ঋণগ্রহীতার ধার শোধের মাসিক কিস্তির (ইএমআই) খরচ। এ বার বোঝা আরও কমার অপেক্ষায় দিন গুনছেন বহু মধ্যবিত্ত গৃহস্থ। তবে একাংশের অভিযোগ, খাতায়-কলমে মূল্যবৃদ্ধি যেখানে নেমেছে, বাস্তবে বাজার করতে গিয়ে ততটা স্বস্তি মিলছে না। দুধ, ডিম, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল-সহ কয়েকটি দাম বেড়েছে।
মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, এপ্রিলের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৩.১৬%। যা ফের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৪% সহনসীমার নীচে। মার্চেও ছিল ৩.৩৪%। তবে ২০২৪-এর এপ্রিলে ৪.৮৩%। সেই সঙ্গে গত মাসের হার প্রায় ছ’বছরে সব থেকে কম। শেষ বার মূল্যবৃদ্ধি এতটা নীচে নেমেছিল ২০১৯-এর জুলাইয়ে। হয়েছিল ৩.১৫%। এ বার মূলত আনাজ, ফল, ডাল এবং মাছ-মাংস-ডিমের দাম কমেছে। তারই প্রতিফলন গোটা বাজারের হিসাবে। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মাত্র ১.৭৮%। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে আলু এবং টোম্যাটোর দাম কমেছে যথাক্রমে ১২.৭% এবং ৩৩.২১%। একই ছবি সার্বিক আনাজ, ডাল, মশলা, মুরগি, অড়হড় ডাল, জিরের মতো পণ্যেও। বেড়েছে সরষের তেল (১৯.৬%), ভোজ্যতেল (২৩.৭৫%) আপেল (১৭%) এবং পেঁয়াজ (২.৯৪%) ইত্যাদির। এর আগে মার্চে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ২.৬৯% আর ২০২৪-এর এপ্রিলে ৮.৭%।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, অগস্ট, অক্টোবরেও ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে সুদ কমবে। মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের বক্তব্য, জানুয়ারি-মার্চের আর্থিক বৃদ্ধি প্রায় ৬.২% থাকলে পরের মাসে একলপ্তে ৫০ বেসিস পয়েন্টও সুদ কমাতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আনন্দ রাঠি গোষ্ঠীর মুখ্য অর্থনীতিবিদ সুজন হাজরার মতে, ২০২১-এর অক্টোবরের পরে এপ্রিলে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার সবচেয়ে কম। খাবার এবং অশোধিত তেলের দাম কমতে থাকলে মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্যে। তখন শীর্ষ ব্যাঙ্ক নজর দেবে আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনার দিকে। সুদ কমিয়ে তাই শিল্পের পুঁজি জোগাড়ের খরচ কমানো প্রাধান্য পেতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)